একুশে জুলাই রিপোর্টে চাঞ্চল্যকর তথ্য: ২৪ ঘণ্টা এক্সক্লুসিভ
উনিশশো তিরানব্বই সালের একুশে জুলাই গুলি চালানোর ঘটনায় একটি রিপোর্ট তৈরি করেছিলেন তত্কালীন পুলিস কমিশনার। সেই রিপোর্ট তিনি পাঠিয়েছিলেন তত্কালীন স্বরাষ্ট্রসচিব মণীশ গুপ্তকে। মণীশ গুপ্ত এই রিপোর্টটিকে মেনে নিয়ে আদালতে পেশ করেছিলেন।
উনিশশো তিরানব্বই সালের একুশে জুলাই গুলি চালানোর ঘটনায় একটি রিপোর্ট তৈরি করেছিলেন তত্কালীন পুলিস কমিশনার। সেই রিপোর্ট তিনি পাঠিয়েছিলেন তত্কালীন স্বরাষ্ট্রসচিব মণীশ গুপ্তকে। মণীশ গুপ্ত এই রিপোর্টটিকে মেনে নিয়ে আদালতে পেশ করেছিলেন। গোপন সেই রিপোর্ট এসে পৌঁছেছে চব্বিশ ঘণ্টার হাতে। যাতে বর্তমান সরকারের মন্ত্রী এবং তখনকার স্বরাষ্ট্রসচিব মণীশ গুপ্ত চাঞ্চল্যকর বেশকিছু তথ্য জানিয়েছিলেন।
ক্ষমতায় এসেই সেই ঘটনার তদন্তে কমিশন গঠন করেছেন সেদিনের আন্দোলনের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মদন মিত্র যে মন্ত্রিসভার সদস্য তারই এক অন্যতম সদস্য মণীশ গুপ্তও। অথচ আদালতে দাখিল করা তাঁর সেদিনের রিপোর্টে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর নানা তথ্য। যাতে পুলিসের গুলি চালানোর জন্য দায়ী করা হয়েছে, খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর সমর্থকদেরই।
রিপোর্টে জানানো হয়েছে, আহতদের আঘাত থেকেই পরিস্কার মমতা ব্যানার্জির সমর্থকরা সেদিন বোমা, পাইপগান নিয়ে হিংসার উদ্দেশ্যেই জড়ো হয়েছিল। সমর্থকদের মহাকরণ দখলের সেই চেষ্টা এবং পুলিসের তরফে তা ঠেকাতে যাওয়াতেই সংঘর্ষ অনিবার্য হয়ে পড়ে। যুব কংগ্রেসের নেতারা উত্তেজক কথাবার্তা বলে পুলিসকে আক্রমণের প্ররোচনা দিচ্ছিলেন। কিন্তু ঘটনার সময় তাঁরাই এলাকা ছেড়ে যাওয়ায় সমর্থকরা নেতৃত্বহীন হয়ে পড়ে।
সেই দিন সবকটি জায়গাতেই গন্ডগোলের উদ্দেশ্যে মদ্যপ এবং সমাজবিরোধীদের জড়ো করা হয়েছিল। মেয়ো রোডের মতো জায়গায় কোনও দায়িত্বশীল নেতা উপস্থিত না থাকার কারণেই হিংসা আরও ছড়িয়ে পড়ে। এসবের সঙ্গেই ডোরিনা ক্রসিং সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে উদ্ধার হওয়া অস্ত্রের বিস্তারিত তালিকাও রয়েছে কমিশনারের তৈরি ওই রিপোর্টে। এসপ্ল্যানেড রো ইস্টেও গন্ডগোলের সময় নেতৃ্ত্বের এলাকা থেকে চলে যায়। ফলে গোটা এলাকাই সমাজ বিরোধীদের দখলে চলে যাওয়ায় পুলিস চারদিক থেকে আক্রান্ত হয়।
রিপোর্ট অনুযায়ী, মমতা ব্যানার্জি বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ ব্র্যাবোর্ন রোডে এসে সমর্থকদের নিয়ে বসে পড়েন। ফলে পুলিস তাদের হঠাতে গেলে তীব্র বাধার মুখে পড়ে। এরপর মমতা ব্যানার্জি অসুস্থ বোধ করছেন বলে জানান। সেইসময় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় জনতার মধ্যে উত্তেজনা ছড়ায়। এরপরই এলাকা ছেড়ে যান মমতা ব্যানার্জি। সেদিনের সেই নেত্রী আজ সরকারের শীর্ষ পদে। অথচ তাঁর সরকারের মন্ত্রীই তত্কালীন স্বরাষ্ট্রসচিব মণীশ গুপ্ত। আদালতে জমা দেওয়া তাঁর সেদিনের রিপোর্ট এবারে জমা পড়েছে একুশে জুলাইয়ের কমিশনেও। এবারে তাই কমিশনে ডাক পড়তে পারে বিদ্যুত্মন্ত্রীর।