স্বাগত ১৪১৯
দেখতে দেখতে কেটে গেল আরও একটা বছর। ১৪১৮-র চৌকাঠ পেরিয়ে বাঙালি পা রাখল ১৪১৯। শনিবার ঘড়িতে ভোর ৫টা বেজে ২৩ মিনিটে সূর্যোদয়ের মধ্যে দিয়েই বাংলা ক্যালেন্ডারের নতুন বছরের সূচনা। আরাধ্য দেবদেবীর এদিন দর্শনের জন্য সাতসকালেই মানুষের ঢল বিভিন্ন মঠে-মন্দিরে। গঙ্গাপাড়েও উপচে পড়া ভিড়। দিনভর দোকানে দোকানে নতুন হালখাতার সঙ্গে চলল পুরোদস্তুর বাঙালি ভূরিভোজ।
দেখতে দেখতে কেটে গেল আরও একটা বছর। ১৪১৮-র চৌকাঠ পেরিয়ে বাঙালি পা রাখল
১৪১৯। শনিবার ঘড়িতে ভোর ৫টা বেজে ২৩ মিনিটে সূর্যোদয়ের মধ্যে দিয়েই বাংলা
ক্যালেন্ডারের নতুন বছরের সূচনা। আরাধ্য দেবদেবীর এদিন দর্শনের জন্য
সাতসকালেই মানুষের ঢল বিভিন্ন মঠে-মন্দিরে। গঙ্গাপাড়েও উপচে পড়া ভিড়।
দিনভর দোকানে দোকানে নতুন হালখাতার সঙ্গে চলল পুরোদস্তুর বাঙালি ভূরিভোজ।
বৈশাখ বা নববর্ষ মূলত একটি ঐতিহ্য। বাংলার নানা দিকের সাংস্কৃতিক স্রোতধারা এই ঐতিহ্য নির্মাণ করেছে। ইতিহাস বলছে, বৈদিক যুগে বছরের প্রথম মাস হিসেবে ধার্য হত অগ্রহায়ণ। অগ্রহায়ণ মাসেই নবান্ন হতো। সম্রাট আকবরের নবরত্ন সভার আমির ফতেহ উল্লাহ সিরাজি খাজনা আদায়ের সুবিধার জন্য ফসলি সালের সূচনা করেছিলেন হিজরি চন্দ্রবর্ষকে সৌরবর্ষের মতো মিলিয়ে। তিনিই হিজরিকে বাংলা সালের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করেছিলেন ও পয়লা বৈশাখ থেকে বাংলা নববর্ষ গণনা শুরু করেছিলেন। আর বৈশাখ নামটি দেওয়া হয়েছিল নক্ষত্র 'বিশাখা'র নাম থেকে। পয়লা বৈশাখে প্রজাদের সঙ্গে মিলিত হতেন আকবর। সবার শুভ কামনা করে মিষ্টি বিতরণ করা হত।
এরপর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আমলে বর্ষবরণ উত্সব চলে আসেজমিদার বাড়ির আঙিনায়। খাজনা আদায়ের মতো একটি রসহীন বিষয়ের সঙ্গে যুক্ত হয় গান-বাজনা, মেলা ও হালখাতার অনুষ্ঠান। পয়লা বৈশাখ হালখাতার দিন। সঙ্গে থাকে পঞ্জিকাও। কিন্তু পঞ্জিকা আর হালখাতার বিক্রেতাদের মুখে হাসি ছিল না। দাম বাড়ছে সরঞ্জামের, সঙ্গে করের বোঝা। সবমিলিয়ে তাঁদের বক্তব্য, টিকে থাকা শুধু ঐতিহ্যের জন্য। কলেজস্ট্রিটের বইবাজার থেকে পাড়ার বইয়ের দোকান, সব জায়গায় ছিল গোলাপি রঙের ছোট্টবইয়ের চাহিদা। গুরুত্বপূর্ণ দিনক্ষণ থেকে শুরু করে উত্সবের খোঁজখবর, সব আছে এই বইয়ের পাতায়। নতুন বাংলা বছরের নতুন পঞ্জিকা কেনাবেচা চলল দেদার। শুভ নববর্ষের মধ্যে দিয়ে মূলত এ দেশের জনসাধারণ নিজস্ব ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে লালন করে চলেছে। পয়লা বৈশাখের উৎসবের মধ্যে দিয়ে এ দেশের নর-নারী এই ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রেখেছে। তাই বলা যায়, বাংলা নববর্ষ আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উদাহরণ। এখানেই এর মূল সুর নিহিত।