ভেঙে পড়ল উল্টোডাঙা ফ্লাইওভার, প্রশ্ন রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে

উদ্বোধনের মাত্র দু বছরের মধ্যেই ভেঙে পড়ল উল্টোডাঙা ফ্লাইওভারের একাংশ। ফ্লাইওভারের স্টিফ কার্ভ গার্ডার খুলে নিচের খালে পড়ে যায়। ওই জায়গায় বাঁদিকে বাঁক নিয়েছে ফ্লাইওভার। কীভাবে এত অল্প সময়ের মধ্যে দুর্বল হয়ে গেল ফ্লাইওভারের গার্ডার, তা নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। রক্ষণাবেক্ষণের অভাব নাকি, গঠনগত ত্রুটি, তা নিয়ে শুরু হয়েছে চাপানউতোর।

Updated By: Mar 3, 2013, 09:30 AM IST

উদ্বোধনের মাত্র দু বছরের মধ্যেই ভেঙে পড়ল উল্টোডাঙা ফ্লাইওভারের একাংশ। ফ্লাইওভারের স্টিফ কার্ভ গার্ডার খুলে নিচের খালে পড়ে যায়। ওই জায়গায় বাঁদিকে বাঁক নিয়েছে ফ্লাইওভার। কীভাবে এত অল্প সময়ের মধ্যে দুর্বল হয়ে গেল ফ্লাইওভারের গার্ডার, তা নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। রক্ষণাবেক্ষণের অভাব নাকি, গঠনগত ত্রুটি, তা নিয়ে শুরু হয়েছে চাপানউতোর।
দেখুন কীভাবে ভাঙল উড়ালপুল (আমাদের ভিডিও রিপোর্ট)
বিশেষজ্ঞদের  মতে, এই ধরণের ফ্লাইওভারের ক্ষেত্রে রক্ষণাবেক্ষণই শুধু নয়, নিয়মিত পরিদর্শনও বাধ্যতামূলক। এই ফ্লাইওভারের নকশা তৈরি করেছিল কনসাল্টিং ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস, সংক্ষেপে সিইএস। নকশা পরীক্ষার দায়িত্ব ছিল ইরকনের। ফ্লাইওভার নির্মাণ করে সরকার অধিগৃহীত সংস্থা ম্যাকিনটোস বার্ন।
ইঞ্জিনিয়ারদের দাবি, যদি নির্মাণগত কোনও ত্রুটি থাকত, তাহলে কোনও সময়েই পিলারের সঙ্গে গার্ডারের জয়েন্ট  খুলে বেরিয়ে যেত না। যদি নকশায় কোনও ভুল থাকত, তাহলে আরও আগেই ফ্লাইওভারে চিড় ধরতে পারত। এই ধরনের ফ্লাইওভারে বেয়ারিং-এর সাহায্যে দুটি গার্ডারকে যুক্ত করা হয়। এইসব বেয়ারিং ইস্পাতের তৈরি। ফলে কিছুদিন পর থেকেই তাতে ক্ষয় শুরু হয়। সেকারণেই রক্ষণাবেক্ষণ এবং নিয়মিত সেতু পরিদর্শন জরুরি।  
আজ ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ ভেঙে পড়ে ফ্লাইওভারটি। সেইসময় সেতুর ওপর দিয়ে একটি লরি যাচ্ছিল। লরিটি খালে পড়ে যাওয়ায় চালক সহ তিন জন আহত হয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দারাই প্রাথমিকভাবে তাঁদের উদ্ধার করেন। ঘটনাস্থলে দমকল ও বিপর্যয় মোকাবিলা কমিটি। কিন্তু দুর্ঘটনাটি ঘটনার প্রায় চার ঘণ্টা বাদে উদ্ধারকার্য শুরু করে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।  এতে পড়ে কেন উদ্ধারকার্য শুরু হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। অন্যদিকে তৈরি হওয়ার মাত্র দু'বছরের মধ্যেই সেতুটি ভেঙে পড়ায় এর রক্ষণাবেক্ষণ নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। তবে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম অবশ্য দাবি করেছেন  আগের বাম সরকার তাড়াহুড়ো করে সেতুর উদ্বোধন করে দেওয়াতেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
আহতদের দুজনকে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও একজনকে বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
খালে ডুবুরি নামানোর পর সেতুর ভাঙা অংশের নিচে কেউ আটকে নেই বলে জানানো হয়েছে। নিয়ে আসা হচ্ছে ক্রেন। ক্রেন এসে পৌঁছনোর পরই বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী সেতুর ভাঙা অংশটি সরানোর কাজে হাত দিতে পারবে।
ভোরের দিকে দুর্ঘটনাটি ঘটায় বড় ক্ষতি এড়ানো গেছে। দিন বা রাতের ব্যস্ত সময় এই দুর্ঘটনা ঘটলে ক্ষয়ক্ষতি, প্রাণহানির আশঙ্কা অনেক বেশি হত। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও স্থানীয় বিধায়ক সুজিত বসু।    

.