শ্যামাপ্রসাদকে ভারতরত্ন না দেওয়ায় ক্ষুব্ধ কর্মীদের সামালের চেষ্টা দিলীপের

দুজনেই মুখোপাধ্যায়, এক মুখোপাধ্যায় পেলেন। আর একজন আবারও থেকে গেলেন অন্ধকারে। 

Updated By: Jan 26, 2019, 08:01 PM IST
শ্যামাপ্রসাদকে ভারতরত্ন না দেওয়ায় ক্ষুব্ধ কর্মীদের সামালের চেষ্টা দিলীপের

অঞ্জন রায়

গেঁয়ো যোগীর ভিখ নেই। প্রণব মুখোপাধ্যায় ভারতরত্ন সম্মানপ্রাপ্তির ঘোষণার পর এমনটাই মনে করছে রাজ্য বিজেপির একাংশ। তাদের বক্তব্য , ভোটের রাজনীতির জন্য ভিন্ন শিবিরের প্রণব মুখোপাধ্যায়কে ভারতরত্ন দেওয়া হল। অথচ হিন্দু বাঙালির রক্ষাকর্তা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় এবারও বঞ্চিত থেকে গেলেন। কর্মী-সমর্থকদের একাংশের এহেন মনোভাব আঁচ করে জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটালকে একান্ত সাক্ষাত্কারে দিলীপ ঘোষ দাবি করেছেন, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে ভারতরত্ন দেওয়া হোক। 

দুজনেই মুখোপাধ্যায়, এক মুখোপাধ্যায় পেলেন। আর একজন আবারও থেকে গেলেন অন্ধকারে। কংগ্রেসি রাজনীতিক প্রণব মুখোপাধ্যায়কে ভারত সরকার যে সম্মান দিয়েছে, সেই সম্মান অনেক আগেই শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের পাওয়া উচিত বলে মনে করছে রাজ্যের গেরুয়া শিবিরের একাংশ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে লেখালিখি। তাদের যুক্তি, কাশ্মীরকে ভারতের সঙ্গে যুক্ত রাখতে শহিদ হন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। পূর্ববঙ্গের উদ্বাস্তুদের জীবন ও সম্ভ্রম রক্ষা করেন। ভোটের রাজনীতির জন্য তাঁকে অবজ্ঞা করা হল। অথচ বাংলায় যাঁর ন্যূনতম অবদান নেই, সেই প্রণব মুখোপাধ্যায়কে দেওয়া হচ্ছে ভারতরত্ন।                                   

কর্মী-সমর্থকদের এমন উষ্মা যাতে আগ্নেয়গিরির আকার না নেয়, তা নিশ্চিত করতে শ্যামাপ্রসাদকে মরণোত্তর ভারতরত্ন দেওয়ার দাবি তুলে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর কথায়, ''আমরা শ্যামপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে মরণোত্তর ভারতরত্ন দেওয়ার দাবি করছি। একদিন না একদিন তিনি পাবেন''। এবার পেলেন না কেন? দিলীপের জবাব, বিতর্ক এড়াতেই হয়তো দেওয়া হয়নি।মোদী না থাকলেও শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে মরণোত্তর ভারতরত্ন দিতেই হবে।   

আরও পড়ুন- রোজভ্যালির ২৫ কোটি টাকায় মমতার ছবি কিনেছিলেন শ্রীকান্ত মোহতা: দিলীপ ঘোষ

জনসঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বঞ্চিত থাকলেও তাঁর শিষ্য অটলবিহারী বাজপেয়ীকে ক্ষমতায় এসেই ভারতরত্ন দেয় মোদী সরকার। তাহলে শ্যামা কেন বাদ পড়লেন? রাজনৈতিক মহলের মতে, লোকসভা ভোটে উত্তর-পূর্বকে নিশানা করেছে মোদী সরকার। বিশেষ করে বাংলা ও অসমে এবার আসন সংখ্যা বাড়াতে চাইছে তারা। আর সেই ভারসাম্য রক্ষায় বাঙালি প্রণব মুখোপাধ্যায় ও অসমিয়া সংগীতশিল্পী ভূপেন হাজারিকাকে বেছে নেওয়া হয়েছে। দলমত নির্বিশেষে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে, কিন্তু শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে অনেকেরই আপত্তি। তাঁকে সাম্প্রদায়িক হিসেবেও বলে থাকেন অনেকে। সেই দিক থেকে শ্যামাপ্রসাদকে মরণোত্তর ভারতরত্ন দিলে লোকসভা ভোটের আগে অযথা বিতর্ক বাড়ত। সেই বিতর্ক এড়াতেই ইন্দিরার স্নেহধন্য প্রণব মুখোপাধ্যায়কে মোদী সরকার ভারতরত্ন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।          

আরও পড়ুন- ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ঝাঁসির রানির আবেদনপত্র অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রীকে দিয়েছিলেন মোদী

.