কান্নায়, স্লোগানে, মিছিলে শেষযাত্রা সুদীপ্তর
ছাত্রবিক্ষোভ কর্মসূচিতে যোগ দিতে গিয়ে নিথর হয়ে গিয়েছে ২৩ বছরের সুদীপ্ত। আড্ডার ফাঁকে একবার রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইতে শুরু করলে, যে সুদীপ্ত থামতে চাইতেন না, আজ তিনি চিরঘুমে আচ্ছন্ন। মর্গে ময়না তদন্তের পর তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তাঁর কলেজে। নেতাজি নগর কলেজ থেকে স্নাতক পাশ করেন সুদীপ্ত। কলেজে চোখের জল বাঁধ মানছে না। শান্ত অথচ দৃপ্ত এই ছাত্রের হঠাৎ চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছেন না কেউই। অধ্যক্ষ থেকে সাধারণ ছাত্র ছাত্রী, কান্নায় ভেঙে পড়েছে গোটা নেতাজি নগর কলেজ।
ছাত্রবিক্ষোভ কর্মসূচিতে যোগ দিতে গিয়ে নিথর হয়ে গিয়েছে ২৩ বছরের সুদীপ্ত। আড্ডার ফাঁকে একবার রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইতে শুরু করলে, যে সুদীপ্ত থামতে চাইতেন না, আজ তিনি চিরঘুমে আচ্ছন্ন। মর্গে ময়না তদন্তের পর তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তাঁর কলেজে। নেতাজি নগর কলেজ থেকে স্নাতক পাশ করেন সুদীপ্ত। কলেজে চোখের জল বাঁধ মানছে না। শান্ত অথচ দৃপ্ত এই ছাত্রের হঠাৎ চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছেন না কেউই। অধ্যক্ষ থেকে সাধারণ ছাত্র ছাত্রী, কান্নায় ভেঙে পড়েছে গোটা নেতাজি নগর কলেজ।
কলেজ থেকে বাড়ি নিয়ে যাওয়া হবে মরদেহ। সেখান থেকে এসএফআইয়ের রাজ্য দফতরে নিয়ে যাওয়া হবে এই রাজ্য কমিটির সদস্যের দেহ। দীনেশ মজুমদার ভবন থেকে এর পর ছাত্ররা মিছিল করে সুদীপ্তের শেষকৃত্যের জন্য দেহ নিয়ে যাওয়া হবে কেওড়াতলায়।
কোনওদিনই হিংসাশ্রয়ী রাজনীতিতে বিশ্বাস করতেন না সুদীপ্ত গুপ্ত। অথচ তাঁকেই কিনা হিংসার শিকার হতে হল! ছেলের অকাল মৃত্যুতে এটাই আক্ষেপ বাবা প্রণবকুমার গুপ্তের। পুলিস কী করে এমন নির্মম অত্যাচার চালাতে পারে, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাচ্ছেন না তিনি। গত বছর স্ত্রীকে হারিয়েছেন। নববর্ষের আগে হারালেন তেইশ বছরের ছেলেকে। পুলিসের মারে নিহত ছাত্রনেতা সুদীপ্ত গুপ্তর বাবা তবু মানসিক ভাবে অটল। ছেলের মৃত্যুর ঘটনায় দোষী পুলিসকর্মীরা যাতে উপযুক্ত শাস্তি পান, তার জন্য আইনি লড়াই চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
ভাইয়ের অকাল মৃত্যুতে চোখের জল বাঁধ মানছে না দিদি সুমিতা সেনগুপ্তের। চিরদিনের মতো হারিয়ে যাওয়ার দিনেও দিদির বাড়িতে স্নান করতে গিয়েছিলেন সুদীপ্ত। দিদির বাড়িতে সেটাই তাঁর শেষবারের মতো যাওয়া। কথাটা মনে করলেই কেঁদে উঠছেন সুদীপ্তর দিদি।
গতকাল বাম ছাত্র সংগঠনের আইন অমান্য কর্মসূচির সময় রানি রাসমণি রোড থেকে সুদীপ্ত সহ বহু ছাত্র নেতা কর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিস। প্রাইভেট বাসে করে প্রেসিডেন্সি জেলে নিয়ে যাওয়ার সময় সুদীপ্তকে বাসের ভিতর বেধড়ক মারধর করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুযায়ী, বাসের বাইরেও নির্মম ভাবে লাঠিপেটা করা হয় তাঁকে। এর জেরে পুলিসি হেফাজতেই অত্যধিক রক্তক্ষরণে মৃত্যু হয় সুদীপ্তর। ঘটনার নিন্দায় সরব গোটা রাজ্য।
এসএফআইয়ের তরফে হেস্টিংস থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। পৃথক ভাবে অভিযোগ দায়ের করেছেন সুদীপ্তর বাবা প্রণবকুমার গুপ্ত। ইতিমধ্যে এসএসকেএম হাসপাতালে সূদীপ্তর দেহের ময়নাতদন্ত শুরু হয়েছে। বেলা বারোটা নাগাদ সুদীপ্তর দেহ নিয়ে যাওয়া হবে এসএফআইয়ের কার্যালয়ে। সেখান থেকে প্রথমে নেতাজিনগর কলেজ, এবং পরে তাঁর দেহ নিউ গড়িয়ার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে। শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে কেওড়াতলা মহাশ্মশানে।
পুলিসের হেফাজতে সুদীপ্তর মৃত্যুর প্রতিবাদে আজ রাজ্যজুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে সিপিআইএম। ধিক্কার দিবস পালন করছে বাম যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই।
একটি ছাত্রের মৃত্যু, দেখুন স্লাইড শো