বিমা সংস্থার নামে চলছে সই জালের বেআইনি কারবার
কম্পিউটারে বসে মাউসের ক্লিক। আর আপনার হাতের মুঠোয় বিনিয়োগ সংক্রান্ত যাবতীয় সমস্যার সমাধান। তবে কোনও সংস্থায় ইন্টারনেটের সাহায্যে বিনিয়োগ কি আদৌ নিরাপদ? ২৪ ঘণ্টার গোপন ক্যামেরায় উঠে আসা প্রতিবেদন বলছে অন্য কথা। কসমিক ই সার্ভিস নামে একটি সংস্থার অবৈধ কারসাজির কথা ফাঁস করে দিয়েছেন সংস্থারই এক কর্মী।
কম্পিউটারে বসে মাউসের ক্লিক। আর আপনার হাতের মুঠোয় বিনিয়োগ সংক্রান্ত যাবতীয় সমস্যার সমাধান। তবে কোনও সংস্থায় ইন্টারনেটের সাহায্যে বিনিয়োগ কি আদৌ নিরাপদ? ২৪ ঘণ্টার গোপন ক্যামেরায় উঠে আসা প্রতিবেদন বলছে অন্য কথা। কসমিক ই সার্ভিস নামে একটি সংস্থার অবৈধ কারসাজির কথা ফাঁস করে দিয়েছেন সংস্থারই এক কর্মী।
কসমিক ই সার্ভিস। মূলত বিমা সংস্থা হলেও ওয়েবসাইটে আছে হোমলোন, রিয়েল এস্টেটের হদিশও। নিজেদের "ওয়ান স্টপ সলিউশন" বলেই ফলাও করে দাবি করে সংস্থাটি। একাধিক নামীদামী বেসরকারি বিমা সংস্থার সঙ্গে নিজেদের লেনদেনের কথা ফলাও করে লেখা রয়েছে সংস্থার ওয়েবসাইটে।
কিন্তু, এই কসমিক ই সার্ভিসের কর্মীদের অভিজ্ঞতা কিন্তু বেশ তিক্ত। ২৪ ঘণ্টার ক্যামেরার সামনে সেই অভিজ্ঞতার কথাই অকপটে জানিয়েছেন এক কর্মচারী। তিক্ত অভিজ্ঞতার পাশাপাশি সংস্থার অবৈধ গোপন কারসাজির কথাও ফাঁস করে দিয়েছেন তিনি।
বিমার টেলিমার্কেটিংয়ের জন্য মাত্র চার-পাঁচ হাজার মাসিক বেতনে উচ্চমাধ্যমিক ও স্নাতকোত্তর পাশ ছেলেমেয়েদের নিয়োগ করে কসমিক ই সার্ভিস। বিভিন্ন নামকরা বিমা সংস্থার ভুয়ো পরিচয়পত্রও দেওয়া হয় সেলস ম্যানেজারের পদে নিযুক্ত এই সব কর্মীদের। তবে সঠিক পরিচয় থাকে না সেই পরিচয়পত্রে। নাম বদলে অনেকক্ষেত্রে একই কর্মীকে দেওয়া হয় একাধিক পরিচয়পত্র।
এখানেই শেষ না। সেলস ম্যানেজারের পদ নিযুক্ত এইসব কর্মীদের দিয়ে সই জালের মারত্মক ব্যবসাই ফেঁদে বসেছে কসমিক ই সার্ভিস। অভিযোগ, সেই ভুয়ো পরিচয়পত্র দেখিয়ে বিমা পলিসির গ্রাহকদের থেকে প্রিমিয়ামের চেক তুলতেন এই কর্মীরা। পরে অফিসে এনে সেই সই জাল করা হত লাইট ট্রেসিং সহ বিভিন্ন কায়দায়।
এরপর জাল সই এবং চেকের টাকা ব্যবহার করে গ্রাহকের নামেই খোলা হয় নতুন আরেকটি পলিসি। সেক্ষেত্রে আগের পলিসিটির ক্ষেত্রে ডিফল্টার হয়ে যান গ্রাহকরা। অতএব হাতছাড়া হয়ে যায় আসল পলিসির প্রাপ্য টাকা। একদিকে গ্রাহককে ন্যায্য টাকা না দিতে হওয়ায় লাভ হয় বিমা সংস্থাগুলির। অন্যদিকে বিভিন্ন গ্রাহকের নামে নতুন নতুন পলিসি ইস্যু করে নিজেদের লাভের অঙ্কটা কয়েকগুণ বাড়িয়ে নেয় কসমিক ই সার্ভিসও। অবৈধ কারসাজি প্রকাশ্যে চলে আসায়, আরও একটি প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। নামীদামী বেসরকারি বিমা সংস্থাগুলির সঙ্গে যোগসাজসেই কি চলছে এই লোকঠকানো কারবার?
টাকা আত্মসাত করার এই কারবারের কথা জানতে পেরে অনেকক্ষেত্রেই বেঁকে বসেন সংস্থার কর্মীরা। তবে প্রতারণার ফাঁদ থেকে বেরোতে চাইলে সেইসব কর্মীদের কপালে জোটে হুমকি। ২৪ ঘণ্টার গোপন ক্যামেরায় ধরা পড়ল সেই কথোপকথনও। কসমিক ই সার্ভিসের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার তরুণ মান্না। প্রতারণার এই ব্যবসায় পুলিসের ভূমিকাও বাতলে দিলেন তিনি।
২৪ ঘণ্টার ক্যমেরায় উঠে এসেছে সেই তথ্যই। দেখতে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে।