Anubrata Mandal Detained: মমতা এখন কোথায়; বিবৃতি দিন, অনুব্রতর আটকে সরব সুজন
অনুব্রতর আটক নিয়ে বিশিষ্ট আইনজীবী ও সিপিএম নেতা বিকাশ ভট্টাচার্য বলেন, 'অনুব্রত একা শুধু নন, তার পেছনে একটি বড় রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও রাজনৈতিক চক্রান্ত রয়েছে। এই রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের যিনি মাথা তাঁর দিকে হাত বাড়াতে হবে। কেলেঙ্কারির মক্ষীরানী হলেন মুখ্যমন্ত্রী
মৌমিতা চক্রবর্তী: বারবার নোটিস পাঠানো হলেও সাড়া দেননি অনুব্রত মণ্ডল। তাই শেষপর্যন্ত বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতিকে আটক করল সিবিআই। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছিল গ্রেফতার করা হয়েছে অনুব্রতকে। পরে অনুব্রত আইনজীবী দাবি করেন, গ্রেফতার করা হয়নি অনুব্রতকে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পর অনুব্রতর উপরে সিবিআই ব্যবস্থা নেবে তা আশঙ্কাই করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সেটাই হল। এনিয়ে একপ্রকার উচ্ছ্বসিত বিরোধী শিবির। অনব্রতর আটকের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিবৃতি দাবি করেন সুজন চক্রবর্তী। সিপিএম নেতা বলেন, 'বাড়ি থেকে কার্যত ঘাড় ধরে দোর্দণ্ডপ্রতাপ মাফিয়া অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। কেন ওই অবস্থা তৈরি হল? দশবার বারোবার সিবিআই ডাকছে আর উনি এড়িয়ে যাচ্ছেন। প্রশাসনিক ক্ষমতা ব্যবহার করে ডাক্তারকে দিয়ে ভুল লেখালেন। তাতেও ধরা পড়ে গেলেন। লাজ লজ্জা নেই কিছু! উনি যখন চড়াম চড়াম ঢাক বাজাবার কথা বলেছেন তখন মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্রয় দিয়েছেন। উনি যখন পুলিসকে বোমা মারার কথা বলেছেন তখন মুখ্যমন্ত্রী কার্যত সার্টিফিকেট দিয়েছেন। বহু জেলার জেলা সভাপতি বদল হয়েছে। উনি বদল হননি। ম্যাড়া লড়ে খুঁটির জোরে। অনুব্রত মণ্ডল মার্কা ম্যাড়া খুঁটির জোরে লড়ছে। খুঁটি মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তিনি কোথায়? তিনি কী বলবেন? অবিলম্বে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিবৃতি দেওয়া উচিত।'
আরও পড়ুন- অনুব্রতর বাড়িতে সিবিআই, বাড়ি ঘিরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ১০০ জওয়ান
অন্যদিকে, অনুব্রতর আটক নিয়ে বিশিষ্ট আইনজীবী ও সিপিএম নেতা বিকাশ ভট্টাচার্য বলেন, 'অনুব্রত একা শুধু নন, তার পেছনে একটি বড় রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও রাজনৈতিক চক্রান্ত রয়েছে। এই রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের যিনি মাথা তাঁর দিকে হাত বাড়াতে হবে। কেলেঙ্কারির মক্ষীরানী হলেন মুখ্যমন্ত্রী। তদন্ত যদি ঠিক পথে যায় তাহলে মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতার করতে হবে। এটা সিবিআইয়ের অনেক আগেই করা উচিত ছিল। অনেক দেরি করে ফেলেছে। এই তদন্তকারী সংস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল। তাদের সেই বিশ্বাসযোগ্যতা ফেরানোর জন্য গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু তা যেন লোক দেখানো না হয়ে যায়। সঠিক তদন্ত করে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে যেন পৌঁছনো যায়। অনের দূর সিবিআইকে যেতে হবে। আইনের দিকে থেকে গ্রেফতার করা ছাড়া উপায় ছিল না।'
গতকাল হাজিরার নোটিস এড়াতেই বৃহস্পতিবার সকালে বোলপুর তাঁর বাড়িতে পৌঁছে যায় সিবিআইয়ের একটি বিশাল টিম। সঙ্গে ২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। অনুব্রতর বাড়ি গিয়ে তাঁর বাড়ি ঘিরে ফেলে কেন্দ্রীয় বাহিনী। তবে সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর বাড়ি ঢুকতে পারেননি সিবিআই আধিকারিকরা। প্রায় আধঘণ্টা অপেক্ষার পর তারা অনুব্রতর ঘরে ঢোকেন। ঘরে ঢুকেই বাড়ির সকলের মোবাইল নিয়ে নেওয়া হয়। সঙ্গে চলে ত্ল্লাশি। কিছুক্ষণ পর ঘর থেকে অনুব্রতকে নিয়ে বেরিয়ে আসে সিবিআই টিম। এরপর নিজের গাড়িতে ওঠেন অনুব্রত। তাঁকে নিয়ে সোজা দুর্গাপুরের উদ্দেশ্য রওনা দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল। মনে করা হয়েছিল তাঁকে নিয়ে যাওয়া হবে দুর্গাপুরে সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পে। কিন্তু দুর্গাপুর ছাড়িয়ে আসানসোলের দিকে রওনা দিয়েছে কনভয়।
অনুব্রতকে গ্রেফতার নাকি আটক করা হয়েছে এনিয়ে একটা ধোঁয়াশা ছিল। কিন্তু তাঁর আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা বলেন, আপাতত আটক করা হয়েছে অনুব্রতকে। গ্রেফতার করা হয়নি। এদিকে, এনিয়ে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ঘাড় ধরে অনুব্রতকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। এখন মমতা কী বলবেন। বিবৃতি দিন। একসম অনুব্রত যখন চড়াম চড়াম ঢাক বাজানোর কথা বলতেন তখন মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্রয় দিয়েছেন। খুঁটির জোরে লড়তেন অনুব্রত। এখন সেই খুঁটি কোথায়?