কাবুলিওয়ালের দেশের তালিবানি ফতোয়া এখন এ রাজ্যের ভক্তিপুরে

মায়ের পারলৌকিক ক্রিয়া করেননি। তাই কড়া ফতোয়া দিলেন গ্রামের মাতব্বরা। বন্ধ হয়ে গেল একটি পরিবারের ধোপানাপিত। ওই বাড়িতে কারোর পা রাখা নিষেধ। বাড়ির লোকের বাইরে বেরোনোতেও নিষেধাজ্ঞা। এমনকি নেই চিকিত্সার অধিকারও। পরাধীন ভারত নয়। পরিবর্তনের বাংলায় ঘটেছে এই মধ্যযুগীয় বর্বরতা।

Updated By: Jan 19, 2014, 10:24 PM IST

মায়ের পারলৌকিক ক্রিয়া করেননি। তাই কড়া ফতোয়া দিলেন গ্রামের মাতব্বরা। বন্ধ হয়ে গেল একটি পরিবারের ধোপানাপিত। ওই বাড়িতে কারোর পা রাখা নিষেধ। বাড়ির লোকের বাইরে বেরোনোতেও নিষেধাজ্ঞা। এমনকি নেই চিকিত্সার অধিকারও। পরাধীন ভারত নয়। পরিবর্তনের বাংলায় ঘটেছে এই মধ্যযুগীয় বর্বরতা। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার তক্তিপুরে।

ধান ঝাড়তে বাধা। বাজার করায় নিষেধাজ্ঞা। নিষেধাজ্ঞা বাড়ি থেকে বেরোতেও। কাকদ্বীপের বাপুজি পঞ্চায়েতের তক্তিপুর গ্রামে জারি হয়েছে মধ্যযুগীয় ফতোয়া। একঘরে মণ্ডল পরিবার।

২৫ ডিসেম্বর মারা যান নরোত্তম মণ্ডলের মা লক্ষ্মীপ্রিয়া দেবী। মায়ের অন্ত্যেষ্টি করলেও, নিজস্ব বিশ্বাসের কারণে পারলৌকিক ক্রিয়া করেননি নরোত্তম মণ্ডল। তারপরেই সভা ডেকে মণ্ডল পরিবারকে ধোপানাপিত বন্ধের ফতোয়া দিলেন গ্রামের চারমাথা।

মণ্ডল পরিবারের কোনও সদস্যের বাইরে বেরোনো চৌকাঠের বাইরে নিষেধ। এই পরিবারকে সাহায্য করলেও রয়েছে কড়া শাস্তির ফতোয়া।

এমনকি চিকিত্সার অধিকার থেকেও বঞ্চিত নরোত্তমের অসুস্থ বৃদ্ধ বাবা।

তবে ফতোয়া জারি করেছেন যাঁরা, গ্রামের সেইসব মাতব্বরদের চোখে নরোত্তম মণ্ডলই সমাজবিরোধী।

প্রায় একমাস ধরে এভাবেই নির্যাতনের শিকার হচ্ছে মণ্ডল পরিবার। খবর সংগ্রহে গিয়ে বাধা পেয়েছে সংবাদমাধ্যমও। চবিবশ ঘণ্টার চিত্র সাংবাদিককে মারধর করে ক্যামেরার চিপ কেড়ে নেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। সংবাদ মাধ্যমে এই খবর পেয়ে সক্রিয় হয়েছে একাধিক মানবাধিকার সংগঠন। অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে, রবিবারই কাকদ্বীপ থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

দুদিন বাদেই ৬৪ পূর্ণ করবে ভারতীয় সংবিধান। সেই সংবিধান, যাতে বলা হয়েছে ধর্মাচরণের অধিকার সম্পূর্ণ মানুষের নিজস্ব স্বাধীনতা। কিন্তু, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার তক্তিপুরে গেলে সেই আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরতে বাধ্য।

.