করোনা থেকে কতটা সুরক্ষিত গর্ভবতী মহিলারা, কতটা সুরক্ষিত নবজাতক!
চলুন জেনে নেওয়া যাক এ বিষয়ে কী বলছেন বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকরা...
নিজস্ব প্রতিবেদন: দেশে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে চলেছে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা। ক্রমশ পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে। এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তা নবজাতক বা শিশুদের নিয়ে। এই ভাইরাসে এখনও পর্যন্ত কোনও নবজাতক বা শিশুর মৃত্যুর ঘটনা না ঘটলেও দুশ্চিন্তা কিন্তু থেকেই যায়। তার উপর সম্প্রতি এ রাজ্যেই ন’মাসের শিশুর শরীরে মিলেছে করোনাভাইরাসের উপস্থিতির প্রমাণ। চলুন জেনে নেওয়া যাক করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে কতটা সুরক্ষিত গর্ভবতী মহিলারা, প্রসূতি ও শিশুরা...
বিশেষজ্ঞ মার্কিন চিকিত্সক পিটসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাঃ ক্যারোলিন কোয়েন জানিয়েছেন, প্রসূতির শরীরে যদি করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে গর্ভস্থ শিশুরও এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। ফলে নবজাক করোনা আক্রান্ত হতে পারে। কোয়েনের মতে, ভাইরাস গর্ভবতী মায়ের জরায়ুর প্লাসেন্টা পেরিয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে গর্ভস্থ শিশুর করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
এই প্রসঙ্গে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পেরিনেটাল এপিডেমিওলজিস্ট ডাঃ খ্রিশ্চান চেম্বার্স জানিয়েছেন, এ ক্ষেত্রে প্রসূতির শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সমস্যায় দেখা দিতে পারে। ফলে প্রসূতির সঙ্গে তাঁর সন্তানের শরীরেও প্রবেশ করতে পারে এই ভাইরাস।
তবে ডাঃ খ্রিশ্চান চেম্বার্স জানান, গর্ভবতী মায়ের জরায়ুর প্লাসেন্টা তাঁর শরীরে অ্যান্টিবডি হিসাবে কাজ করে এবং ভ্রূণকে সুরক্ষিত রাখে। তাই করোনা-সংক্রমণে ভ্রূণের বা শিশুর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা কমই থাকে। তবে কোনও কোনও ভাইরাস এই বাধা অতিক্রম করে ভ্রূণের কাছে পৌঁছে যেতে পারে এবং গর্ভস্থ শিশুর মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে।
ডাঃ কোয়েন জানিয়েছেন, প্রসূতির শরীরে যদি করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে সন্তান প্রসবের সময় সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে গর্ভস্থ শিশুর মৃত্যুও হতে পারে। যদিও সাম্প্রতিক দুটি গবেষণায় নবজাতকের শরীরেও সামান্য পরিমাণ পাওয়া গিয়েছে এই করোনাভাইরাস।
আরও পড়ুন: লক ডাউনে শিশুর সুরক্ষায় প্রয়োজন বাড়তি সচেতনতার
একটি গবেষণায় কিছু নবজাতকের শরীরে উচ্চ মাত্রায় ‘ইমিউনোগ্লোবিন জি’ নামের অ্যান্টিবডির উপস্থিতির প্রমাণ মিলেছে। ‘ইমিউনোগ্লোবিন জি’ নামের অ্যান্টিবডি মায়ের শরীর থেকে সরাসরি ভ্রূণের মধ্যে সঞ্চারিত হয়। অন্য আরেকটি গবেষণায় জন্মের দু'ঘণ্টা পরেই নবজাতকের শরীরে আইজিএম-এর স্তরের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গিয়েছে যার মাত্রা ওই নবজাতকের শরীরে মাত্র দুদিনের মধ্যেই বৃদ্ধি পায় যা যে কোনও ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে থাকে।