'এটা করতে পারেন না রাজ্যপাল', চূড়ান্ত ক্ষুব্ধ রাজ্যের পুলিস মহল, আগুনে ঘি সায়ন্তনের মন্তব্য
"এই ধরনের অফিসাররাই আবার পুলিস মেডেল পাওয়ার জন্য কেন্দ্রের লোক ধরার চেষ্টা করেন... বাংলার পুলিস বালি, গরু পাচারের টাকা তুলে তৃণমূলের ফান্ডে দিতে ব্যস্ত।"
নিজস্ব প্রতিবেদন : প্রকাশ্যে পুলিস কমিশনারকে রাজ্যপালের ধমকের ঘটনায় ক্ষুব্ধ রাজ্যের IPS মহল। এদিন উত্তর ২৪ পরগনার বারাকপুরের গান্ধীঘাটে শ্রদ্ধা জানাতে যান রাজ্যপাল Jagdeep Dhankhar। সেখানেই পুলিস কমিশনার মনোজ ভার্মাকে (Manoj Verma) তীব্র ধমক দেন তিনি। একইসঙ্গে পুলিস প্রশাসনের বিরুদ্ধেও উগরে দেন ক্ষোভ। সাংবিধানিক প্রধানের তিরস্কারের পদ্ধতি নিয়ে এরপরই বিতর্কের ঝড় ওঠে। রাজ্যের IPS মহল এই ঘটনায় চূড়ান্ত ক্ষোভ ব্যক্ত করেছে। সূত্রের খবর, এই নিয়ে স্বরাষ্ট্রদফতরকে রিপোর্ট পাঠানো হচ্ছে। এরফলে পুলিসের মনোবল ধাক্কা খেতে পারে বলে মনে করছেন প্রাক্তন পুলিসকর্তারা।
রাজ্যের আইপিএস অফিসারদের স্পষ্ট বক্তব্য, "এটা চূড়ান্ত অবমাননা। আইনশৃঙ্খলার রাজ্যের বিষয়। রাজ্যপালের যদি কিছু বলার থাকে তাহলে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবকে জানানোটাই প্রথা। উর্দিধারী পুলিস কমিশনারকে এভাবে প্রকাশ্যে ভর্তসনা করতে পারেন না রাজ্যপাল। এতে সম্মানহানি হয়েছে।" এই ঘটনায় অপমানিত বোধ করছে রাজ্যের IPS মহল। এই প্রসঙ্গে সিপিআইএম পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিমও বলেন, "পুলিস শুধু চাকরি করে না, দেশসেবা করে। এমন সেবামূলক চাকরি যাঁরা করেন, তাঁদের সঙ্গে প্রশাসনের সকলেরই ভালো ব্যবহার করা উচিত।"
এদিকে একদিকে যখন রাজ্যপালের ব্যবহারে চূড়ান্ত ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজ্যের আইপিএস কর্তারা, তখন অন্যদিকে ফের পুলিসের উদ্দেশে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু (Sayantan Basu)। তিনি বলেন, "রাজ্য প্রশাসন সংবিধান মানছে না। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ থাকে, কাউকে সম্মান করবেন না। এই ধরনের অফিসাররাই আবার পুলিস মেডেল পাওয়ার জন্য কেন্দ্রের লোক ধরার চেষ্টা করেন। মনোজ ভার্মা রাজনীতির গুটি হয়ে গিয়েছেন। উর্দির সম্মান রক্ষা করা উচিত। রাজ্যপালের উচিত কেন্দ্রকে এই বিষয়ে জানানো ও হস্তক্ষেপ চাওয়া। বাংলার পুলিস বালি, গরু পাচারের টাকা তুলে তৃণমূলের ফান্ডে দিতে ব্যস্ত।"
আরও পড়ুন, 'শিশুসুলভ আচরণ রাজ্যপালের, আমাকে অসম্মান করলে আমি ৪ গুণ করব'
প্রসঙ্গত, এদিন গান্ধীঘাটে পুলিস কমিশনার মনোজ ভার্মার উদ্দেশে ক্ষুব্ধ রাজ্যপালকে বলতে শোনা যায়, "প্রথম সারিতে বসে খবরের কাগজ পড়ছেন? এটা কী ধরনের আচরণ? আপনারা থাকেন কোথায়? লজ্জা হওয়া উচিত। উর্দি পরে যদি এটা করেন, তাহলে অন্যরা দেখে কী শিখবে, কী করবে?" এখানেই শেষ নয়। এরপর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা প্রসঙ্গে তোপ দাগেন রাজ্যপাল ধনকড়। উগরে দেন তীব্র ক্ষোভ। বলেন, "আজ গান্ধীজির প্রয়াণ দিবস। এই দিন অহিংসার দিন। সেখানে রাজ্যজুড়ে হিংসা চলছে। রাজ্যের কোথাও আইন বলে কিছু নেই। আইনশৃঙ্খলার চূড়ান্ত অবনতি। পুলিস প্রশাসন চুপ করে আছে।"