সংরক্ষিত থাকবেন জীবনের ঋতু
ঋতুপর্ণ ঘোষের মৃত্যুর পর কেটে গিয়েছে দু`সপ্তাহ। এখনও তাঁর স্মৃতিতে ভারাক্রান্ত শিল্পীমহল। ছবির পর্দার বাইরেও ঋতুর জীবন ছিল অপার বিস্ময়ে ভরা। তাঁর স্মৃতিকে চিরস্মরনীয় করে রাখতে সরকারের কাছে ঋতুপর্ণর বই, পেন্টিং, অ্যান্টিকস সংরক্ষণের আবেদন জানালেন শিল্পীরা।
ঋতুপর্ণ ঘোষের মৃত্যুর পর কেটে গিয়েছে দু`সপ্তাহ। এখনও তাঁর স্মৃতিতে ভারাক্রান্ত শিল্পীমহল। ছবির পর্দার বাইরেও ঋতুর জীবন ছিল অপার বিস্ময়ে ভরা। তাঁর স্মৃতিকে চিরস্মরনীয় করে রাখতে সরকারের কাছে ঋতুপর্ণর বই, পেন্টিং, অ্যান্টিকস সংরক্ষণের আবেদন জানালেন শিল্পীরা।
প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডে ঋতুপর্ণর পৈতৃক বাড়ি তাসের ঘর ছিল অমূল্য সব জিনিসপত্রে ঠাসা। বই, পেন্টিং, গয়না, ল্যাম্পশেড, ঘড়ি, সানগ্লাস, বাসনপত্র, শাল সবকিছুই তাঁর রুচির পরিচয় বহন করে চলেছে। মঙ্গলবার নজরুল মঞ্চে ঋতুর স্মরণসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ঋতুর ব্যবহৃত সামগ্রী সংরক্ষণের আবেদন জানান অপর্ণা সেন। তাঁর আবেদন গ্রহণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
তাসের ঘরে রয়েছে অফুরন্ত বইয়ের সমাহার। ঐতিহাসিক নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুরী পড়াতেন ঋতুপর্ণকে। নৃসিংহপ্রসাদ বলেন, ঋতুর দেওয়াল সবসময় বইতে ঠাসা ঠাকত। কিন্তু কখনই বইগুলো অগোছালো থাকত না। ছিল মহাভারতের বিভিন্ন সংস্করণ আর ঋতুর প্রিয় রবীন্দ্রনাথ। বই ছাড়াও ছিল পরেশ মাইতি, যোগেন চৌধুরী, শুভাপ্রসন্নদের মত শিল্পীদের আঁকা বহু ছবি। দেশ, বিদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে বুদ্ধর পেন্টিং ও মুখোশ সংগ্রহ করতেন ঋতুপর্ণ। ঘরের প্রতিটি আসবাবেও পাওয়া যায় ঋতুর রুচি আর সংবেদনশীলতার পরিচয়। নিজের বুককেসের আকারে চেয়ার, গাছের ডালের আকারে চেয়ার, ক্যানোপি বেড ব্যবহার করেছিলেন চিত্রাঙ্গদা, আবহমানের মত ছবিতে। বিশেষ আকর্ষণ ছিল ল্যাম্পশেডের প্রতি। বিভিন্ন ধরনের কাঠের নাইট ল্যাম্প থেকে শুরু করে সাধারণ দুধের ক্যান থেকেও ল্যাম্প তৈরি করেছিলেন ঋতুপর্ণ। মেমোরিজ ইন মার্চের পরিচালক সুজয় নাগ জানালেন, ২০১১ সালে স্পেন থেকে কিছু সাধারণ কাঁচের বোতল কিনে এনেছিলেন ঋতুপর্ণ। সেইগুলোকেই নিজের মত করে পেন্ট করে বানিয়েছিলেন অসাধারণ কিছু শো পিস। এছাড়াও রয়েছে ওড়না, স্কার্ফ ও শালের অপূর্ব অফুরান ভান্ডার।