পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে জাল নোট, চরবৃতি এবং নাশকতা চালাচ্ছে জঙ্গিরা

জাল নোটের কারবার, চরবৃত্তি আর নাশকতা। তথ্য বলছে, এ রাজ্যের মাটিতে ৩টি কাজই সমানতালে চালিয়ে যাচ্ছে জঙ্গিরা। অর্থনীতির ওপর আঘাত হানাই শুধু নয়, জাল নোটের কারবার সন্ত্রাসবাদীদের আয়ের বড় উত্সও বটে।

Updated By: Dec 7, 2015, 08:10 PM IST
পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে জাল নোট, চরবৃতি এবং নাশকতা চালাচ্ছে জঙ্গিরা

ওয়েব ডেস্ক: জাল নোটের কারবার, চরবৃত্তি আর নাশকতা। তথ্য বলছে, এ রাজ্যের মাটিতে ৩টি কাজই সমানতালে চালিয়ে যাচ্ছে জঙ্গিরা। অর্থনীতির ওপর আঘাত হানাই শুধু নয়, জাল নোটের কারবার সন্ত্রাসবাদীদের আয়ের বড় উত্সও বটে।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের হিসেব বলছে, প্রতি মাসে পাকিস্তান থেকে ২০ কোটি টাকার জাল নোট এ দেশে ঢোকে। খুচরো বাজারে কমবেশি ৩০০ টাকায় বিক্রি হয় হাজার টাকার জাল নোট। ভারতে যত জাল নোট ঢোকে তার বড় একটা অংশ মালদা সীমান্ত দিয়ে আসে। মালদায় উদ্ধার হওয়া জাল নোট সংক্রান্ত একাধিক কেসের তদন্ত করছে এনআইএ।

১৪ নভেম্বর থেকে এখনও পর্যন্ত এ রাজ্যে পাক চর চক্রের ৩টি মডিউলের খোঁজ মিলেছে। এত কম সময়ের মধ্যে এতজন পাক চর আগে ধরা পড়েনি। সেনায় কর্মরত অবস্থায় চরবৃত্তি বা গার্ডেনরিচের জাহাজ কারখানার গুরুত্বপূর্ণ সামরিক তথ্য পাচারে উদ্বিগ্ন গোয়েন্দারা। আইএসআই এজেন্ট সন্দেহে কলকাতায় ধরা পড়েছে দুই ভাই আখতার খান ও জাফর খান। গার্ডেনরিচের জাহাজ কারখানার তথ্য পাচারে গ্রেফতার ইরশাদ আনসারি, আখতার আনসারি ও মহম্মদ জাহাঙ্গির। সেই সূত্রেই ধৃত শেখ বাদল। ফেরার মহম্মদ ইলিয়াস নামে আরেক সন্দেহভাজন পাক চর।

রাজৌরির বিএসএফ কর্মী আব্দুল রশিদ ও প্রাক্তন সেনাকর্মী মুনাব্বর হোসেন মিরকে জেরায় শিলিগুড়িতে ধৃত সেনাকর্মী ফরিদ খান। নাশকতা ঘটাতে আগে চাই লোকবল। সরাসরি দলে টানার পাশাপাশি এখন সাইবার দুনিয়াকেও ব্যবহার করছে জঙ্গিরা। অগাস্টে ১২টি রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে বৈঠকে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা রিপোর্ট উল্লেখ করে বলা হয়, পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবর্তী জেলায় আইএস-এর নামে দেওয়াল লেখা হয়েছে। ন্যাশনাল টেকনিক্যাল রিসার্চ অর্গানাইজেশনের সাম্প্রতিক রিপোর্টে আবার বলছে, পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন আইপি অ্যাড্রেস থেকে নানা জেহাদি ওয়েবসাইটে লগ ইনের প্রবণতা বেড়েছে।

তবে, এ রাজ্যের মাটিতে জঙ্গিরা নাশকতা ঘটানোর চেষ্টা করছে, এমন প্রমাণ সে ভাবে আসেনি। ফলে, পশ্চিমবঙ্গকে সেফ হাভেন হিসাবে ব্যবহার করাই এখন তাদের পছন্দ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ২০০৭ সাল থেকে খাগড়াগড়ে জেএমবি জঙ্গিদের ঘাঁটি। ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আড়ালে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ। ২০১৩ সাল থেকে প্রায় দু-বছর বরেলিতে ধৃত পাক চর ইজাজের নিশ্চিন্তে
কলকাতায় থেকে যাওয়া। গার্ডেনরিচের জাহাজ কারখানায় গত ১০ বছর ধরে ইরশাদ আনসারির চরবৃত্তি।

গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের হাল এ রাজ্যে কোথায় পৌছেছে এ সব ঘটনাই তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে। ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আড়ালে নাশকতা বন্ধে কড়া পদক্ষেপের কথা বলেছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তবে, কাজের কাজ কিছুই হয়নি সরকার বদলের পরও।
 

.