মুখ্যমন্ত্রীকে চাপে ফেলতে ইসলামপুরকাণ্ডে সিবিআই চাইল বিজেপি-আরএসএস
আরএসএস-বিজেপিকে কাঠগড়ায় তুলেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাল্টা সিবিআই দাবি আরএসএস-বিজেপির।
নিজস্ব প্রতিবেদন: ইসলামপুরের দাঁড়িভিট স্কুলে দুই ছাত্রের মৃত্যু নিয়ে শুরু রাজনৈতিক তরজা। মিলান থেকে এক্সক্লুসিভ সাক্ষাত্কারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বহিরাগত ঢুকিয়ে দুই ছাত্রকে খুন করেছে বিজেপি-আরএসএস। তার আগে আরএসএস যোগের কথা বলেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এবার সরকারের উপরে চাপ বাড়াতে সিবিআই তদন্ত দাবি করল রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ ও ভারতীয় জনতা পার্টি। একইসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে নিঃশর্ত ক্ষমাপ্রার্থনার দাবি করেছে সঙ্ঘ।
প্রেস বিবৃতিতে আরএসএস জানিয়েছে, ''গোটা ঘটনাটি অত্যন্ত নৃশংস, অমানবিক ও লজ্জাজনক। ৯২ বছরের ইতিহাস অহিংসা, চরিত্র নির্মাণ, ত্যাগ ও দেশের সেবায় সমর্পিত আরএসএস। জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে দেশমাতার জন্য কাজ করেছে সঙ্ঘ। অতিসম্প্রতি কেরলের বন্যার সময়ে সকলে দেখতে পেয়েছেন। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছ থেকে নিঃশর্ত ক্ষমাপ্রার্থনা দাবি করছি। দোষীদের খুঁজে বের করতে সিবিআই তদন্ত চাই''।
সিবিআই তদন্তের দাবি করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও। এমনকি মৃতদের পরিবারের জন্য সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণও চেয়েছেন তিনি। দিলীপবাবুর কথায়, ''আমাদের গায়ে দোষ চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। আবোল-তাবোল বলছেন। দুজন ছেলে মারা গিয়েছে। তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত। সিবিআই তদন্ত চেয়েছি আমরা। কাল-পরশু যেতে পারি। যাইনি উত্তেজনা ছড়াতে পারে। অত্যাচার করছে পুলিস''।
মিলান থেকে এদিন ঘটনার দায় বিজেপি-আরএসএসের উপরে চাপিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জি ২৪ ঘণ্টাকে এক্সক্লুসিভ সাক্ষাত্কারে তিনি বলেন, ''গোটা ব্যাপারটা পরিকল্পনামাফিক করেছে বিজেপি। মহরমের আগে দাঙ্গা লাগানোর ছক ছিল তাদের। দুই ছাত্রকে মেরে বনধ ডাকতে বসে গেল। কোথা থেকে বোম এল? ছাত্র মারা যাওয়ার জন্য বিজেপি ও আরএসএস দায়ী। কেন তারা দুই ছাত্রকে খুন করল? ছাত্রদের আমরা ভালবাসি। আমরা পরিবারের সঙ্গে আছি। এটা বিজেপির জঘন্য খেলা''।
এদিকে মৃত দুই ছাত্রের মৃতদেহ দাহ করতে অস্বীকার করল দাড়িভিট গ্রামের মানুষজন। তাদের দাবি, গুলিচালনার ঘটনার সিবিআই তদন্ত করতে হবে।নিহত প্রাক্তন ছাত্র রাজেশ সরকার ও তাপস বর্মনের কফিনবন্দি মৃতদেহ পুঁতে রাখা হয়েছে মাটিতে। রাতে পাহারারও ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা। শুক্রবার রাতে দুটি মৃতদেহের ময়না তদন্ত হয়েছে। নিহত রাজেশ সরকারের বাবার দাবি ময়নাতদন্ত হলেও তা তাঁকে জানানো হয়নি। পাশাপাশি ধরপাকড়ের নামে পুলিসি হয়রানি চলছে।
জি ২৪ ঘণ্টার প্রতিনিধি কথা বলেছিলেন তাপসের মায়ের সঙ্গে। কে গুলি চালিয়েছিল, প্রশ্ন করতেই এক নাগাড়ে তিনি বললেন, ‘পুলিস গুলি চালিয়েছিল, মুখে কালো কাপড় বাঁধা ছিল।’ তাপসের মায়ের কথায় উঠে এসেছে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। তিনি বলেন, ‘মুখে কালো কাপড় বেঁধে গুলি ছুড়েছিল পুলিস। যে লোকটা গুলি চালিয়েছিল, সে নীল রঙের পোশাক পরে ছিল। পুলিসের সঙ্গে এসেছিল, না র্যাফের সঙ্গে এসেছিল, তা বলতে পারব না। তবে র্যফের গায়ে বড় বড় লেখা ছিল। ওদের গায়ে কিছু লেখা ছিল না।
আরও পড়ুন- 'বনধের প্রশ্নই নেই', হুঙ্কার মমতার, 'বনধ হবেই', পাল্টা চ্যালেঞ্জ মুকুলের