প্রয়াত পুরাতনী বাংলা গানের কিংবদন্তি শিল্পী চণ্ডীদাস মাল
মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯২ বছর
নিজস্ব প্রতিবেদন: প্রয়াত বাংলা সংগীত জগতের দিকপাল শিল্পী চন্ডীদাস মাল (Chandidas Mal) । বুধবার সকালে বালিতে নিজ বাসভবনে মৃত্যু হয় তাঁর। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। পুরাতনী, আগমনী, টপ্পা, শ্যামাসঙ্গীত আর বোল বানাও ঠুমরির অন্যতম কিংবদন্তি শিল্পী চণ্ডীদাস মাল। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন শিল্পী।
১৯২৯ সালে বালিতে এক পরিপূর্ণ সাঙ্গীতিক পরিবারে জন্মেছিলেন চন্ডীদাস। আরামবাগের দৌলতপুরের বিখ্যাত তবলিয়া আর শাস্ত্রীয় সঙ্গীত বিশারদ শশিভূষণ পাত্র ছিলেন তাঁর দাদু। বাবা ও মা দুজনেই গান শিখতেন ও টপ্পা গানে পারদর্শী ছিলেন বাবা। মাত্র তিন বছর বয়স থেকেই বাবার কাছে তালিম শুরু শিল্পীর। মাত্র সাত বছর বয়সে তাঁর গান শুনে কেঁদে ফেলেছিলেন কৃষ্ণচন্দ্র দে। সনৎ সিংহের দাদা কিশোরীমোহন সিংহের কাছেই চণ্ডীদাসের খেয়াল আর টপ্পার তালিম। দুর্গাদাস সেনের কাছে পুরাতনী, কৃষ্ণচন্দ্র দের কাছে খেয়াল, জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষের কাছে ভজন, শৈলজারঞ্জন মজুমদারের কাছে রবীন্দ্রসঙ্গীত, শচীনদাস মতিলালের কাছে ঠুমরির তালিম নিয়েছিলেন চণ্ডীদাস মাল। রবীন্দ্রনাথের ভাঙা গানের অথরিটি, বিষ্ণুপুর ঘরানার শচীন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও তালিম নিয়েছেন কিছু দিন। তবে শুধু গান নয়, তবলাও শিখেছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: Sushant Singh Rajput: 'আজীবন তোমায় মিস করব', সুশান্তের জন্য মনখারাপ সারার
মাত্র সাত বছর বয়সেই তিনি সারা বাংলা সংগীত প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা পেয়েছিলেন। ১৯৪৪ সাল পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে অল ইন্ডিয়া রেডিওতে এবং পরবর্তীকালে দূরদর্শনের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন তিনি। বেশ কয়েকটি বাংলা চলচ্চিত্রে প্লেব্যাকও গেয়েছেন চন্ডীদাস মাল। পরবর্তীকালে রবীন্দ্রভারতী এবং বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতনী বাংলা গানের শিক্ষকতাও করেছেন। তাঁর শিল্পকলার জন্য পেয়েছেন অ্যাকাডেমি পুরস্কার । সাহিত্যিক বুদ্ধদেব গুহ তাঁর কাছে দশ বছর পুরাতনী গান ও টপ্পা শিখেছিলেন। এছাড়াও তাঁর কাছে গান শিখেছেন লোপামুদ্রা মিত্র, ঋদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায়, চন্দ্রাবলী রুদ্র সহ আরও অনেক প্রথিতযশা শিল্পী। তিনি ছিলেন বাংলা পুরাতনী গানের শেষ যুগপুরুষ, যিনি নিজেি ছিলেন একটি প্রতিষ্ঠান। তাঁর প্রয়াণ বাংলা সংগীত জগতের অপূরণীয় ক্ষতি।