Ration Scam | Jyotipriya Mallick: মেয়ের কাঁধে মাথা রেখে কাঁদতে কাঁদতে বমি, এজলাসেই অজ্ঞান জ্যোতিপ্রিয়!
"আমি ডায়াবেটিক রোগী। বাড়ির খাবার হলে কোনও সমস্যা নেই। তিন বেলা খাবার খেতে হয়। পা ফুলে গিয়েছে। হাঁটতে হয় আমাকে। আমাকে ১০ হাজার স্টেপ নিতে হবে।"
অর্ণবাংশু নিয়োগী: আদালতেই অসুস্থ জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। এজলাসেই সংজ্ঞা হারালেন মন্ত্রী। কাঠগড়ার সামনে দাঁড়িয়েছিলেন মন্ত্রী। সেইসময়ই সংজ্ঞা হারান তিনি। বিচারকের সামনে বসে পড়েন বনমন্ত্রী। সঙ্গে সঙ্গে বাবার কাছে ছুটে যান মেয়ে। অসুস্থ মন্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আপাতত বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে মন্ত্রীকে। আদালতের নির্দেশ, আপাতত পরিবারের পছন্দমতো বাইপাসের ধারে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে মন্ত্রীকে। সুস্থ হলে পর তদন্তকারী অফিসার চাইলে তাঁকে কমান্ড হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারবেন। মন্ত্রী অজ্ঞান হয়ে পড়তেই আদালত কক্ষের ভিতর ২-১ জন আইনজীবী 'শেম ইডি' স্লোগান দিতে শুরু করেন। ৬ নভেম্বর পর্যন্ত ইডি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
রেশন দুর্নীতিতে ধৃত প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীকে এদিন ব্যাঙ্কশাল আদালতে পেশ করে ইডি। আদালতে সওয়াল জবাবের পর বিচারক ৬ নভেম্বর পর্যন্ত ইডি হেফাজতের নির্দেশ দেন। এই নির্দেশের পরই আদালতে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। আদালত সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে। মুখ দিয়ে গ্যাঁজলা উঠেছে বলে দাবি করেছেন আইনজীবীরা। মেয়ে ছুটে এসে মাথায় জল দেন। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন বিচারক তনুময় কর্মকার। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কম্যান্ড হাসপাতালকে মেডিক্যাল বোর্ড গঠনের নির্দেশও দেন বিচারক। পরে যদিও সেই নির্দেশ বদলে পরিবারের পছন্দমতো বাইপাসের ধারে বেসরকারি হাসপাতালে মন্ত্রীকে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে আদালতের নির্দেশ, বাড়ির খাবার পাবেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। দিনে একঘণ্টা করে আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করতে পারবেন মন্ত্রী। বিচারকের নির্দেশ শোনার পরই মেয়ের কাঁধে মাথা রেখে কেঁদে ফেলেন বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। এমনকি এজলাসে ভিতরই জামায় বমিও করে ফেলেন মন্ত্রী।
উল্লেখ্য, এদিন সওয়াল জবাবের সময় মন্ত্রী বিচারককে জানান, "আমি ডায়াবেটিক রোগী। বাড়ির খাবার হলে কোনও সমস্যা নেই। তিন বেলা খাবার খেতে হয়। পা ফুলে গিয়েছে। হাঁটতে হয় আমাকে। আমাকে ১০ হাজার স্টেপ নিতে হবে।" যার পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক বলেন, "তাহলে আপনার স্মার্টওয়াচ লাগবে।" পাশাপাশি, একটি ভালো হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা করানোর জন্য আর্জি জানান জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। যে বিষয়ে বিচারক বলেন, "কমান্ড হাসপাতাল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। ওনার লাইফ রিস্ক আছে। সুতরাং কমান্ড হাসপাতালে দেখানো হবে। তাঁরা যেই ওষুধ লিখে দেবেন সেটা দিতে হবে। ভাল খাবার ব্যবস্থা রাখতে হবে। ডাক্তার আপনাকে যে ওষুধ দিয়েছে সেটা খেতে পারেন।" এখন কমান্ড হাসপাতাল ও মন্ত্রীর ডাক্তারের দেওয়া ওষুধ আলাদা হলে কী হবে? সে প্রসঙ্গেই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কমান্ড হাসপাতালকে মেডিকেল বোর্ড গঠনের নির্দেশ দেন বিচারক। তবে এখনই মন্ত্রীকে কমান্ড হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে না। পরিবারের পছন্দমতো আপাতত বাইপাসের ধারে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে মন্ত্রীকে। সুস্থ হলে পর তদন্তকারী অফিসার চাইলে তাঁকে কমান্ড হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারবেন।
প্রসঙ্গত, গতকালই মুখ্যমন্ত্রী নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক থেকে হুঁশিয়ারি দেন, "বালুর শরীর খুব খারাপ। আজ যদি ও মরে যায়, তাহলে আমি কিন্তু ইডি ও বিজেপির বিরুদ্ধে এফআইআর করব। এর আগে সুলতান আহমেদের সঙ্গে হয়েছে, প্রসূন মুখার্জির সঙ্গে হয়েছিল, সেই কারণেই প্রসূন মূখার্জির বউ মারা গিয়েছিল।" বৃহস্পতিবার সাতসকালে ভোর ৬টা ১০ নাগাদ বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বাড়িতে হানা দেয় ইডি। টানা ২১ ঘণ্টা তল্লাশি চালানোর পর আপ্ত সহায়কের থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতেই রেশন দুর্নীতিতে গ্রেফতার করা হয় প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীকে। রাত ২টো বেজে ৪০ মিনিটে গ্রেফতার করা হয় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। অ্যারেস্ট মেমোতে তেমনটাই উল্লেখ। মধ্যরাতেই ৩টে ২৫ মিনিটে তাঁকে নিয়ে আসা হয় সিজিও কমপ্লেক্স-এ। সিজিও ঢোকার সময় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন,'গভীর ষড়যন্ত্রের স্বীকার হলাম আমি।"
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)