নিউমোনিয়ার উপসর্গের আড়ালে ‘মারণ কামড়’ আগ্রাসী করোনা ভাইরাসের!
করোনা ভাইরাসের বিস্তার এবং সংক্রমিত হওয়ার গতি নিউমোনিয়ার জন্য দায়ি ‘স্ট্রেপ্টোকক্কাস নিউমোনি’র তুলনায় বহুগুণ বেশি। ফলে নিউমোনিয়া ভেবে ভুল করলেই বাড়ছে মৃত্যুর ঝুঁকি!
নিজস্ব প্রতিবেদন: গত ডিসেম্বর থেকে চিনে আতঙ্ক বাড়াচ্ছে করোনা ভাইরাস। এই ভাইরাস ফুসফুসে দ্রুত সংক্রমণ ঘটিয়ে মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়। এই ভাইরাসে মৃত্যুর মূল কারণ হল, এর উপসর্গ একেবারে নিউমোনিয়ার মতো। ফলে প্রাথমিক ভাবে করোনা ভাইরাসের আক্রমণকে চিনতে ভুল হচ্ছে।
নিউমোনিয়া রোগের একটি অন্যতম প্রধান কারণ হল ফুসফুসে ‘স্ট্রেপ্টোকক্কাস নিউমোনি’ নামের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ। কিন্তু করোনা ভাইরাসের বিস্তার এবং সংক্রমিত হওয়ার গতি ‘স্ট্রেপ্টোকক্কাস নিউমোনি’র তুলনায় বহুগুণ বেশি। করোনা ভাইরাস ‘স্ট্রেপ্টোকক্কাস নিউমোনি’ নামের ব্যাকটেরিয়ার তুলনায় বহুগুণে আগ্রাসী ও ক্ষতিকর। ফলে নিউমোনিয়া ভেবে ভুল করলেই বাড়ছে মৃত্যুর ঝুঁকি।
নিউমোনিয়ার লক্ষণ বা উপসর্গ:
নিউমোনিয়ার প্রাথমিক লক্ষণ হল জ্বর আর তার সঙ্গেই অনর্গল খুসখুসে কাশি। এর পাশাপাশি শ্বাসকষ্টের সমস্যাও থাকে। ফুসফুসে সংক্রমণ যত বাড়ে, শ্বাসকষ্টও ততই বাড়তে থাকে।
নিউমোনিয়ায় বুকে ব্যথা হতে পারে। তবে বুকের ব্যথার ধরন একেবারে আলাদা। গভীর বা লম্বা শ্বাস নেওয়ার সময়ে বুকে ব্যথা বা চাপ অনুভূত হতে পারে। মূলত ফুসফুসে সংক্রমণজনিত প্রদাহের ফলে এই ব্যথা হয়।
এ ছাড়া, নিউমোনিয়ায় মাথায় যন্ত্রণা, শরীর দুর্বল হয়ে পড়া, খাওয়ার ক্ষেত্রে অনীহা, সারাক্ষণ বমি বমি ভাব ইত্যাদি একাধিক আনুষঙ্গিক সমস্যা দেখা দেয়। চিন্তার বিষয় হল, জ্বর, নিউমোনিয়া, হাঁচি, সর্দিকাশি, শ্বাসকষ্ট— এই সব চেনা নিউমোনিয়ার লক্ষণ বা উপসর্গের আড়ালেই হানা দিচ্ছে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস।
আরও পড়ুন: কেমোথেরাপি নয়, ক্যান্সারের কোষকে ধ্বংস করবে বিশেষ ধরনের শ্বেত রক্তকণিকা!
চিনের ইউহান প্রদেশ-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাস ইতিমধ্যেই প্রাণ কেড়েছে বহু মানুষের। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত মিলেছে ব্যাঙ্কক, আমেরিকাতেও। ইতিমধ্যেই ভারতের ৭টি বিমানবন্দরে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট অঞ্চল থেকে আসা বিমান্যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে তবেই দেশে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে।
বিশিষ্ট শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ প্রিয়ঙ্কর পাল বলেন, “এটি নতুন চরিত্রের। মূলত শ্বাসনালী আক্রমণ করে তা অকেজো করার চেষ্টা করে। জ্বর হয়। নির্দিষ্ট কোনও উপসর্গ না থাকায় এই ভাইরাস চিহ্নিত করাটা বেশ সমস্যার। আমাদের এখানে এখনও এটি পরিচিত নয়। কোনও প্রতিষেধক (ভ্যাকসিন) নেই। তাই সতর্ক থাকা জরুরি।”
ভাইরাস গবেষক সুমন পোদ্দার বলেন, “এখনও এর আসল উৎস নিয়ে নির্দিষ্ট কিছু এখনও জানা যায়নি। ভয়ের কিছু নেই। শারীরিক সমস্যা থাকলে বিপদ হতে পারে। তবে আমরা এখনও ধোঁয়াসার মধ্যে।”