Love you Zindegi, গাই জীবনের জয়গান
পুজা বসু দত্ত
পরপর দু সপ্তাহ, মুক্তি পাওয়া তিনটি ছবি দেখলাম। এমনিতে ছবি দেখার নেশা একটা আছে, আর পেশার তাগিদে সেটাকে বাধ্যতায় পরিণত করতে বেশ লাগে। অর্থাত্ পেশাগত অন্য কাজে কখনও জ্বর জ্বর আসলেও, এই একটি ব্যাপার যেন সবসময় আমি খুশি হই। তার ওপর ছবি যদি হয় শাহরুখ খানের, তখন ডবল মজা! এইটাই আমার জীবনের একটা উত্দযাপন বলতে পারেন। ছবি দেখে কখনও ভাল লাগা, বা তার গুষ্টির তুষ্টি করার মধ্যে একটা আনন্দ আছে। ভোরবেলার সিফ্ট শেষেও ক্লান্তিকে ছাপিয়ে সিনেমা দেখার ইচ্ছেটাই প্রবল হয়ে ওঠাই তো আমার অনেকগুলো ভাললাগের একটা। চেষ্টা করি এই ছোট ছোট খুশিগুলোকে নিয়ে জীবনের উদযাপন করতে। যে ছবিগুলো দেখলাম তাতেও তো বলা হল এমন উদযাপনের কথা। জীবনের উদযাপন।
আরও পড়ুন ফের একসঙ্গে দেখা যেতে চলেছে শাহরুখ-আমিরকে
এবার আসি ছবির প্রসঙ্গে. প্রথমটি হল লাভ ইউ জিন্দেগি। শাহরুখ আলিয়ার ছবি. শাহরুখ কম, আলিয়াই জুড়ে এই ছবি দেখে আমার প্রথম অনুভুতিটা হল করণ জোহারের জন্য। উফ, কি যে সুন্দর পিপাষু এই মানুষটি। এমনিতেই আমার রোমান্টিক সত্ত্বাকে মেলে ধরার নানা কৌশল শিখিয়েছেন এই পরিচালক। বেড়ে ওঠার বয়সে কুছ কুছ হওয়ার অনুভুতিটা তো করণই বুঝিয়েছিলেন। এই পাওনার জন্য আমি তাঁর কাছে চির কৃতজ্ঞ। আর এই কৃতজ্ঞতার লিস্ট দীর্ঘ করল তাঁর জিন্দেগির গল্প। যদিও গল্পটির পরিকল্পনা ও পরিবেশনা এক মহিলার। গৌরী শিন্ডে। প্রেম, প্রতিষ্ঠা, পাওয়া, চাওয়া, জীবেনর হারিয়ে যাওয়া সা রে গা মা-কে সুরে বাঁধার এক লম্বা গল্পে কোথাও নিজেকেও রিলেট করার প্রক্রিয়ায়, দেখতে দেখতে কেটে যাবে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা। ভাল লাগবে, মানে আমার লেগেছে। আপনার নাও লাগতে পারে। কিন্তু যে জীবেনর কাহিনি উল্লেখ করা হয়েছে, সেটা অস্বীকার করতে পারবেন না। জীবন, এটাই তো বহু মূল্যবান। এটাকে সযত্নে লালন পালন করতে হবে। নিজের জীবন, নিজেকে নিয়ে, নিজের মত। নিজেই তো তার মালিক। আর মালিকই যদি উদাসীন থাকেন তাহলে জীবন চলবে না সোজা পথে। এই বার্তা কোন নির্দিষ্ট বয়সের জন্য নয়। ভাল লাগাগুলোকে যত্ন আত্তি করতে হবে প্রতি মুহুর্তে । বয়সকালেও। কারণ যৌবনের মত, বয়সকালও একাকীত্বের সাক্ষী। হাত ধরে নিয়ে চলার সখার খোঁজ না করে, নিজেই নিজের জীবেনর স্টিয়ারিং কন্ট্রোল করতে শিখুন। হাসতে শিখুন, ভালবাসতে শিখুন। নিজেকে। জীবনের উদযাপন যখন তখনই হতে পারে, যে কোন ভাবে। এই বার্তায় ভর করে ছবি বানিয়েছেন সুদেষ্ণা রায়, অভিজিত্ গুহ। বেঁচে থাকার গান-ছবিতেও জীবনের কথাই বলা হয়েছে। অনেক বসন্ত পেরিয়ে জীবন সায়াহ্নেও ভুরি ভুরি অজানা আনন্দ লুকিয়ে থাকে। শুধু তার খোঁজের মনটাকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। হারিয়ে যেতে দেওয়া চলবে না নতুনকে জানার ইচ্ছে। তাহলেই আপনার জীবন যুদ্ধে জয়। জয়ীর হাসি নিয়ে গর্ব করে বলতে পারবেন থ্রি চিয়ার্স ফর লাইফ। জীবনের প্রতি পদে লড়াই। এই লড়াইয়ের কাহিনি শুনিয়েছেন বিদ্যা বালন-সুজয় ঘোষ জুটি। বেচেঁ থাকার অদম্য ইচ্ছে, অন্যকেও এক সুন্দর জীবন উপহার দেওয়ার তাগিদই এগিয়ে নিয়ে যায় ছবিকে। একটাই তো জীবন, সেটাকে জমিয়ে জিয়ে রাখতে হবে। তিনটি ছবির তিনটি গল্প। কিন্তু আশ্চর্যভাবে সবেই প্রাধান্য পেয়েছে জীবনের উদযাপন। সবটাই জীবনের জন্য, জীবনকে নিয়ে। সেই ভেবেই লেখা -"জীবন ছাড়িয়া যাসনি মোরে, তুই জীবন ছাড়িয়া গেলে আদর করবি কে জীবন রে'। জীবনে আদরে রাখুন। খেয়াল রাখুন। প্রতিদিনই হোক সেলিব্রেশন, সেলিব্রেশন অফ লাইফ। ঠিক আমার সিনেমা দেখার অভ্যাসের মতো।
আরও পড়ুন জানেন প্রথম দিনই কত কোটি টাকার ব্যবসা করল ‘বেফিকর’?