বেহালা হত্যাকাণ্ডে ধৃত চার অভিযুক্ত পুলিসি হেফাজতে

বেহালা হত্যাকাণ্ডে ধৃত চার অভিযুক্তকে ২১ শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিসি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিল আদালত। খুনের ঘটনায় গ্রেফতার মূল অভিযুক্ত মুন্না ঢালি এবং তার তিন সঙ্গীকে দুপুরে আলিপুর আদালতে তোলা হয়। ঘটনার চারদিন পর আজ খুনের কিনারা করেছে পুলিস।

Updated By: Sep 9, 2012, 07:50 PM IST

বেহালা হত্যাকাণ্ডে ধৃত চার অভিযুক্তকে ২১ শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিসি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিল আদালত। খুনের ঘটনায় গ্রেফতার মূল অভিযুক্ত মুন্না ঢালি এবং তার তিন সঙ্গীকে দুপুরে আলিপুর আদালতে তোলা হয়। ঘটনার চারদিন পর আজ খুনের কিনারা করেছে পুলিস। মুন্না ঢালি দীপক ভট্টাচার্যের কেবল অফিসেরই কর্মী। মাসের শেষে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে সে দীপক ভট্টাচার্যের হাতে দিত। মুন্নার ধারণা হয়েছিল দীপকবাবুর বাড়িতে চার থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা রাখা আছে। টাকার লোভেই মুন্না ঢালি তার তিন সঙ্গীকে নিয়ে দীপকবাবুর বাড়িতে হানা দেয়।  আমতলা এলাকা থেকে মুন্না ঢালি এবং তার সঙ্গী নব ঢালিকে গ্রেফতার করে পুলিস। তাদের জেরা করে কবরডাঙা থেকে সাত্তার এবং বিজয় নামে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়।
ঘটনার দিন দুপুর আড়াইটে নাগাদ দীপকবাবুর বাড়িতে গিয়েছিল চারজন। চেনা মুখ দেখে পরিচারিকা বাড়ির দরজা খুলে দিয়েছিলেন। মুন্না ও তার সঙ্গীরা দোতলায় গিয়ে আলমারি থেকে টাকা বের করার চেষ্টা করে। দীপক ভট্টাচার্য বাধা দিলে তাঁর সঙ্গে তাদের বচসা ও হাতাহাতি বাধে। তারপরই খুনের ঘটনা ঘটে।  
চারদিন পর বেহালা হত্যাকাণ্ডের কিনারা করল পুলিস। খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মূল অভিযুক্ত মুন্না ঢালি সহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মুন্না ঢালি দীপক ভট্টাচার্যের কেবল অফিসেরই কর্মী। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে মাসের শেষে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে সে দীপক ভট্টাচার্যের হাতে দিত। দীপকবাবুর ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকায় মুন্নার ধারণা হয়েছিল বাড়িতে চার থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা রাখা আছে। সেই টাকার লোভেই মুন্না ঢালি তার তিন সঙ্গীকে নিয়ে দীপকবাবুর বাড়িতে হানা দেয় বলে পুলিসের অনুমান। আমতলা এলাকা থেকে মুন্না ঢালিকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। মুন্নার সঙ্গী নব ঢালিকেও আমতলা এলাকা থেকেই ধরে পুলিস। সাত্তার ও বিজয় নামের দুই অভিযুক্তকে কবরডাঙা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
