ছাড়া পেলেন সুশান্ত ঘোষ
আলিপুর সংশোধনাগার থেকে মুক্তি পেলেন গড়বেতার বিধায়ক সুশান্ত ঘোষ। মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ আলিপুর সংশোধনাগার থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি। জেল থেকে বেরিয়ে সুশান্তবাবু বলেন, এত অসংখ্য কর্মী সমর্থককে দেখে তিনি আপ্লুত। গড়বেতা কঙ্কালকাণ্ডে সময় এলে সব কথা বলবেন বলেও জানান তিনি।
সুশান্তবাবুকে স্বাগত জানাতে আলিপুর সংশোধনাগারে যান বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র সহ সিপিআইএমের বহু নেতা। সংশোধনাগারে যান তাঁর স্ত্রী করুণা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সুশান্ত ঘোষকে স্বাগত জানাতে মঙ্গলবার সকাল থেকেই আলিপুর সংশোধনাগারে ভিড় করেন অসংখ্য বাম কর্মী ও সমর্থকেরা। হাজির ছিলেন এসএফআইয়ের বহু নেতা ও ছাত্রও। এদিন সকালেই মেদিনীপুর আদালত থেকে জামিনে মুক্তির ছাড়পত্র তৈরি হয়ে যায়। আলিপুর সংশোধনাগারে গিয়েছিলেন সিপিআইএম নেতা রবীন দেব, অমিতাভ নন্দী, সুজন চক্রবর্তীও। জেল থেকে বেরিয়ে এমএলএ হস্টেলে রওনা হন সুশান্তবাবু। "সুপ্রীমকোর্টের নির্দেশে মুক্তি পেয়ে ভালো লাগছে, দল যা বলবে সেই অনুযায়ী কাজ করব" বললেন সুশান্ত ঘোষ।
গত শুক্রবার বেনাচাপড়া কঙ্কাল কাণ্ডে অভিযুক্ত সুশান্ত ঘোষের জামিন মঞ্জুর করে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আলতামাস কবির ও বিচারপতি জ্ঞানসুধা মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চ। জামিন পেলেও, সুশান্ত ঘোষের গতিবিধিতে শর্ত আরোপ করেছে শীর্ষ আদালত। অঞ্চলের বিধায়ক হওয়ার জন্য গড়বেতা অঞ্চলে যাওয়ার অনুমতি মিললেও, পশ্চিম মেদিনীপুরের অন্যান্য অঞ্চলে যেতে পারবেন না তিনি। এছাড়াও, তদন্তকারী অফিসারের কাছে মাসে একবার হাজিরা দিতে হবে তাঁকে।
২০১১ সালের ৯ই জুন বেনাচাপড়া কঙ্কালকাণ্ডের তদন্তভার দেওয়া হয়েছিল সিআইডিকে। সিআইডির তদন্ত এবং ঘটনার অগ্রগতির ভিত্তিতে জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করেছিলেন বিধায়ক সুশান্ত ঘোষ। কলকাতা হাইকোর্ট সেই আবেদন গ্রহণ করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিম্ন আদালতে হাজিরা দিতে বলে তাঁকে। ২০১১ সালে ১১ অগস্ট মেদিনীপুর আদালতে হাজিরা দেন সুশান্ত ঘোষ। আদালতের নির্দেশে সেইদিনই তাঁকে সিআইডি হেফাজতে পাঠানো হয়। সিআইডি হেফাজতে থাকাকালীনই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। তাঁকে ভর্তি করা হয়েছিল এসএসকেএম হাসপাতালে।
এরই মধ্যে, তাঁর কলকাতার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া ৫ লক্ষ টাকার ভিত্তিতে আলাদাভাবে একটি মামলা দায়ের করে কলকাতা পুলিসের গোয়েন্দা বিভাগ। ২০১১-র নভেম্বরে আলিপুর আদালতে সেই মামলায় সহজেই জামিন মিলে যায় সুশান্ত ঘোষের। কিন্তু মেদিনীপুর আদালতে বেশ কয়েকবার আবেদন জানানো সত্ত্বেও বেনাচাপড়া কঙ্কালকাণ্ডে তাঁর জামিন মেলেনি। পরে, ২৯ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টেও তাঁর জামিনের আবেদন নামঞ্জুর হয়। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা আদালতে বেনাচাপড়া কঙ্কালকাণ্ডের চার্জগঠন প্রক্রিয়া শুরু হবে ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে।