অর্থ - অ্যা কালচার কোয়েস্ট: তর্ক - বিতর্ক, সুর ও কলায় বাংলার সংস্কৃতির শিকড়ের সন্ধান

মাটির কাছে ফিরে নিজেকে খোঁজার উদ্যোগে সামিল হলেন হাজার হাজার মানুষ  

Updated By: Dec 2, 2018, 01:34 PM IST
অর্থ - অ্যা কালচার কোয়েস্ট: তর্ক - বিতর্ক, সুর ও কলায় বাংলার সংস্কৃতির শিকড়ের সন্ধান

নিজস্ব প্রতিবেদন: সহজে বললে, কথা, সুর আর কলায় নিজের শিকড় খোঁজার চেষ্টা। জ়ি-র উদ্যোগে 'অর্থ - অ্যা কালচার কোয়েস্ট'-এর প্রথম দিনটা সব মিলিয়ে ছিল জমজমাট। উদ্বোধন থেকে সমাপন, নানা গুণিজনের উপস্থিতি ও বিদগ্ধ আলোচনায় উত্তাল হয়েছে মঞ্চ। তাছাড়াও রয়েছে, নানা স্টল। যাতে হাতের কাজ করে দেখাচ্ছেন শিল্পীরা। ইচ্ছা থাকলে রয়েছে শিখে নেওয়ার সুযোগও। 

শনিবার নির্ঘণ্ট মেনে বেলা ঠিক ১১.৪৫ মিনিটে প্রদীপ জ্বালিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন রাজ্যসভার সাংসদ পবন কুমার ভার্মা ও অধ্যাপক শরদীন্দু মুখোপাধ্যায়। হাজির ছিলেন 'অর্থ'-এর প্রতিষ্ঠাতা শ্রেয়সী গোয়েঙ্কা ও নির্দেশক বিক্রম সম্পত। উদ্বোধনের পরই ওড়িশি নৃত্যে মঞ্চ মাতান ডোনা গঙ্গোপাধ্যায় ও তাঁর গোষ্ঠী। এর পরই শুরু হয় বাংলা তথা ভারতের শিল্প, কলা ও কৃষ্টি নিয়ে আলোচনা ও বিতর্কের পর্ব।

 

এদিনের প্রধান বক্তা হিসাবে উপনিবেশোত্তর ভারতের সমাজ নিয়ে বক্তব্য রাখেন রাজ্যসভার সাংসদ প্রবীণ কুমার ভার্মা। পাশ্চাত্য প্রভাবে কী ভাবে ভারতীয় সমাজ ক্রমশ তার স্বকীয় সভ্যতা ও সংস্কৃতির গুরুত্ব অস্বীকার করছে তা তুলে ধরেন তিনি। 

'বাংলার সেই দামাল ছেলেরা' শীর্ষক আলোচনায় শ্যামাপ্রসাদের কর্মজীবন ও মৃত্যুরহস্য উদ্ঘাটন করেন অধ্যাপক শরদীন্দু মুখোপাধ্যায় ও দেবদত্তা চক্রবর্তী। উঠে আসে ত্রৈলক্যনাথ মুখোপাধ্যায়ের মতো মণীষিকে কেমন করে ভুলেছে বাঙালি। 

এর পর মঞ্চে আসেন মেঘালয়ের রাজ্যপাল তথাগত রায়। 'ফিরে দেখা: শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়' শীর্ষক আলোচনায় শ্যামাপ্রসাদ সম্পর্কে তাঁর গবেষণালব্ধ বিদগ্ধ মত প্রকাশ করেন তিনি। শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যু রহস্যের নানা দিক তুলে ধরেন তিনি।

বেলা গড়াতে আলোচনা শুরু হয় তন্ত্রের নানা দিক নিয়ে। সহজ তন্ত্রের সঙ্গে কীভাবে ওতোপ্রতভাবে জড়িত বঙ্গজীবন তা ফুটিয়ে তোলেন বক্তারা। এর পর স্নিগ্ধদেব সেনগুপ্তের কণ্ঠে ছিল সুরেলা ভক্তগীতি। 

কিছুক্ষণের মধ্যেই তীব্র তর্কে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মঞ্চ। 'বন্দুকের নলই কি ক্ষমতার উত্স?' শীর্ষক আলোচনায় রাষ্ট্রযন্ত্রের বিরুদ্ধে গরিবগুর্বোদের চক্রান্তের অভিযোগে সরব হন নকশাল নেতা অজিজুল হক। পালটা মত প্রকাশ করেন চিত্র পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী ও মেজর গৌরব আচার্য। 

এর পর আলোচনার কেন্দ্রে আসেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। নেতাজি ফাইলের পাতার নানা তথ্য তুলে ধরেন অনুজ ধর। 

শহর কলকাতার ইতিউতিতে মুখ গুঁজে রয়েছে নানা ইতিহাস। সংরক্ষণের অভাবে হারিয়ে গিয়েছে তার অনেকটা। তবে অক্ষত রয়েছে ডালহৌসি স্কোয়ার। চত্বরের ইতিহাস ও স্থাপত্যশৈলির বৈশিষ্ট নিয়ে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন প্রসার ভারতীর প্রাক্তন কর্তা জহর সরকার। 

সন্ধ্যে নামতে আলোচনা শুরু হয় বাংলা চলচ্চিত্রের ৩ গর্ব ঋত্বিক ঘটক, সত্যজিত রায় ও মৃণাল সেনকে নিয়ে। তিন পরিচালকের জীবন ও ভাবনার নানা দিক তুলে ধরেন অনিক দত্ত, কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় ও সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়। 

 

রাত গড়াতে মঞ্চ মেতে ওঠে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে। উস্তাদ রসিদ খান, পণ্ডিত বিক্রম ঘোষ, পণ্ডিত তেজেন্দ্রনারায়ণ কে ছিলেন না সেখানে? বাংলার বৃন্দগান পরিবেশন করে 'দোহার'। 

     

.