Anubrata Mandal: কালো টাকা সাদা করতে অনুব্রতর হাতিয়ার ছিল লটারি, কীভাবে করা হতো পুরস্কারের ব্যবস্থা!

Anubrata Mandal: ইডির চার্জশিটে আরও দাবি করে হয়েছে।  তৃণমূলের দুই কাউন্সিলর থেকে একাধিক তৃণমূল কর্মীর নামে বেনামে অ্যাকাউন্ট খুলে টাকা সরিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। ইডির চার্জশিটে এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করা হয়েছে। চার্জশিটে ইডির দাবি, বাড়ির কাজের লোক বিদ্যুৎবরণ গায়েন ও কাউন্সিলর বিশ্বজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে প্রচুর বেনামে সম্পত্তি কেনা হয়

Updated By: May 5, 2023, 04:24 PM IST
Anubrata Mandal: কালো টাকা সাদা করতে অনুব্রতর হাতিয়ার ছিল লটারি, কীভাবে করা হতো পুরস্কারের ব্যবস্থা!

পিয়ালি মিত্র: গোরুপাচার কীভাবে, সেই টাকা গচ্ছিত রাখা হতো কোন পথে তা ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে ইডির চার্জশিটে। গতবছর জানুয়ারি মাসে আচমকাই লটারিতে প্রথম পুরস্কার জেতেন অনুব্রত মণ্ডল। সেই অনুব্রত বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি কিনা তানিয়ে হইচই শুরু হয়ে যায়। শেষপর্যন্ত জানা জায় লটাই জিতেছেন অনুব্রত। ইডি তার চার্জশিটে দাবি করেছে, গোরুপাচারের কালো টাকা সাদা করার জন্য অনুব্রত লটারিতে পুরস্কার জিতেছেন বলে দেখাতেন। 

আরও পড়ুন-কাউন্সিলর থেকে কর্মী, নামে-বেনামে অ্যাকাউন্ট খুলে কেষ্টর টাকা সরানোর ছক ফাঁস ইডির চার্জশিটে!

ইডি তার চার্জশিটে দাবি করেছে, অনুব্রত মণ্ডল অন্তত ৫ বার এবং তাঁর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডল অন্তত ৫ বার লটারি জিতেছেন। প্রত্যেকবার সেই টিকিট কেনা হয়েছিল রামপদ গঙ্গোপাধ্যায় নামে এক লটারির টিকিট বিক্রেতার কাছ থেকে।  ইডির কাছে ওই লটারির টিকিট বিক্রেতা ইডিকে জানিয়েছেন, ২০০৫ থেকে বোলপুরে তিনি লটারির ব্যবসা করছেন। অনুব্রত মণ্ডল বোলপুরের কাউন্সিলর বিশ্বজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাধ্যমে তাঁকে প্রাইজ পাওয়া টিকিটের বন্দ্যোবস্ত করার নির্দেশ দিতেন।  সেই নির্দেশ মতো অনুব্রতর জন্য তিনবার টিকিটের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। সবমিলিয়ে মোট ২ কোটির প্রাইজ জেতা টিকিটের ব্যবস্থা করে দেন। তার মধ্যে ২ বার ৫০ লাখ ও একবার ১ কোটি টাকা জেতেন অনুব্রত।

ইডির বয়ানে ওই লটারি ব্যবসায়ী আরও দাবি করেন, লটারির আসল বিক্রেতাকে নগদে পুরস্কারের টাকা দিয়ে সেই টিকিট কিনে নিতেন বিশ্বজ্যোতি। পরে সেই টিকিট অনুব্রত মেয়ে বা অনুব্রত নিজে জিতেছেন বলে দেখানো হতো। এভাবেই কালো টাকা সাদা করা হতো। এছাড়াও ছিল অনুব্রতর নামে বহু বেনামি অ্যাকাউন্ট। সেইসব অ্যাকাউন্টে মোট ৫ কোটি টাকা ডিপোডিট করা। গতকাল দিল্লির রাউজ অ্যাভিনিউ আদালতে অনুব্রত মণ্ডল, সুকন্যা মণ্ডল ও মণীশ কোঠারির নামে যে চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে সেখানেই ওইসব দাবি করা হয়েছে। অনুব্রত মণ্ডল দাবি করেছিলেন তাঁর অ্যাকাউন্টে বা তাঁর মেয়ের অ্যাকাউন্টে যে টাকা ঢুকেছে তার এক বড় অংশ লটারি থেকে পাওয়া। সেই কথার তদন্ত করতে গিয়ে ইডি লক্ষ্য করে একই দোকান থেকে কেনা টিকিটে বারবার লটারিতে টাকা জিতেছেন অনুব্রত ও তাঁর মেয়ে। সেই রহস্যের জট খুলতে গিয়েই বেরিয়ে এসেছে ওইসমস্ত তথ্য।

এদিকে, ইডির চার্জশিটে আরও দাবি করে হয়েছে।  তৃণমূলের দুই কাউন্সিলর থেকে একাধিক তৃণমূল কর্মীর নামে বেনামে অ্যাকাউন্ট খুলে টাকা সরিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। ইডির চার্জশিটে এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করা হয়েছে। চার্জশিটে ইডির দাবি, বাড়ির কাজের লোক বিদ্যুৎবরণ গায়েন ও কাউন্সিলর বিশ্বজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে প্রচুর বেনামে সম্পত্তি কেনা হয়। তারপর বেনামে অ্যাকাউন্ট খুলে টাকা সরানো হয়। এছাড়াও তৃণমূল কাউন্সিলর ওমর শেখ, দলীয় কর্মী অর্ক দত্ত, তাপস মণ্ডল ও শ্যামাপদ কর্মকার এবং সবজি ব্যবসায়ী বিজয় রজক- এদের প্রত্যেকের নামে অনুব্রতর কথায় সায়গাল হোসেন বেনামে অ্যাকাউন্ট খোলে।

এই সব অ্যাকাউন্টে বিপুল অর্থের টাকা নগদে জমা করা হত। পরে তা অনুব্রত এবং তাঁর পরিবার সদস্য ও সায়গেল হোসেনরা ব্যবহার করত। ইডির দাবি এমনই। কারণ প্রত্যেকেই ইডির কাছে বয়ানে দাবি করে যে, অনুব্রতর কথা মতো সায়গেল হোসেন তাঁদের নামে অ্যাকাউন্ট খুললেও, সেই অ্যাকাউন্টের পাশবুক থেকে চেকবুক সবই থাকত অনুব্রতর কাছে। অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলা থেকে শুরু করে ট্রান্সফার, সবই করতেন অনুব্রত মণ্ডল। লেনদেন সম্পর্কে তাঁরা কিছু-ই জানেন না। 

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App) 

.