ভারত যে ৫টি কারণে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিল

Updated By: Apr 1, 2016, 05:59 PM IST
ভারত যে ৫টি কারণে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিল

স্বরূপ দত্ত

 

এবার আর বিশ্বকাপটা জেতা হল না ভারতের। মহেন্দ্র সিং ধোনির দল চ্যাম্পিয়ন তো দূর, ফাইনালেও উঠতে পারল না। সেমিফাইনাল থেকেই বিদায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হেরে। কিন্তু কেন এমন হার? বিশেষজ্ঞরা একেকরকম বলছেন। ক্যাপ্টেন মহেন্দ্র সিং ধোনিই সবথেকে বেশি সমালোচিত হচ্ছেন। সেটাই স্বাভাবিক। জয়ের কৃতিত্ব তাঁর হলে, হারের ব্যার্থতার দায়ও তো তাঁকেই সবথেকে বেশি নিতে হবে। সবাই ধোনিকে দুষছেন। তাই নতুন করে তাঁর ব্যার্থতার কথা এখানে বললাম না। কারণ, কিছু তো দোষ ক্যাপ্টেনের আছেই। না হলে আর অশ্বিন কেন ২ ওভার বল করবেন! আর বিরাটই বা কেন শেষ ওভারে বল করতে যাবেন! খেলা দেখার পর ধোনির ব্যর্থতা ছাড়া নিজের চোখ, মস্তিষ্ক আর মন আর যে কারণগুলো খুঁজে বার করল, সেগুলোই আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করা।

১) রাহানেকে নিয়ে নামা মানেই তো হার! - কথাটা শুনতে খারাপ লাগতে পারে। কিন্তু বাস্তব খারাপ লাগার উপর নির্ভর করে না। আপনার প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ। গেইল, সিমন্স, স্যামুয়েলস, রাসেল, ব্রাভো, এঁদের যে কেউ একা ঝড় তুলে ম্যাচ জিতিয়ে দিতে পারেন। সেরকম বিধ্বংসী দলের বিরুদ্ধে ওপেন করাচ্ছেন রাহানেকে দিয়ে! এটা কি টেস্ট নাকি! একটা লোক ২০ ওভারের ম্যাচে ১৫.৩ ওভার পর্যন্ত ব্যাট করে কিনা ৩৫ বলে ৪০ রান করবে! এটা বড় রান নয়। এটা অপরাধ। যখন খেলা হচ্ছে মুম্বইতে। ৩৫ বলে ৪০ এখন লোকে টেস্টেও করে না। আপনি তো খেলাটা ওই ইনিংসের পড়ই হেরে গিয়েছিলেন। এত কথা বলার আরও কারণ, ভারতের উইকেট পড়েছে মাত্র দুটো! ২ উইকেট পড়বে। আর একজন ব্যাটসম্যান ১০০-র আশেপাশে স্ট্রাইক রেট নিয়ে ১২০ বলের তিনের এক ভাগ বল একা খেলে আসবেন, এ হয় নাকি!

২) পবন নেগি বসেই থাকলেন আর মণীশ পাণ্ডে উড়ে এসে জুড়ে বসলেন! - কী করে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়! যুবরাজ সিং চোটের জন্য বিশ্বকাপের বাইরে বলেই তো মণীশ পাণ্ডে দলে সুযোগ পেলেন। কিন্তু পবন নেগি তো আগে থেকেই দলে ছিলেন। তাহলে মণীশ, পবন নেগিকে টপকে প্রথম ১১-য় ঢুকে গেলেন কোন যোগ্যতায়! পবন নেগির অভিজ্ঞতা নেই। তা মণীশের অভিজ্ঞতা কত বছরের! এই ছোট কারণগুলো দলের মানসিকতার অনেক পরিবর্তন এনে দেয়। টিম ম্যানেজমেন্ট স্বীকার করুক অথবা না করুক।মাঠের বাইরে দীর্ঘশ্বাস পড়ে দলের ক্রিকেটারদের। খেলার মাঠ আর কবে সংস্কার ছাড়া থাকতে পেরেছে!

৩) যুবরাজ সিং ফ্যাক্টর - আপনি বিশ্বকাপ জিতবেন আর আপনার দলে যুবরাজ সিং থাকবে না! ১৯৮৩-র সেই দল অবশ্যই ব্যতিক্রম। সেই দলে আর যুবরাজ থাকবেন কোথা থেকে। কিন্তু ২০০৭-ই হোক অথবা ২০১১-র বিশ্বকাপ। যুবরাজ ছাড়া কি বিশ্বকাপ জেতা যায়! এবারের বিশ্বকাপেও মোটেই দারুণ কিছু খেলেননি যুবি। কিন্তু প্রত্যেকটা ম্যাচেই তিনি বিরাটের সঙ্গে একটা ভালো পার্টনারশিপ করে দিচ্ছিলেন, যা দলকে বড় স্কোর করতে সাহায্য করছিল। আর অবশ্যই বল হাতে দরকারের সময় উইকেটও তুলে এনেছিলেন তিনি। তাঁর না থাকাটা ফ্যাক্টর, এটা না মেনে উপায় কী!

৪) নো বল - খেলার অঙ্গ। মানতে হয়। কিন্তু কেন মানতে হবে যে রবিচন্দ্রন অশ্বিন নো বল করবেন! হার্দিক পাণ্ডিয়া পেসার। পেসাররা নো বল করেন। সমালোচিতও হন। কিন্তু এতবছর ক্রিকেট খেলা দেখে কতবার দেখেছেন যে একজন সর্বোচ্চ পর্যায়ের স্পিনার নো বল করছেন! তাই অশ্বিনের নো বল করাটা ক্ষমার অযোগ্য। হার্দিকেরটাও তাই। জাদেজার ক্যাচ ধরে পা বিজ্ঞানপন বোর্ডে লেগে যাওয়াটাও থাকবে এই কারণে।

৫) ওয়াংখেড়েতে প্রথমে ব্যাট করে মাত্র ১৯২!-  ১৪-, ১৫০, ১৬০-এর ম্যাচ দেখতে দেখতে, যেই আপনি স্কোরবোর্ডে ১৯২ দেখে ফেলেছেন, অমনি ভেবেছেন অনেক রান, অনেক রান। আরে মশাই, ওয়াংখেড়েতে প্রথমে ব্যাট করলে গড় স্কোর ১৮০-র উপরে, সেখানে আপনি চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দাবি রাখা দল। ১৯২ করে জেতার আশা করতে পারেন! রানটা পিচের চরিত্র অনুযায়ী অন্তত ৩০ কম করেছে ভারত। যার দায় অনেকটাই বর্তায় রাহানের উপর। তিনি তো ৪০ রান নিজের খাতায় লিখলেন। কিন্তু ওই ৪০ রান ভারতের কোন কম্মে লেগেছে!ম্যাচ ভারত শেষ ওভারে বিরাটের বলে হারেনি। হেরেছ রাহানের ওই ৩৫ বলে ৪০ রানের জঘন্য ইনিংসের পরেই।

.