East Bengal: দু'গোলে পিছিয়েও বিরাট জয় লাল-হলুদের, প্রত্যাবর্তনের মশালে পুড়ে ছারখার পঞ্জাব...
East Bengal vs Punjab FC: এক নয়, দু'গোলে পিছিয়েও চার গোল দিল ইস্টবেঙ্গল!
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: নর্থইস্ট ইউনাইটেড (১-০) ও চেন্নাইয়িন এফসি-কে (২-০) হারিয়ে, ইস্টবেঙ্গলের পাখির চোখ ছিল ওড়িশা এফসি-র বিরুদ্ধে জয় তুলে এনে চলতি লিগে হ্যাটট্রিক করা ও প্রথম ছয়ের দৌড়ে কিছুটা এগিয়ে যাওয়া| দিন পাঁচেক আগে সেই স্বপ্নপূরণ হয়নি| ওড়িশার কাছে ২-১ হারতে হয়েছিল| মঙ্গলবার পঞ্জাব এফসি-র বিরুদ্ধে ইস্টবেঙ্গল জ্বলে উঠল| ময়দানের সেই প্রাচীন প্রবাদ আবার প্রমাণ করে দিল তারা, এক নয়, দু'গোলে পিছিয়েও অস্কার ব্রুজোর শিষ্যরা এদিন ৪-২ ম্যাচ জিতে নিল|
প্রথমার্ধে ইস্টবেঙ্গলকে বসিয়ে দিল দুর্ভাগ্য, আর পঞ্জাবকে এগিয়ে দিল সুযোগের জোড়া সদ্ব্যবহার| খেলার ৯ মিনিটের ক্লেটন সিলভার, ভাসানো শট থেকে ডেভিড লালহানসাঙ্গা, চকিতে ছুটে, মাথা ছুঁইয়ে যে গোল করেছিলেন, তা ছিল দেখার মতো| কিন্তু অফসাইডের ফাঁদে পা দিয়ে ফেলেন মিজো ফরোয়ার্ড| ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের সেলিব্রেশনও নিমিশে মিলিয়ে যায়| তবে ২১ মিনিটে সুযোগ পেয়েই গোল করে ব্যবধান বাড়ায় পঞ্জাব| দলের আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার এজেকুইয়েল ভিদালের ক্রস থেকে হাঙ্গেরিয়ান ফরোয়ার্ড আসমির সুলজিচ, দুরন্ত গোল করে বেরিয়ে যান|
গোল হজম করেও কিন্তু দমে যায়নি মশালবাহিনী, ওপেন-প্লে চলছিল| কিন্তু ৩৯ মিনিটে সেই ভিদাল হয়ে উঠলেন ভয়ংকর, লাল-হলুদকে বিরতির আগেই বড় ধাক্কা দিয়ে গেলেন গোল করে| দুরূহ কোণ থেকে বাঁ-পায়ে, যে শটে তিনি টপ কর্নারে বল জড়িয়ে দিলেন, তা যেন নিখুঁত জ্যামিতি| প্রভ্সুখন গিল কেন, কোনও গোলকিপারের পক্ষেই তা রুখে দেওয়া কার্যত অসম্ভব ছিল| যদিও তার আগেই গিল দুরন্ত দু'টি সেভ করে, অবধারিত গোল রুখে দিয়েছেন| নাহলে বিরতির আগে ইস্টবেঙ্গল চার গোল হজম করে ফেলতে পারত!
দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে ফিরেই ইস্টবেঙ্গল গিয়ার বদলে ফেলল, ফিফথ গিয়ারে ছুটেই ব্যবধান কমিয়ে ফেলল| ৪৬ মিনিটে হিজাজি মাহের গোল শোধ করেন, ক্লেটন সিলভার ক্রস থেকে জর্ডনের ডিফেন্ডার গোলপোস্টের টপ কর্নারে দিয়ে হেডে বল জড়িয়ে দেন| গ্যালারিতে তখন বাজি ফাটার আওয়াজ| সঙ্গে মিশল লাল-হলুদ সমর্থকদের প্রিয় ক্লাবের নামে জয়ধ্বনি| আর এই আওয়াজ থামতে দিলেন না নাওরেম মহেশের পরিবর্তে নামা পিভি বিষ্ণু| ৫৩ মিনিটে বক্সের সেন্টার থেকে বাঁ-পায়ের জোরাল শটে টপ কর্নার দিয়ে দুরন্ত গোল করে স্কোরলাইন ২-২ করলেন|
ইস্টবেঙ্গলের আগুনে প্রত্যাবর্তনে পঞ্জাব তখন কেঁপে গেছে| আর এই অবস্থায় লাল-হলুদ ঠিক করে নিল, এবার ভয়ংকর খেলা হবে| ৬০ মিনিটে পঞ্জাবের ডিফেন্ডার সুরেশ মেইতেই আত্মঘাতী গোল করে লাল-হলুদকে গোল উপহার দেন| স্কোরলাইন হয়ে গেল ৩-২| যে ডেভিড প্ৰথমার্ধে অফসাইডের জন্য অসাধারণ গোল থেকে বঞ্চিত হয়ে আক্ষেপ করছিলেন, সেই ডেভিডই শাপমোচন করলেন| ৬৬ মিনিটে বিষ্ণুর ক্রস থেকে অনবদ্য হেডে বাঁ-দিকের টপ কর্নার দিয়ে গোল করে গ্যালারিকে ভাসিয়ে দিলেন সেলিব্রেশনে| এদিন সাত মিনিট যোগ করা হয়েছিল নির্ধারিত সময়ের পর, তখনও লাল-হলুদ গোলের জন্য মরিয়া লড়াই চালিয়ে গিয়েছিল| লাল-হলুদের এই খেলা বহুদিন সমর্থকদের মনে থেকে যাবে| আর আগামীর পাথেয় হবে এই পারফরম্যান্স|
খেলার শেষে পয়েন্ট টেবলে যদিও কোনও বদল এল না| ১১ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে ইস্টবেঙ্গল পয়েন্ট তালিকায় ১১ নম্বরেই থাকল, ওদিকে পঞ্জাব ১১ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচেই থাকল|
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)