'কেউ বিশৃঙ্খলা করলে,দল ব্যবস্থা নেবে', সব্যসাচীকে নিয়ে রিপোর্ট ফিরহাদের
আজকের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, মেয়র পারিষদদের বৈঠকের দায়িত্ব সামলাবেন ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায়।
নিজস্ব প্রতিবেদন : "কাউন্সিলররা তাঁদের মত জানিয়েছেন। দলনেত্রীকে রিপোর্ট দেব। কেউ শৃঙ্খলা ভাঙলে দল ব্যবস্থা নেবে।" তৃণমূল ভবনে বিধাননগর পুরনিগমের কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠকের পর বললেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তবে সব্যসাচী দত্ত বিধাননগরের মেয়র থাকবেন কিনা? সেই প্রশ্নের উত্তরে মুখ খোলেননি ফিরহাদ হাকিম। যদিও, আজকের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, বিধাননগর পুরনিগমের কিছু দায়িত্ব সামলাবেন ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায়। মেয়র পারিষদদের বৈঠকের দায়িত্ব সামলাবেন তিনি। যতদিন অবধি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না নেওয়া হচ্ছে, ততদিন সব্যসাচীর বদলে এই কো-অর্ডিনেশন তাপস চট্টোপাধ্যায় করবেন। আগামিকাল বিকেল ৪টেয় বিধাননগর পুরনিগমের মেয়র পারিষদের বৈঠক ডাকা হয়েছে।
বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে পুরমন্ত্রী বলেন, "শৃঙ্খলারক্ষা কমিটিতে একটি রিপোর্ট জমা পড়েছে। তাই এই মিটিং। কেউ যদি বিশৃঙ্খলা করেন, দল তাহলে ব্যবস্থা নেবে। এখন আমি কিছু বলা মানে, আমিও দলের শৃঙ্খলা ভাঙলাম। আমার নামেও শৃঙ্খলারক্ষা কমিটিতে রিপোর্ট পড়বে। তাহলে আমার আর সব্যসাচীর মধ্যে পার্থক্য কী রইল?" ফিরহাদ হাকিমের স্পষ্ট কথা, "যা সিদ্ধান্ত নেবে, দল নেবে। দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি নেবে। আমি এই বৈঠকে অবজার্ভার হিসেবে এসেছিলাম।"
প্রসঙ্গত, শুক্রবার আইএনটিটিইউসি-র বিক্ষোভ ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সল্টলেকের বিদ্যুৎ ভবন। সেই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে যোগ দেন রাজ্য বিদ্যুৎ কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি তথা বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্ত। বিধায়ক তথা মেয়রের নেতৃত্বে সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, বিক্ষোভকারীরা সব্যসাচী দত্তের নেতৃত্বে বিদ্যুত ভবনে ঢুকে ভাঙচুর চালান। ভবনের ভিতর মাটিতে বসে বিক্ষোভ দেখান। বিক্ষোভে অংশ নিয়ে সব্যসাচী দত্ত বিদ্যুৎ দফতর কর্তৃপক্ষকে এক মাসের সময়সীমা বেঁধে দেন।
সব্যসাচীর এই ভূমিকায় ক্ষুব্ধ হয় নেতৃত্ব। এরপরই রবিবার বিধাননগরের কাউন্সিলরদের নিয়ে তৃণমূল ভবনে বৈঠক ডাকার কথা ঘোষণা করেন ফিরহাদ হাকিম। কিন্তু সেই বৈঠকে ডাক পাননি মেয়র সব্যসাচী দত্ত। সূত্রে খবর, এদিন বৈঠকের শুরুতেই পুরমন্ত্রী বলেন, "বেশকিছু দলবিরোধী কাজ করেছে সব্যসাচী। দিদি পাঠিয়েছে তোমাদের মত নেওয়ার জন্য।" বিধাননগর পুরনিগমে তৃণমূলের মোট কাউন্সিলর সংখ্যা ৩৯। সব্য়সাচী দত্ত বৈঠকে ডাক পাননি। ফলে সব্যসাচীকে ছাড়া ৩৮ জন তৃণমূল কাউন্সিলরের বৈঠকে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। তার মধ্যে ২ জন কাউন্সিলর আজকের বৈঠকে যোগ দেননি। অর্থাত্ মোট ৩৬ জন কাউন্সিলর বৈঠকে যোগ দেন।
আরও পড়ুন, 'মুখ্যমন্ত্রীর দেখানো পথে হেঁটেছি,' সিঙ্গুরের তুলনা টেনে বিদ্যুতভবন আন্দোলন নিয়ে বিস্ফোরক সব্যসাচী
উল্লেখ্য, এক বছরের মধ্যেই বিধাননগর পুরনিগমের নির্বাচন। দলীয় কাউন্সিলররা স্পষ্ট জানিয়েছেন, "সব্যসাচী থাকলে আমরা নেই।" বৈঠকে সব্যসাচীর ভূমিকার সমালোচনা করেন সব কাউন্সিলরই। সূত্রে খবর, ৩৬ জন কাউন্সিলরই সব্যসাচী দত্তের বিপক্ষে সই করেছেন। এই পরিস্থিতিতে সব্যসাচী প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতৃত্ব কী সিদ্ধান্ত নেয়, সেটাই এখন দেখার। ইতিমধ্যেই শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি ও মমতা বন্দোপাধ্যায়ের কাছে গিয়ে পৌঁছেছে রিপোর্ট।