তৎপরতার সঙ্গে দিল্লি বা মুম্বইতে সাজা ঘোষণা একের পর এক গণধর্ষণের, পার্ক স্ট্রিট থেকে মধ্যমগ্রাম এখনও সুবিচারের মুখ দেখলেন না এ রাজ্যের ধর্ষিতারা
মুম্বই বা দিল্লিতে গণধর্ষণের ওরা পেরেছে। কিন্তু পারলাম না আমরা। কয়েক মাসের মধ্যেই মুম্বই বা দিল্লি গণধর্ষণের সাজা ঘোষণা হলেও আমাদের রাজ্যে এখনও ঝুলে একাধিক গণধর্ষণের মামলা।
মুম্বই বা দিল্লিতে গণধর্ষণের ওরা পেরেছে। কিন্তু পারলাম না আমরা। কয়েক মাসের মধ্যেই মুম্বই বা দিল্লি গণধর্ষণের সাজা ঘোষণা হলেও আমাদের রাজ্যে এখনও ঝুলে একাধিক গণধর্ষণের মামলা।
২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর, দিল্লিতে বাসের মধ্যে গণধর্ষণের পরে রাস্তায় ছুড়ে ফেলা হয় প্যারামেডিক্যাল ছাত্রীকে। হাসপাতালে মারা যান ওই ছাত্রী। সারা দেশ জুড়ে প্রতিবাদ।
৩১ জুলাই মুম্বইয়ে পরিত্যক্ত শক্তি মিল চত্বরে গণধর্ষিতা এক টেলিফোন অপারেটর।
গত বছর ২২ অগাস্ট শক্তি মিল চত্ত্বরেই গণধর্ষিতা চিত্র সাংবাদিক। ওই দুই ঘটনা জানাজানি হতেই প্রশ্ন ওঠে বানিজ্য নগরীতে মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে।
দিল্লি গণধর্ষণ কাণ্ডে দোষীদের সাজা ঘোষিত হয়েছে ৮ মাস ২৮ দিনে। মুম্বইয়ে টেলিফোন অপারেটরকে গণধর্ষণ কাণ্ডে দোষীদের সাজা হল ৭ মাস ২১ দিনের মাথায় আর মুম্বইয়ে চিত্র সাংবাদিক গণধর্ষণ কাণ্ডে দোষীদের সাজা হল ৬ মাস ২৫ দিনে
একাধিক গণধর্ষণ কাণ্ড নিয়ে তোলপাড় হয়েছে আমাদের রাজ্যও।
২০১২ পাঁচই ফেব্রুয়ারি। পার্ক স্ট্রিটে গণধর্ষণ। দু বছর বাদে চার্জগঠন হয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।
২০১২, ২৫ ফেব্রুয়ারি। কাটোয়ায় ট্রেন থেকে নামিয়ে মেয়ের সামনেই গণধর্ষণ। দুবছর বাদে চার্জ গঠন।
সাতই জুন ২০১৩। কামদুনিতে গণধর্ষণ করে কলেজ ছাত্রীকে খুন করা হয়। ১০ মাস বাদে চার্জ গঠন হয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে।
২০১৩, ২৭ অক্টোবর। মধ্যমগ্রামে গণধর্ষিতা কিশোরী। পাঁচ মাস বাদে চার্জগঠন করে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু।
পার্ক স্ট্রিট গণধর্ষণকাণ্ডকে সাজানো ঘটনা বলে মন্তব্য করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই কথাই শোনান কলকাতার পুলিশ কমিশনার। নির্যাতিতার চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলেন পরিবহণমন্ত্রী। কলকাতা পুলিসের তত্কালীন গোয়েন্দা প্রধান দময়ন্তা সেনের তত্পরতায় বোঝা যায়, ঘটনাটা সাজানো নয়। তিন অভিযুক্ত গ্রেফতার। সরিয়ে দেওয়া হয় দময়ন্তীকে। এখনও অধরা মূল দুই অভিযুক্ত।
কাটোয়া গণধর্ষণকাণ্ডেও রাজনৈতিক চক্রান্তের তত্ত্ব হাজির করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
এখনও পর্যন্ত আট অভিযুক্ত ধরা পড়লেও একজন ফেরার।
কামদুনিতে কলেজ ছাত্রীকে গণধর্ষণ করে খুনের পরে প্রতিবাদীদের গায়ে সিপিআইএম আর মাওবাদী ছাপ লাগিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
তারপর গ্রামকে, নির্যাতিতার পরিবারকে বাগে আনতে বিস্তর চেষ্টা শুরু করে সরকার ও শাসক দল। অনেকটা সফলও হয়। মুখ্যমন্ত্রী এক মাসের মধ্যে অভিযুক্তদের ফাঁসি ও মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার কথা জানিয়ে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু দশ মাস বাদে সবে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে।
মধ্যমগ্রামে পুলিসে অভিযোগ করায় ফের গণধর্ষিতা হতে হয় কিশোরীকে। অভিযুক্ত শাসক দলের কর্মীরাই। পরে পুড়ে মৃত্যু। মৃতদেহ ছিনিয়ে নিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ ওঠে পুলিসের বিরুদ্ধে। পরিবারের আপত্তিতে সে চেষ্টা অবশ্য সফল হয়নি। পুলিসি তদন্তে অসন্তুষ্ট হাইকোর্টের নির্দেশে ফের তদন্তে নামে সিট।