জোটে ঘোঁট? মমতার কথায় ভরসা নেই সূর্য-সুজনের, উল্টোসুর অধীরের
আগামী ২৭ জানুয়ারি সিএএ বিরোধী প্রস্তাব আনা হবে বলে এদিন জানিয়েছেন পরিষদীয় দলনেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
নিজস্ব প্রতিবেদন: লোকসভা ভোটে ভরাডুবির পর সমাঝোতা করে চলছে বাম-কংগ্রেস। সব বিষয়েই মোটামুটি একই অবস্থা নিয়ে চলছেন দুই শিবিরের নেতারা। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিএএ প্রত্যাখ্যান প্রস্তাব নিয়ে মতের অমিল সূর্যকান্ত মিশ্র ও অধীর চৌধুরী। না আঁচালে মমতাকে বিশ্বাস নেই বলে সোমবার খোঁচা দিয়েছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক। তার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী আবার মমতার প্রশংসা করে দিলেন।
সোমবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা থেকে শিলিগুড়ি যাওয়ার পথে বিমানবন্দরে বলেছিলেন, ''আমরা ইতিমধ্যেই এনআরসি ও সিএএ বিরোধিতা করে প্রস্তাব এনেছি। তখন ওটা বিল ছিল। এখন আইন। তার প্রত্যাহার চেয়ে প্রস্তাব আনব।'' আগামী ২৭ জানুয়ারি প্রস্তাব আনা হবে বলে এদিন জানিয়েছেন পরিষদীয় দলনেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়। মমতার এহেন ঘোষণায় সন্তোষপ্রকাশ করেছেন প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তাঁর কথায়,''ভালো প্রস্তাব। অনেক আগে আনা উচিত ছিল। মমতার কাছে বিরোধী দলের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছিল, তখন উনি শোনেননি। প্রস্তাব আনলে খুশিই হব। সমর্থন দেব। দেরিতে হলেও সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বেটার লেট দ্যান নেভার।''
মমতার কথায় ভরসা রাখছে না সিপিএম নেতৃত্ব। সে কথা গতকাল, সোমবারই স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন সূর্যকান্ত মিশ্র ও বাম পরিষদীয় দলের নেতা সুজন চক্রবর্তী। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বলেছিলেন,''ওনাকে না আঁচালে বিশ্বাস নেই। করার হতো আগেই করতেন। কেরল তো আগেই প্রস্তাব পাস করেছে। বিভিন্ন রকমভাবে মানুষকে ভুল বোঝানোর কথায় মেতেছেন উনি। ওনার উপরে বিশ্বাস নেই আমাদের।'' সুজন চক্রবর্তী বলেছিলেন,''উনি সকালে এক বলেন, বিকেলে পাল্টে দেন। আগে দেখি কী করেন।''
সিপিএম ও কংগ্রেস নেতার পরস্পরবিরোধী মন্তব্যে উঠছে প্রশ্ন। বিশেষ করে অধীরের সঙ্গে মমতার 'মধুর' সম্পর্ক কারও জানতে বাকি নেই। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, অধীর এখন লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা। তাঁকে দিল্লির স্বার্থের কথাও মাথায় রাখতে হচ্ছে। মোদী বিরোধিতায় অন্যতম মুখ মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। বাংলার নেত্রীকে স্বাভাবিকভাবেই চটাতে চাইছেন না সনিয়া-রাহুল। কংগ্রেসের ডাকা এনআরসি সংক্রান্ত বৈঠক মমতা এড়িয়ে যাওয়া সত্ত্বেও তাঁকে নিয়ে একটাও কথা বলেনি হাইকম্যান্ড। বরং মমতাকে সঙ্গে নিয়ে চলতেই আগ্রহী তারা।
কেন বামেরা ভরসা রাখছে না?
নাগরিকপঞ্জি ও নাগরিকত্ব সংশোধিত বিল বিরোধী প্রস্তাব বিধানসভায় পেশ করেছিলেন সুজন ও মান্নান। সেই প্রস্তাবটি গৃহীত হয়েছিল ৬ সেপ্টেম্বর। এর মাঝে নাগরিকত্ব বিল পরিণত হয় আইনে। স্বাভাবিকভাবে সেই প্রস্তাবের বৈধতা থাকে না। সে কথা সোমবার উল্লেখও করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপর গত ৭ জানুয়ারি কেরলের মতো নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বিরোধী প্রস্তাব আনতে চায় বাম-কংগ্রেস। কিন্তু সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেননি স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। বাম শিবিরের প্রশ্ন, হঠাত্ কী হল যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের অবস্থান বদল করলেন?
আরও পড়ুন- ‘বিরোধীরা যত পারে প্রতিবাদ করুক, সিএএ প্রত্যাহার করা হবে না’, সাফ ঘোষণা অমিত শাহের