ভয়াল সিলিকোসিস কেড়েছে বাঁচার অধিকার, ফুসফুসে পাথরকুচি নিয়ে মৃত্যুর অপেক্ষায় ওরা
পেট চালাতে পাথর ভাঙতে গিয়েছিলেন ওঁরা। পাথরভাঙা কলে নিংড়ে দিয়েছিলেন নিজেদের। বুঝতেই পারেননি যে, একটু একটু করে জড়িয়ে পড়েছেন মৃত্যুফাঁদে। যখন বুঝলেন, ততক্ষণে ফুসফুসে পাথরকুচি আর বিষাক্ত গ্যাস জমে ওঁরা মৃত্যুপথযাত্রী। তিরিশ পেরিয়ে সেই মৃত্যুমিছিল এখনও চলছে।
হাড় জিরজিরে শরীরগুলো ক্রমশ বিছানায় মিশে যাচ্ছে। কাশির দমকে কারও মুখ থেকে রক্ত ওঠে। কেউ বা বুক ভরে বাতাস টানতেই জেরবার। সবেধন নীলমণি একটি অক্সিজেন সিলিন্ডারই ভরসা। গ্রামের পর গ্রাম একই ছবি। ঝাড়খণ্ড কিংবা আসানসোলের পাথর খাদান। বড় বড় পাথর ভেঙে গুঁড়ো করার মেশিনে ঢালা। পরে সেই পাথরের গুঁড়ো বস্তা বন্দি করে লরিতে তোলা। উত্তর চব্বিশ পরগনার মিনাখাঁর গলদা, লেবুতলা, ধুতুরদা, দেউলির তিন শতাধিক যুবকের এটাই ছিল রুটিরুজি।
অভিশপ্ত পাথর খাদান থেকে পালিয়ে এসেও স্বস্তি মেলেনি। সিলিকোসিস নামের সঙ্গে পরিচয় আগেই হয়েছিল। হাসপাতালের চিকিত্সকরা মেলে ধরেন সংক্রমণের ইতিবৃত্ত। এখনও এ তল্লাটে ভয়াল এই রোগের বলি তিরিশ জন। ওঁরা সরকারি সাহায্যের আশায় থেকেছেন বরাবর। পাঁচ ছেলের মধ্যে সিলিকোসিসে হারিয়েছেন দুই ছেলেকে। আরও এক ছেলেও আক্রান্ত। একটু সাহায্যের আশায় হন্যে বাবা।