পঞ্চাশে পৌঁছানোর আগেই দৃষ্টি হারান এই গ্রামের প্রায় সব পুরুষ!

এই গ্রামের প্রায় ৭৫ শতাংশ মানুষই অন্ধত্বের শিকার! আরও অনেকেই ক্রমশ তাঁদের দৃষ্টিশক্তি হারাচ্ছেন। 

Updated By: May 12, 2019, 02:45 PM IST
পঞ্চাশে পৌঁছানোর আগেই দৃষ্টি হারান এই গ্রামের প্রায় সব পুরুষ!
--প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন: সবুজ গাছপালায় ঘেরা ছোট্ট একটা পাহাড়ি গ্রাম। এই গ্রামে বসবাস করেন সাকুল্য সাড়ে তিনশো জন মানুষ। এই গ্রামের প্রায় ৭৫ শতাংশ মানুষই অন্ধত্বের শিকার! আরও অনেকেই ক্রমশ তাঁদের দৃষ্টিশক্তি হারাচ্ছেন। পেরুর ‘প্যারান’ নামের এই গ্রামটি সে দেশে তাই ‘অন্ধদের গ্রাম’ বা ‘দৃষ্টিহীনদের গ্রাম’ নামেই বেশি পরিচিত।

Parán

প্রায় ৩ হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এই গ্রামের বেশির ভাগ মানুষই চোখের একটি জিনগত রোগে আক্রান্ত। চোখের এই রোগটির নাম ‘রেটিনাইটিস পিগমেনটোসা’। এই রোগটির নাম আমাদের তেমন ভাবে জানা না থাকলেও ‘রাতকানা’ রোগের নাম আমরা অনেকেই জানি। চক্ষু চিকিত্সকদের মতে, ‘রাতকানা’ রোগের জন্য প্রধনত দায়ি এই ‘রেটিনাইটিস পিগমেনটোসা’। এই রোগের চোখের ‘টানেল ভিশন’ নষ্ট হয়ে যায়। চোখের ভিতরে রেটিনা নামের যে গুরুত্বপূর্ণ পাতলা মেমব্রেন থাকে, তার প্রধান দুটি অংশ হল রড ও কোণ। এই রড আর কোণ ‘ফটো রিসেপ্টর’র কাজ করে। এই রোগের ফলে রেটিনার রড কোষ ধীরে ধীরে তার কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।

Parán

‘প্যারান’ গ্রামের বেশির ভাগ মানুই ‘রেটিনাইটিস পিগমেনটোসা’য় আক্রান্ত। এই রোগের কারণে এ গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে কারও শৈশব থেকেই দৃষ্টিশক্তি ক্ষীন, কারও আবার বয়স পঞ্চাশ পেরতে না পেরতেই চোখের সামনে অন্ধকার নেমে আসে। জানা গিয়েছে, একটা সময় এই অঞ্চলে সোনা, রুপোর খোঁজে হাজির হয় একটি খনন সংস্থা। এই খনন সংস্থার দৌলতেই এ গ্রামের বাসিন্দারা প্রথম চিকিত্সার সুযোগ পান। সে সময়ই এই গ্রামে আসা একদল চিকিত্সক পরীক্ষা করে জানিয়ে দেন, চোখের এই রোগ আসলে জন্মগত। এক্স ক্রোমোজোমের সমস্যা থেকেই এই রোগের সৃষ্টি হয়।

আরও পড়ুন: মুখ পুড়িয়ে রূপচর্চা ভিয়েতনামে, প্রশ্নের মুখে ‘ফায়ার থেরাপি’!

মহিলাদের চেয়ে ‘রেটিনাইটিস পিগমেনটোসা’-এ পুরুষরাই বেশি আক্রান্ত হন। পর পর বেশ কয়েকটি ঘটনায় দেখা গিয়েছে, এই গ্রামে পুত্র সন্তান জন্মালে তার অন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই বেশি। এই কারণেই এই গ্রামের বাসিন্দারা অন্য কোনও এলাকার মানুষের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্কে জড়ান না। তাই সভ্যতার আলো পৌঁছালেও, পেরুর এই গ্রামটি আজও দেশের অন্যান্য জনপদ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে।

.