সঞ্চালক অঞ্জনদা কখনোই নিজের মত কারও উপর চাপিয়ে দিতেন না, সকলকে বলার সুযোগ দিতেন
অঞ্জনদার ছাপ 'Zee ২৪ ঘণ্টা' জুড়ে রয়েছে।
কৌশিক সেন
সংবাদ যখন কাগজ থেকে পর্দায় এল, তখন থেকে সঞ্চালকের ভূমিকাটা সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়ল। তবে সকলেই সঞ্চালক হতে পারেন না। ভেবে দেখতে গেলে, বাংলায় এ ক্ষেত্রে অন্তত দু'জনের নামই আমার মনে আসে। এর মধ্যে অবশ্যই অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় অন্যতম নাম।
একজন রাজনীতিবিদ, একজন খেলোয়াড়, একজন ডাক্তার, একজন মন্ত্রী, একজন শিল্পী-- (টক শো'য়ে) যাঁর সঙ্গেই কথা বলতেন না কেন অঞ্জনদা, কখনোই তাঁদের উপর নিজের মত চাপিয়ে দিতেন না। তিনি সকলকে বলার সুযোগ দিতেন। তাঁর অভিব্যক্তিতেই প্রকাশ পেত সেটা। কোনও ভিভিআইপির সাক্ষাত্কার নেওয়ার জন্য একজন সঞ্চালকের যে অভিব্যক্তিটা প্রয়োজন, সেটা অঞ্জনদার ছিল।
আরও পড়ুন: কেমন সঞ্চালক ছিলেন অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়? 'আপনার রায় উইথ অঞ্জন' অনুষ্ঠানে ব্রাত্য বসুর মুখোমুখি তিনি!
এমন নয় যে, আমি অঞ্জনদার সঙ্গে সব সময়ে সহমত হয়েছি। যে কোনও আলোচনা করার সময়ে সঞ্চালকের নিজস্ব একটা মতামত থাকে, নিজস্ব একটা বোধ থাকে। আমি অনেক সময়ই তাঁর ভাবনার একেবারে বিপরীত দিকেও দাঁড়িয়ে দেখেছি, তিনি তখনও একই ভাবে আমায় গ্রহণ করেছেন। সঞ্চালক হিসেবে এটা তাঁর এক বিরল গুণ ছিল।
আরেকটি দিকও অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য। সেটা বলার আগে একটা উদাহরণ দিই। আমার থিয়েটারের দলের ছাত্রদের উপর যদি আমার ছায়া পড়ে, সেটা দেখে আমার ভাল লাগে। তাঁদের কাজ দেখতে গিয়ে আমি যদি সেখানে আমার ছাপ দেখতে পাই, মনটা আনন্দে ভরে যায়। তেমনই অঞ্জনদার ছাপ 'Zee ২৪ ঘণ্টা' জুড়ে রয়েছে। ওঁর কথা বলার ধরন, প্রেজেন্টেশন, সবটাই ওঁর পরের প্রজন্মকে দিয়ে গিয়েছেন উনি। এটা বেশ ভাললাগার।
তবে, সংবাদের একজন দর্শক হিসাবেই এ কথা বললাম, ব্যক্তিগত দিকটা আজ বরং তোলাই থাক।
আরও পড়ুন: অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় আমার স্মৃতিতে আছেন, আমার সত্তায় আছেন, আমার ভবিষ্যতেও থাকবেন