যক্ষ্মার টিকা কি কোভিড-১৯-এও কার্যকরী!
কোভিডের সঙ্গে লড়ার জন্য হাতে অন্তত কিছুটা সময় দেয় বিসিজি
নিজস্ব প্রতিবেদন: কিছু গবেষণায় বলা হচ্ছে, বিসিজি টিকা ঠেকাতে পারে কোভিড-১৯-জনিত মৃত্যু!
খবরটা ছড়িয়েছিল কিছুদিন আগেই। ব্যাপারটা নিশ্চিত করতে যুক্তরাজ্যের এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা তাই ১০০০ লোকের ওপর এক পরীক্ষা চালানো শুরু করেছেন। যুক্তরাজ্যের এই পরীক্ষাটি অবশ্য এক আন্তর্জাতিক উদ্যোগেরই অংশ। অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডস, স্পেন ও ব্রাজিলের মোট ১০ হাজার লোক এই ট্রায়ালে অংশ নিচ্ছেন।
করোনা অতিমারীর প্রথম দিকেই বিখ্যাত 'ল্যানসেট' পত্রিকায় একটি লেখা বেরোয়, যেখানে দাবি করা হয়, বিসিজি টিকা দিলে সার্স-কোভ-টু ভাইরাস সংক্রমণজনিত অসুস্থতা থেকে সেরে ওঠার সম্ভাবনা আছে। তারা বলে, কোভিড-১৯-এর টিকা তৈরির আগের পরিস্থিতি মোকাবিলায় কাজে লাগতে পারে ১৯২১ সালে তৈরি করা এই টিকা।
তাই নাকি? আমরা ছোটবেলায় প্রায় সকলেই এই টিকা নিয়েছি! তবে কি কোভিড থেকে সংক্রমণের কোনও ভয়ই নেই আমাদের! না, ব্যাপারটি ঠিক তা নয়। বলা হচ্ছে-- যাঁরা শৈশবে বিসিজি টিকা নিয়েছেন, তাঁদের এখন আর করোনাভাইরাস থেকে কোনও সুরক্ষা মিলবে না। কারণ সেই টিকা এখন আর শরীরে করোনা-প্রতিরোধী বিশেষ অ্যান্টিবডিটি তৈরি করতে পারবে না।
বিসিজি নিয়ে তা হলে যা রটল, তার কিছুই কি সত্য নয়?
না, ঠিক তা-ও নয়। কিছু কিছু সংক্রমণ ঠেকাতে পারে বিসিজি।
কয়েকটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে দেখা গিয়েছে, নবজাত শিশুর নিউমোনিয়া ও সেপসিস থেকে মৃত্যু ৩৮ শতাংশ কমাতে পারে বিসিজি।
দক্ষিণ আফ্রিকায় সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গিয়েছে, যাঁরা বিসিজি টিকা নিয়েছেন তাঁদের নাক, গলা ও ফুসফুসের সংক্রমণ ৭৩ শতাংশ কমেছে।
নেদারল্যান্ডসে দেখা গিয়েছে, বিসিজি মানবদেহে ইয়েলো ফিভার ভাইরাসের পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে।
এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল স্কুলের তরফে পরিষ্কার করে জানানোও হয়েছে যে, বিসিজি যে সুরক্ষা দেয়, তা সুনির্দিষ্ট ভাবে কোভিডের জন্য নয়। কিন্তু এতে কোভিড টিকা তৈরির আগে পর্যন্ত কোভিডের সঙ্গে লড়ার জন্য হাতে অন্তত কিছুটা সময় পাওয়া যেতে পারে।
তাই বা কম কী? তা ছাড়া কোভিড ভ্যাকসিন তো প্রায় এসেই গেল। তার আগে যদি বিসিজি কোথাও কোথাও করোনার সামনে অন্তত কিছুটা হলেও প্রতিরোধের দেওয়াল তুলতে পারে, মন্দ কী!
আরও পড়ুন: করোনার বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে ভারত! বেড়েছে সুস্থতার হার, কমেছে দৈনিক মৃত্যু