নামীদামী হাসপাতালের নামে খাস কলকাতায় Home Collection Covid-test-য়ে চলছে জালিয়াতি
এই জাল রিপোর্টের ফাঁদে কেউ পড়লে সমস্যা কী হতে পারে?
নিজস্ব প্রতিবেদন: জালিয়াতির থেকে বাদ পড়ল না কোভিড টেস্টও। মানবিকতাকে ব্যাক স্টেজে রেখে এখানেও চলছে মানুষ ঠকিয়ে মোটা রোজগারের কারবার। হুবহু একই নিয়মে বাড়ি বয়ে নমুনা সংগ্রহ করে, টাকা নিয়ে যাচ্ছে তারা। এমনকি সরকারি নিয়ম মেনে, সেই ধাঁচেই পাঠানো হচ্ছে সফট কপি। কিন্তু, সরকারি নথিতে উঠছে না সেই টেস্টের রিপোর্ট। সাবধান হন। জেনে নিন কীভাবে ঘটছে এই কর্মকাণ্ড?
ছোট খাটো কোনও সংস্থা নয়, এই জালিয়াতি চলছে নামীদামী হাসপাতালে। কোভিড টেস্টের হোম কালেকশনের পিছনেই চলছে বিরাট জালিয়াত চক্র। Zee 24 Ghanta-র সঙ্গে এমনই জালিয়াতির ফাঁদে পড়ে অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন ইন্দ্রজিৎ দত্ত।
গড়িয়ার বাসিন্দা নির্মল বিহারী দত্ত। বয়স ৮৫। তাঁর ছেলের নাম ইন্দ্রজিৎ দত্ত। বাবার জ্বর না কমায়, বাইপাসের ধারের নামী হাসপাতালের (মেডিকা) কোভিড টেষ্ট হোম কালেকটরের নম্বরে যোগাযোগ করেন ইন্দ্রজিৎ বাবু। নিয়ম মেনেই বাড়ি থেকে নিয়ে যায় নমুনা। নমুনা নিতে এসেছিলেন হোম কালেকটার অভিযুক্ত শুভ দাস। রিপোর্ট নিয়ে যাওয়ার পর তার সফট কপি পাঠান ইন্দ্রজিৎ দত্তকে। নির্মল বিহারী দত্তের রিপোর্ট আসে পজিটিভ। দ্রুত বাবাকে হাইল্যান্ড পার্কের একটি নাসিংহোমে কোভিড ওয়ার্ডে ভর্তি করানোর সিদ্ধান্ত নেন ইন্দ্রজিৎ। তিনদিন কোভিড ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন থাকেন নির্মল বাবু।
আরও পড়ুন: ক্যাফেতে বসেই তৈরি হতো Covid Test-র রিপোর্ট, পুলিসের জালে শিলিগুড়ির যুবক
হঠাৎই, রিপোর্টের হার্ড কপির সন্ধানে মেডিকায় যান ইন্দ্রজিৎবাবু। কিন্তু সেখানে গিয়ে তাঁর বাবার কোনও রিপোর্টই খুঁজে পান না। এমনকি মেডিকা জানায়, তাদের কাছে নির্মল বিহারী দত্তের নামে কোনও নথি নেই। স্বাস্থ্য দফতরের পোর্টালেও নথিবদ্ধ নেই নির্মল বিহারীর পজিটিভ রিপোর্ট। দিশাহারা পরিবার আরও দু-বার অন্যত্র নির্মলবাবুর কোভিড পরীক্ষা করান। দু-ক্ষেত্রেই রিপোর্ট আসে নেগেটিভ। এরপরই পূর্ব যাদবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করে মেডিকা কর্তৃপক্ষ। সুত্রের খবর, অভিযুক্ত শুভ দাস অতীতে মেডিকার সঙ্গেই যুক্ত ছিলেন।
এই জাল রিপোর্টের ফাঁদে কেউ পড়লে সমস্যা কী হতে পারে?
প্রথমত, নেগেটিভ হয়েও মিলতে পারে পজিটিভ রিপোর্ট। হাসপাতালে গিয়ে করোনা রোগীর সঙ্গে থেকে অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন ব্যক্তি। বা যদি কোনও রোগীর সত্যিই কোভিড হয়ে থাকে আর তাঁকে নেগেটিভ রিপোর্ট দেওয়া হয়, সেক্ষেত্রে সংক্রমণের হার বাড়বে। সঠিক চিকিৎসাও মিলবে না ওই রোগীর। সরকারি নথিতে উঠবে না নাম। পাশাপাশি আধার নম্বর থেকে শুরু করে যাবতীয় প্রয়োজনীয় তথ্য চলে যাবে জালিয়াতদের হাতে।
শুধু নির্মল বাবু নয়। হোম কালেকশনের এমন ভুয়ো রিপোর্টের আরও জাল নথি পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিস।
মেডিকার তরফে চিকিৎসক কুনাল সরকার বলেন, এই ঘটনা ভয়াবহ উদ্বেগের। হাসপাতাল ও পুলিসকে আরও তৎপর হতে হবে।
(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)