লকডাউনে কলকাতায় অস্বাভাবিক মৃত্যু ৮০! চাঞ্চল্যকর তথ্য পুলিসের হাতে
কলকাতা পুলিসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গত চার মাসে(মার্চ-জুন) কলকাতাতে অস্বাভাবিক মৃত্যুর সংখ্যা ৮৫ ।
নিজস্ব প্রতিবেদন: মহামারী করোনার জন্য গত চারমাস ধরে লকডাউনে স্তব্ধ ছিল গোটা রাজ্য। বর্তমানে আংশিক লকডাউনে থমকে রয়েছে শহর কলকাতা। এই পাঁচ মাসে ধরে লকডাউনের জেরে তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়েছে মানুষের আয়ের উতস। ছোট বড় ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে বেসরকারি অফিসের কর্মীদের উঠে গেছে নাভিশ্বাস। কারোর ব্যবসা লাটে উঠেছে। কেউবা হারিয়েছেন চাকরি। পরিবারের মুখে খাবার তুলে দিতে না পেরে এই পাঁচমাসে শয়ে শয়ে মানুষকে অবসাদ গ্রাস করেছে। তার জন্যই কি আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন অধিকাংশ মানুষ। নাকি আধুনিক জীবনযাত্রায় একাকীত্বই আত্ম হননের পথ দেখাচ্ছে মানুষকে! তত্ত্ব যাই থাক, সম্প্রতি এ রাজ্যে আত্ম হননের হিড়িক উদ্বেগ তৈরি করেছে।
কলকাতা পুলিসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গত চার মাসে(মার্চ-জুন) কলকাতাতে অস্বাভাবিক মৃত্যুর সংখ্যা ৮৫ । যার মধ্যে আত্মঘাতী হয়েছেন ৬০ জন। আর অন্যান্য কারণে মৃত্যু হয়েছে ২৫ জনের। সবচেয়ে বেশি আত্মঘাতী হয়েছে জুন মাসে।
পুলিশের সূত্র বলছে:-
মার্চে আত্মঘাতী- ৫ জন
এপ্রিলে আত্মঘাতী ৬ জন
মে আত্মঘাতী ১১ জন
জুনে আত্মঘাতী ৩৮ জন
জুলাই মাসেও একাধিক আত্মঘাতীর খবর মিলেছে।
মাস শেষ না হওয়ার জন্য পুলিস সেই ডাটা লিপিবদ্ধ করেনি। শহর কলকাতায় এই অস্বাভাবিক মৃত্যু কপালে ভাঁজ ফেলেছে প্রশাসনের।
পুলিশ সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে এই নিয়ে পুলিশের পদস্থ কর্তারা ভাবনা চিন্তা শুরু করেছেন। পুলিসে সমীক্ষা চালিয়ে দেখেছে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অবসাদে আত্মঘাতী। পুলিসের প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী জুন মাসে সবচেয়ে বেশি আত্মঘাতীর খবর মিলেছে। প্রাথমিক অনুমান, চাকরি না থাকা, অর্থের অভাবের কারণটাই বেশী।
আরও পড়ুন: বাংলার হালহকিকত নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে প্রায় দেড় ঘণ্টা একান্তে আলোচনা রাজ্যপালের
ভারতে করোনার প্রভাব সরাসরি মানুষের জীবনে পড়তে শুরু করে মার্চ মাসের শেষের দিকে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘোষণা অনুযায়ী ২১ মার্চ ছিল জনতা কার্ফু। ২৩ মার্চ থেকে দেশজুড়ে শুরু হলো লকডাউন। পাঁচ দফা লকডাউন চলে জুন মাসের মাঝামাঝি। এরপর আনলক ওয়ান –টু শুরু হয়। কিন্তু জনজীবন এখনও ছন্দে ফেরেনি। পরিস্থিতি যা তাতে স্বাভাবিক জনজীবন কবে ফিরবে তা জোর দিয়ে কেউ বলতে পারছেন না। এই জটিল পরিস্থিতিতে আত্মহত্যার ঝোঁক আরও বাড়বে বলে পুলিসের আশঙ্কা।