করোনায় দু’বার ‘মৃত্যু’! চিকিৎসকদের চমকে দিয়ে আশ্চর্যজনক ভাবেই বেঁচে উঠেছে এই মেয়েটি!

প্রথমটায় কিছুই বুঝতে পারেননি জুলিয়েটের অভিভাবকরা। জানা গিয়েছে, প্রথমটায় যখন তখন হঠাৎ করেই ঘুমিয়ে পড়ছিল জুলিয়েট। শরীরে কোনও রকম অস্বস্তি বা ভাইরাসের কোনও উপসর্গই ছিল না।

Edited By: সুদীপ দে | Updated By: May 23, 2020, 05:45 PM IST
করোনায় দু’বার ‘মৃত্যু’! চিকিৎসকদের চমকে দিয়ে আশ্চর্যজনক ভাবেই বেঁচে উঠেছে এই মেয়েটি!

নিজস্ব প্রতিবেদন: দু’বার ‘মৃত্যু’! কথাটা শুনতে হয়তো সত্যিই খুব অদ্ভুৎ লাগছে। কিন্তু এই মেয়েটিকে চিকিৎসকরা কার্যত দু’বার মৃত বলে ঘোষণা করার পরও সবাইকে চমকে দিয়ে আশ্চর্যজনক ভাবেই ফের বেঁচে উঠেছে এই মেয়েটি! ঘটনাটি ঘটেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কভিংটন (Covington) শহরের বাসিন্দা বারো বছরের ছোট্ট মেয়ে জুলিয়েট ডেলির সঙ্গে। আসুন জুলিয়েটের সঙ্গে ঠিক কী হয়েছিল জেনে নেওয়া যাক।

মার্কিন স্বাস্থ্য সংস্থা CDCজানিয়েছে, আমেরিকার অনেক শিশুই ‘মাল্টি সিস্টেম ইনফ্লেমেটোরি সিনড্রোম’-এ (multisystem inflammatory syndrome in children)আক্রান্ত। এর জন্য মার্কিন স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞরা করোনাভাইরাসকেই দায়ি করেছেন। মাস খানেক আগে বারো বছরের জুলিয়েটও ‘মাল্টি সিস্টেম ইনফ্লেমেটোরি সিনড্রোম’-এ আক্রান্ত হয়।

প্রথমটায় কিছুই বুঝতে পারেননি জুলিয়েটের অভিভাবকরা। জানা গিয়েছে, প্রথমটায় যখন তখন হঠাৎ করেই ঘুমিয়ে পড়ছিল জুলিয়েট। শরীরে কোনও রকম অস্বস্তি বা ভাইরাসের কোনও উপসর্গই ছিল না। কিন্তু এর এক সপ্তাহ পর থেকেই জ্বর, বমি আর তলপেটে ব্যথা শুরু হয় মেয়েটির। কয়েকদিন পর জুলিয়েটের অভিভাবকরা লক্ষ্য করেন মেয়ের ঠোঁট নীলচে ফ্যাকাশে হয়ে গিয়েছে। ভয় পেয়ে যান তাঁরা। মেয়েকে নিয়ে তাঁরা ছুটে যান নিকটবর্তী হাসপাতালে।

চিকিৎসকরা জুলিয়েটকে পরীক্ষা করে দেখেন। তবে তাঁর মধ্যে করোনাভাইরাসের স্বাভাবিক লক্ষণগুলি দেখতে না পেয়ে অন্যান্য স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরামর্শ দেন। ওই হাসপাতালের রেডিয়োলজি বিভাগের প্রধান জেনিফার অনুমান করেন, জুলিয়েটের হয়তো অ্যাপেন্ডিসাইটিসে বা পাকস্থলিতে কোনও ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ ঘটেছে। এই অনুমানের ভিত্তিতেই চিকিৎসা শুরু হয় জুলিয়েটের।

কিন্তু এর পর থেকেই দ্রুত স্বাস্থ্যের অবনতি হতে শুরু করে মেয়েটির। চিকিৎসকরা দেখেন, জুলিয়েটের হৃদস্পন্দনের গতি অস্বাভাবিক কমে গিয়েছে। সাধারণত, মিনিটে ৭০ থেকে ১২০ হৃদস্পন্দন স্বাভাবিক, সেখানে জুলিয়েটের হৃদস্পন্দন ছিল মিনিটে মাত্র ৪০ বার। এর পরই তাঁকে জরুরি বিভাগে স্থানান্তরিত করে চিকিৎসা শুরু করা হয়। কিন্তু এর পর একটা সময় নিস্তেজ হয়ে যায় জুলিয়েট। নিয়ম মাফিক সব রকম চেষ্টা করে দেখার পর চিকিৎসকরা জুলিয়েটকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। কিন্তু মৃত ঘোষণা করার মিনিট খানেক পর চিকিৎসকদের চমকে দিয়ে আশ্চর্যজনক ভাবেই কেঁপে কেঁপে উঠতে থাকেন মেয়েটির শরীর। চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে দেখেন, কিছুক্ষণের জন্য জুলিয়েটের হৃদস্পন্দন প্রায় বন্ধ হয়ে গেলেও ফের সচল হয়ে যায় তাঁর হৃদযন্ত্র। মেয়েটির ফুসফুসে কোনও ভাবে রক্ত ঢুকে যাওয়ার ফলে এমনটা হয়েছে বলে জানান চিকিৎসকরা। এমনটা আরও একবার, মোট দুবার ঘটে জুলিয়েটের সঙ্গে।

চিকিৎসকরা জানান, জুলিয়েটের এই অবস্থার জন্য দায়ি আসলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। ‘মায়োকার্ডাইটিস’(Myocarditis)-এ আক্রান্ত হয়ে তাঁর হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া সাময়িক ভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তবে কপাল জোরে পর পর দুবার ওই ধাক্কা সামলে বেঁচে ফিরতে পেরেছে ওই কিশোরী।

.