কংগ্রেস-তৃণমূলের পাল্টা সমাবেশের রাজনীতিতে সরগরম রাজধানী

ইস্যু এফডিআই। কেন্দ্রের এই অর্থনৈতিক সংস্কারমূলক সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে দেশ জুড়ে একে অপরের বিরুদ্ধে সমাবেশ ও পাল্টা সমাবেশের ডাক দিল কংগ্রেস-তৃণমূল। দিল্লির যন্তর মন্তরে ধরনা মঞ্চ থেকে তৃণমূলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, এফডিআইয়ের বিরোধিতায় দেশজুড়ে প্রতিবাদে নামবে তৃণমূল।

Updated By: Oct 1, 2012, 04:51 PM IST

ইস্যু এফডিআই। কেন্দ্রের এই অর্থনৈতিক সংস্কারমূলক সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে দেশ জুড়ে একে অপরের বিরুদ্ধে সমাবেশ ও পাল্টা সমাবেশের ডাক দিল কংগ্রেস-তৃণমূল। দিল্লির যন্তর মন্তরে ধরনা মঞ্চ থেকে তৃণমূলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, এফডিআইয়ের বিরোধিতায় দেশজুড়ে প্রতিবাদে নামবে তৃণমূল। পশ্চিমবঙ্গের বাইরে তৃণমূলের কোনও শক্ত ঘাঁটি নেই বলে সোমবার সকালে কটাক্ষ করেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী সলমন খুরশিদ। খুরশিদের এই বিতর্কিত মন্তব্যের জবাবেই তৃণমূলের পাল্টা হুঁশিয়ারি বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
অন্যদিকে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন দিল্লিতে ধর্নায় ব্যস্ত, ঠিক তখনই মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিল কংগ্রেস। সোমবার এফডিআইয়ের পক্ষে মিছিল শেষে সমাবেশের জন্য তৃণমূল নেত্রীর খাসতালুক হাজরা মোড়কেই বেছে নিয়েছিলেন কংগ্রেস নেতারা।
কংগ্রেসের অভিযোগ, এফডিআই ইস্যুতে কেন্দ্রের বিরোধিতার চেষ্টা থেকে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, সবক্ষেত্রেই ব্যর্থ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার ইন্দিরা গান্ধীর মূর্তি থেকে হাজরা পর্যন্ত মিছিলের পর কংগ্রেস নেতৃত্ব হুমকি দেন, রাজ্যের স্বার্থে প্রয়োজনে বাংলা বনধ ডাকবে কংগ্রেস।
নভেম্বরের ২ তারিখ হরিয়ানায় ধরনায় বসতে চলেছে তৃণমূল। ওদিনের কর্মসুচীতে সমাজবাদী পার্টি নেতা মুলায়েম সিং যাদবকেও উপস্থিত থাকার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মমতা। হরিয়ানার পাশাপাশি বিহারেও জনসভা করবেন বলে জানিয়েছেন নেত্রী। ১৭ নভেম্বর লখনউয়ে সভা হবে, এরপর ১৯ ও ২০ তারিখ দিল্লিতে আবার জনসভা করবে বলে আজকের ধরনা মঞ্চ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে। জনসাধারণকে একের পর এক প্রতিশ্রুতিই দিয়েছে কংগ্রেস নেতৃত্ব। পাশাপাশি বিদেশী ব্যাঙ্কগুলি থেকে কালো টাকা দেশে ফেরানোর দাবি জানান মমতা। এফডিআই ইস্যুতে যে লড়াই জারি রাখবে তৃণমূল সে কথা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। প্রয়োজনে তাঁরা সংসদে অনাস্থা প্রস্তাব আনতেও পিছিয়ে যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন নেত্রী। সেইসঙ্গে, বছরে পরিবার পিছু ভর্তুকি প্রাপ্ত রান্নার গ্যাসের সংখ্যা নিয়ন্ত্রিত করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারেরও দাবি জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তৃণমূলের ধরনার পাল্টা সমাবেশের ডাক দিয়েছে কংগ্রেসেও। খুচরো ব্যবসায় বিদেশী বিনিয়গের সিদ্ধান্তের ব্যখ্যা দিতে সোনিয়া গান্ধী ও প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং জনসভা করে বক্তব্য রাখবেন বলে জানিয়েছে কংগ্রেস নেতৃত্ব। সোমবার দিল্লিতে একটি দলীয় অনুষ্ঠানে শিলা দীক্ষিত জানান, "বেশ কয়েকটি সমাবেশ করে প্রধানমন্ত্রী ও সোনিয়া গান্ধী এফডিআই এর সুবিধা গুলি ব্যাখ্যা করবেন"।
জানা গিয়েছে, ২৮ অক্টোবর রামলীলা ময়দানে জনসভা করবে কংগ্রেস। উপস্থিত থাকবেন, প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ও শ্রীমতী গান্ধী সহ একধিক শির্ষ নেতৃত্ব। গত ২৫ তারিখ কংগ্রেস কার্যসমিতির বৈঠকেই এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এফডিআই বলবত রাখার পক্ষে যে দিল্লির সরকার এককাট্টা, ইতিমধ্যেই তা স্পষ্ট হতে শুরু করেছে । এদিন কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রী আনন্দ শর্মার বক্তব্যে উঠে এসেছে সেই প্রসঙ্গ। একটি আলচনা সভায় শর্মা জানান, মানুষের ধারনা ছিল আন্তর্জাতিক খাদ্য বিপণন সংস্থাগুলি দেশী বিক্রেতাদের ক্ষতি করবে। কিন্তু তেমনটা হয়নি। পাশাপাশি তিনি অভিযোগ করেন, বিজেপি কৃষক স্বার্থের কথা না ভেবেই বিদেশী বিনিয়োগের বিরোধিতা করছে। ভারতের সর্ববৃহৎ বিরোধী দল বিদেশি বিনিয়োগ সম্পর্কে `দৈত অবস্থান` নিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
অন্যদিকে, দিল্লিতে এফডিআইকে স্বাগত করা হবে বলে এদিন জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী শিলা দিক্ষীত। তাঁর কথায়, বিরোধীরা কংগ্রেসের বিরোধিতা করার পাশাপাশি দেশের জনহিতকর কাজের বিরোধিতা করছে। বিরোধীদের এফডিআই ইস্যুতে সরকারের পাশে থাকার অনুরোধ করেন দীক্ষিত।

.