নির্মম ছিলেন সত্যজিৎ, সন্দীপ রায়
নির্দেশনার ব্যাপারে আপোষহীন এবং `নির্মম` ছিলেন অস্কারজয়ী পরিচালক সত্যজিত্ রায়। মৃত্যুর দু`দশক পর সংবাদসংস্থা দেওয়া এক সাক্ষাতকারে একথা জানালেন তাঁর পুত্র পরিচালক সন্দীপ রায়।
নির্দেশনার ব্যাপারে আপোষহীন এবং `নির্মম` ছিলেন অস্কারজয়ী পরিচালক সত্যজিত্ রায়। মৃত্যুর দু`দশক পর সংবাদসংস্থা দেওয়া এক সাক্ষাতকারে একথা জানালেন তাঁর পুত্র পরিচালক সন্দীপ রায়।
স্মৃতিচারণাইয় সন্দীপ রায় আরও বলেন, সত্যজিৎ রায় বরাবর `মেদহীন` ছবি তৈরিতে জোড় দিয়েছেন। `পরিচালক কখনই দর্শকদের `বোর` করতে পারেননা, বারবার একথাই বলতেন বাবা`, জানান সন্দীপ।
সময়োপযোগী সাবজেক্ট, গল্প বলার সাবলীলতা এবং ছবিতে সমাজের প্রতিফলনই সত্যজিৎ রায়ের একের পর এক ক্ল্যাসিক নির্মাণের উপাদান ছিল বলে মনে করেন সন্দীপ রায়। সেই ১৯৫৫-এ `পথের পাঁচালী`। তার পর থেকে একের পর এক বিশ্বমানের ক্ল্যাসিক ছবি উপহার দিয়েছেন সত্যজিৎ। `অপু ট্রিলজি` ছাড়াও `জলসাঘর`, `কাঞ্চনজঙ্ঘা`, `সতরঞ্জ কি খিলাড়ী`, `চারুলতা`, `মহানগর` সহ সত্যজিতের ছবি ভারতীয় চলচ্চিত্রকে `ওয়ার্ল্ড ক্ল্যাসিকে` স্থান দিয়েছে।
এহেন বাবার ছত্রছায়ায় পালিত পুত্র জীবনে পরিচালক হিসেবেই সুপ্রতিষ্ঠিত হবেন, এটাই স্বাভাবিক। ১৯৭৭-এ `সতরঞ্জ কি খিলাড়ী`-তে বাবার সহ পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন সন্দীপ রায়। ১৯৮৩-তে পরিচালক হিসেবে হাতেখড়ি হয় তাঁর। `ফটিকচাঁদ` পরিচালনা করেন তিনি। সত্যজিতের শেষ তিনটি ছবি, `গণশত্রু`, `শাখা-প্রশাখা` এবং `আগুন্তুক`-এর সিনেমাটোগ্রাফির দায়িত্বে ছিলেন সন্দীপ। `নিশিযাপন`, `হিটলিস্ট` সহ বেশ কিছু অন্যধারার সিনেমা উপহার দিয়েছেন তিনি। সত্যজিতের পর ফেলুদা সিরিজকে ফের বড়পর্দায় ফিরিয়ে এনে বক্স অফিসে সাফল্যও পেয়েছেন। ফেলুদার পর সত্যজিৎ রায়ের আরেক অনবদ্য সিরিজ বৈজ্ঞানিক প্রফেসর শঙ্কুকে নিয়ে ছবি বানানোর কথা ভাবছেন বলে জানালেন সন্দীপ রায়। অত্যাধুনিক গ্রাফিক্স এবং ব্যয়বহুল স্পেশাল এফেক্টস-এর প্রয়োজনে এর আগে বড় পর্দায় শঙ্কু বানানো সম্ভব হয়নি। এখন প্রযুক্তি সহজলভ্য হওয়ায় শঙ্কু বানানো সম্ভব বলে জানান তিনি। তবে তাঁর ফেলুদার (সব্যসাচী চক্রবর্তী) বয়স বেড়ে যাওয়ায় এই মুহূর্তে ফেলুদা করা সম্ভবনা ক্ষীণ বলেও জানান তিনি।
তবে সত্যজিৎ রায়ের আরও আগে অস্কার পাওয়া উচিত ছিল বলে জানান তিনি। `বাবা নিজে মঞ্চে উপস্থিত হয়ে অস্কার নিতে চেয়েছিলেন। অসুস্থতার কারণে তা আর সম্ভব হলনা।`
মৃত্যুর মাত্র কিছুদিন আগে দক্ষিণ কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে প্রিয় নায়িকা অড্রি হেপবার্নের হাত থেকে চলচিত্র জগতে বিশেষ অবদানের জন্য অস্কার হাতে নেন তিনি।