ঘটনার দিন দুপুর আড়াইটে নাগাদ ওই বাড়িতে ঢোকে চার দুষ্কৃতী। চেনা মুখ দেখে পরিচারিকা বাড়ির দরজা খুলে দিয়েছিলেন। বাড়ির ভিতরে ঢুকেই মুন্না ও তার সঙ্গীরা প্রথমে দোতলায় চলে যায়। দোতলায় আলমারি হাতড়ে তারা টাকা বের করার চেষ্টা করে। তখনই দীপক ভট্টাচার্যের সঙ্গে তাদের বচসা ও হাতাহাতি বাধে। তারপরই খুনের ঘটনা ঘটে। একের পর এক খুন দেখে আততায়ীদের মধ্যে একজন অসুস্থ হয়ে পড়ে। সেই দেখে বাকিরাও ঘাবড়ে যায়। এরপরই সেখান থেকে চম্পট দেয় তারা। পুলিস ধৃতদের জেরা করে খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করছে। ধৃতদের আদালতে পেশ করে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাবে পুলিস। পুলিস সূত্রে খবর, ধৃত নব, বিজয় এবং সাত্তারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজের অভিযোগের খবর রয়েছে।  
দীর্ঘদিনের কর্মী মুন্নাই যে চারজনকে নৃশংসভাবে খুনের ঘটনায় জড়িয়ে থাকবে তা কখনোই ধারণা ছিল না গোয়েন্দাদের। একটানা জেরায় শেষপর্যন্ত ভেঙে পড়ে মুন্না। বিশেষ কোনও সূত্র নয়। লালবাজারের গোয়েন্দাদের পেশাদারি দক্ষতাই বেহালার এই চারজনের রহস্যময় খুনের কিনারা করে দিয়েছে। বেহালায় চারজনের নৃশংস খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা প্রথমেই ধন্দে পড়ে যান। তার কারণ ছিল, ঘরে কোনও লুঠপাটের ঘটনা ঘটেনি।
এমনকি নিহত গৌরী দেবির হাতে সোনার বালা থাকলেও আততায়ীরা তা নিয়ে যায়নি। একটি কাঠের আলমারির একটি নির্দিষ্ট জায়গাই কিছুটা এলোমেলো ছিল। গোয়েন্দাদের ধারণা হয় পুরনো কোনও শত্রুতা বা ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকেই এই খুনের ঘটনা ঘটতে পারে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে প্রথম সূত্র মেলে, আততায়ীরা শ্বাসরোধ করে এবং পিটিয়ে চারজনকে খুন করেছে। তারপর মৃত্যু নিশ্চিত করতে প্রত্যেকের গলার নলি কাটা হয়। ধরা পড়ে যাওয়ার ভয় থেকেই আততায়ীরা খুন সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করেছিল। আর সেই সূত্রেই গোয়েন্দারা নিশ্চিত হয়ে যায় পরিচিত কেউ এই ঘটনায় অবশ্যই জড়িত। পরিচিতদের মধ্যে রয়েছেন গৌরী দেবির খুড়তুতো ভাই অশোক ভট্টাচার্য। রয়েছেন জামাই এবং নাতনি। আর ব্যবসায়ীক সম্পর্কের সঙ্গে যুক্ত লোকজন।
খুড়তুতো ভাইদের সঙ্গে সম্পর্ক না থাকলেও কোনও শত্রুতা করার মত অবস্থায় তারা ছিলেন না। নিহত গৌরীদেবি এবং দীপক ভট্টাচার্যের যাবতীর সম্পত্তির উত্তরাধিকারি জামাই এবং নাতনি। ফলে তাদের সন্দেহ করার মত যুক্তি বা তত্ত্ব কোনটাই ছিল না। শুক্রবার রাত থেকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয় কেবল ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের। অসিত সেনাপতি, অসিত পাল, মন্টু বিশ্বাসদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। খোঁজ পাওয়া যায় মুন্না ঢালির। মাত্র বছরখানেক আগে কাজে যোগ দিয়েছিল মুন্না। তার কথাবার্তায় কিছুটা অসঙ্গতি পাওয়া যায়। শনিবার সকাল থেকে ফের শুরু হয় জেরা। লালবাজারের গোয়েন্দারা পেশাদারি দক্ষতায় বিভিন্ন প্রশ্নের ফাঁকে মানসিক চাপ বাড়াতে থাকেন। অবশেষে জেরায় ভেঙে পড়ে মুন্না। স্বীকার করে নেয় টাকার লোভেই সে হানা দিয়েছিল এই বাড়িতে। প্রতিমাসে বেশ কয়েকলক্ষ টাকা আদায় করা হত কেবল ব্যবসার গ্রাহকদের কাছ থেকে। যে কেবল ব্যবসা থেকে দীপক ভট্টাচার্য এবং গৌরী দেবির মাসে প্রায় লাখ খানেক টাকা আয় হত। সেই ব্যবসায় গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের পরিমাণও ছিল অনেক। সেই টাকা কোথায় রাখা হয় তাও জানত মুন্না। সে কারণেই এই লুঠের ফন্দি এবং লুঠ করতে এসে টাকা না পেয়ে খুন।

.