এএমআরআইতে মর্মান্তিক আগুন, ৮৮ জনের মৃত্যু

আমরি হাসপাতালে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এই নিয়ে অগ্নিকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ৮৮। অগ্নিকাণ্ডের পর ঢাকুরিয়া আমরি থেকে মুকুন্দপুর আমরিতে সরিয়ে আনা হয়েছিল মৃদুলা গুহঠাকরতাকে।

Updated By: Dec 9, 2011, 08:51 AM IST

আমরি হাসপাতালে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এই নিয়ে অগ্নিকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল একানব্বই। অগ্নিকাণ্ডের পর ঢাকুরিয়া আমরি থেকে মুকুন্দপুর আমরিতে সরিয়ে আনা হয়েছিল মৃদুলা গুহঠাকরতাকে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। গতকাল রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
অগ্নিদগ্ধ হয়ে এবং শ্বাসকষ্টে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন। বিভিন্ন হাসপাতালে তাঁদের পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় ঢাকুরিয়া এএমআরআই হালপাতালের লাইসেন্স বাতিলের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
ভোর চারটে নাগাদ আগুন লাগে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। প্রাথমিক ভাবে শর্ট সার্কিট থেকেই এই আগুন লেগেছে বলে মনে করা হচ্ছে। বেসমেন্টে আগুন লাগবার পরেই খুব দ্রুত কার্বন ডাই অক্সাইড এবং কার্বন মোনোক্সাইড বাতানুকুল যন্ত্রের মাধয়ে হাসপাতালের বিভিন্ন তলায় ছড়িয়ে পড়ে।

আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার ক্ষেত্রে এবং উদ্ধার কার্যে গাফিলতির অভিযোগ ওঠে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। হাসপাতালের তরফে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রাথমিকভাবে কোনও উদ্যোগই নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ রোগীর পরিবারের। দমকলের পঁচিশটি ইঞ্জিন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কাজে হাত লাগায়। সকাল হতে ধীরে ধীরে বের করে আনা হয় রোগীদের। হাসপাতালের জানলার কাঁচ ভেঙে, দড়ি বেঁধে অনেককে উদ্ধার করা হয়। নিজের উদ্যোগেও অনেকে রোগী বেরিয়ে আসেন।
হাসপাতালের বেসমেন্ট পার্কিং লটের জন্য নির্ধারিত ছিল। কিন্তু বেসমেন্টটিকে গুদামে পরিণত করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। গুদামে দাহ্য পদার্থের কারণেই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। বেসমেন্টে দুটি লিনিয়ার অ্যাক্সিলেটর ইউনিট ছিল। এই ইউনিট দুটি রে দেওয়ার কাজে ব্যবহৃত হত। এর থেকে তেজষ্ক্রিয়তা ছড়ানোর আশঙ্কাও করা হয়েছিল। পরে কোনও ক্ষতিকারক গ্যাস ছড়ায়নি বলে জানান তেজষ্ক্রিয় বিশেষজ্ঞরা।
আগুনের খবর ছড়িয়ে পড়তেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন রোগীরা। অনেকেই নিজের উদ্যোগে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসেন। আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন অপেক্ষমান রোগীর বাড়ির লোকেরাও। আগুন নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকলের ২৫টি ইঞ্জিন। দমকলের ল্যাডার দিয়ে হাসপাতালের জানলার কাচ ভেঙে ভিতরে আটকে পড়া রোগিদের উদ্ধারের চেষ্টা চলে। উদ্ধার করতে গিয়ে ধো৬য়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েন কয়েকজন দমকল কর্মী। ঘণ্টাখানেক পর ঘটনাস্থলে পৌঁছন পুলিস কমিশনার রঞ্জিত পচানন্দা, পুরমন্ত্রী ববি হাকিম ও দমকলমন্ত্রী জাভেদ খান। আসেন বিরোধী দলনেতা তথা প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সূর্যকান্ত মিশ্রও।

বেলা দশটা নাগাদ এএমআরআই চত্বরে আসেন মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর উপস্থিতিতে পুরসভা, সরকার ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতি নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন নিহতদের পরিজনেরা। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিস লাঠি চালালে তুমুল উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। চলে ভাঙচুর এবং পুলিসকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি।
মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ও ঘটনাস্থলে গিয়ে জনতার রোষের মুখে পড়েন। এদিন ঘটনাস্থলে গিয়ে এএমআরআই অগ্নিকান্ডে অসুস্থ ও আহতদের চিকিত্‍সার জন্য এসএসকেএম হাসপাতালে বিশেষ ইউনিট খোলার আদেশ দেন।

.