এক্সক্লুসিভ: লালবাজারের বৈঠকে বিজেপি নেতৃত্বকে কী প্রশ্ন? কী জবাব দিলীপদের?

রথযাত্রা নিয়ে জট কাটাতে হাইকোর্টের নির্দেশে বৈঠকে বসে প্রশাসন ও রাজ্য বিজেপি।

Updated By: Dec 13, 2018, 08:40 PM IST
এক্সক্লুসিভ: লালবাজারের বৈঠকে বিজেপি নেতৃত্বকে কী প্রশ্ন? কী জবাব দিলীপদের?

অঞ্জন রায়

রথযাত্রা নিয়ে কি জট কাটল? লালবাজারে দিলীপ ঘোষদের সঙ্গে প্রশাসনিক কর্তাদের বৈঠকের পর উঠছে এমন প্রশ্নই উঠছে রাজ্যের আনাচে-কানাচে। বৈঠক শেষে বেরানোর পর দিলীপ ঘোষ জানিয়ে দেন, রথযাত্রার পথ পরিবর্তন হবে না। সূচি বদলে রাজি তাঁরা। কিন্তু প্রশাসনিক কর্তারা কী জানতে চাইলেন? সূত্রের খবর, বৈঠকে বিজেপি নেতাদের কয়েকটি প্রশ্ন করা হয়। তার জবাব দিয়েছেন বিজেপির প্রতিনিধিরা। একইসঙ্গে গোটা বৈঠকের ভিডিওগ্রাফিও করা হয়েছে। 

বিজেপি নেতাদের কাছে প্রশাসনিক কর্তারা জানতে চান, রথযাত্রার মাঝে কোনও ধর্মীয় অনুষ্ঠান আছে? বিজেপি নেতারা জানিয়ে দেন, সবটাই রাজনৈতিক। কোনও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের বন্দোবস্ত নেই।    

ক্রিসমাস ও নব বর্ষ উপলক্ষে বিভিন্ন জায়গায় সামাজিক অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা থাকে। সেই সময় রথযাত্রা হলে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। এই বিষয়টি কি বিজেপি মাথায় রেখেছে? দিলীপ ঘোষরা জানান, এসব বিবেচনা করেই রথযাত্রার সূচি তৈরি করা হয়েছে। 

সভায় কত লোক থাকতে পারে বলে অনুমান? প্রশাসনিক কর্তাদের এহেন প্রশ্নে বিজেপি জবাবে দেয়, কত লোক হবে তা বলা সম্ভব নয়। নরেন্দ্র মোদীর সভায় যে লোক আসেন, তা নিশ্চিতভাবেই দিলীপ ঘোষের সভায় আসবেন না। ফলে একেক সভায় একেক রকম ভিড় হতে পারে। 

সভার নির্ঘণ্ট জানতে চান প্রশাসনিক কর্তারা। তখন বিজেপি নেতৃত্ব জানান, দিল্লি থেকে সর্বভারতীয় নেতারা আসবেন। আগে থেকে বলা সম্ভব নয়। প্রশাসন রথযাত্রা ও সভার অনুমতি দিলে নেতাদের থেকে সময় নিয়ে জানানো হবে।  

বৈঠক শেষে দিলীপ ঘোষ সাংবাদিকদের বলেন,''লিখিত আকারে রথের যাত্রাপথ জমা দিয়েছিলাম। ওই রাস্তা দিয়েই যাব। খালি দিন পরিবর্তন করতে হবে। সেভাবেই অনুমতি দিতে হবে। প্রশাসনের অনুমতি দিলেই ২-৩ দিনের মধ্যেই শুরু হবে রথযাত্রা। আমরা শীর্ষ নেতৃত্বের কাছ থেকে সময় নেব, সে জন্য সময় চেয়েছি''।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি মুখ খুললেও বৈঠক নিয়ে প্রশাসনের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। 

এদিন বৈঠকে বিজেপির তরফে থাকার কথা ছিল মুকুল রায়, প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও জয়প্রকাশ মজুমদারের। কিন্তু দিল্লি থেকে অমিত শাহের নির্দেশ আসে সর্বোচ্চ নেতৃত্বকে থাকতে হবে। এরপরই জয়প্রকাশ ও প্রতাপের জায়গায় দিলীপ ও কৈলাসের নাম প্রস্তাব করে বঙ্গ বিজেপি। সেই প্রস্তাব মেনে নেয় প্রশাসন। তবে লালবাজারে পাঁচজন নেতাই গিয়েছিলেন। বৈঠকের শেষের দিকে জয়প্রকাশ ও প্রতাপকে ডেকে নেওয়া হয়।

গেরুয়া শিবিরের রথযাত্রা কর্মসূচি নিয়ে এখন শাসক দল ও বিজেপির মধ্যে চলছে মল্লযুদ্ধ। হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ে ধাক্কা খায় বিজেপি। এরপর ডিভিশন বেঞ্চের শরণাপন্ন হয় তারা। ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ স্বস্তি দেয় বিজেপিকে। শুক্রবার বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দারের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল, রথযাত্রার দিনক্ষণ নির্ধারণে রাজ্যের মুখ্যসচিব ও ডিজির সঙ্গে বৈঠক করতে হবে বিজেপিকে। বিজেপির তরফে যে তিন জনের নাম প্রকাশ করা হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে দুজন অর্থাত্ মুকুল রায় ও জয়প্রকাশ মজুমদারকে নিয়ে আপত্তি ছিল রাজ্যের। রাজ্য সরকারের যুক্তি ছিল, মুকুল রায় ও জয়প্রকাশ মজুমদারের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে, তাঁদের সঙ্গে কীভাবে বৈঠকে বসবেন রাজ্যের ডিজি, মুখ্যসচিব।

সেই যুক্তি উড়িয়ে দেয় আদালত। স্পষ্ট জানায়, অপরাধ প্রমাণ না হলে অপরাধী নয়। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বৈঠকে বসার সময় দেওয়া হয়। ফলে একপ্রকার বাধ্য হয়েই বিজেপিকে বৈঠকে ডাকল লালবাজার। 

বৈঠক যে হতে চলেছে, তার ইঙ্গিত আগেই মিলেছিল। সোমবার নবান্নে আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন ডিজি। কনফারেন্স কলে ছিলেন সংশ্লিষ্ট জের পুলিস সুপাররা। সূত্রের খবর, সংখ্যালঘু ও উত্তেজনাপ্রবণ এলাকা দিয়েও রথযাত্রার অনুমতি দেওয়া হবে না। বিজেপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক এনিয়ে আলোচনা করা হবে। তাঁদের কী করণীয়, তা বলে দেবেন পুলিস কর্তারা।  
             

আরও পড়ুন- কানাডিয়ান প্রেমিকার সঙ্গে সনাতনী রীতিতে বিবাহ রঘু রামের, দেখে নিন বিয়ের ছবি

.