জনস্রোতে একলা চলার বার্তা
এতদিন লড়াই ছিল বামফ্রন্টের বিরুদ্ধে। এবার লড়াই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে! ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে এভাবেই কংগ্রেসকে বিঁধলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চাপ বাড়াতে চাইলেন কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর।
এতদিন লড়াই ছিল বামফ্রন্টের বিরুদ্ধে। এবার লড়াই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে! ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে এভাবেই কংগ্রেসকে বিঁধলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চাপ বাড়াতে চাইলেন কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর। আর সেই সঙ্গেই জানিয়ে দিলেন পুজোর পরেই পঞ্চায়েত ভোট অনুষ্ঠিত হবে, আর তাতে একাই লড়বে তৃণমূল।
শনিবার ধর্মতলার সমাবেশ থেকে ৩ বছরের জন্য ঋণের ওপর সুদ মকুবের দাবিতে আজ ফের সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, দাবি না মিটলে আবারও প্রধানমন্ত্রীর দ্বারস্থ হবেন তিনি। কেন্দ্রের ওপর চাপ বাড়িয়ে আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, আর্থিক দাবি দাওয়া আদায়ে দলের সব সাংসদকে নিয়ে দিল্লি যাবেন তিনি। মোরাটেরিয়ামের প্রশ্নে দীর্ঘদিন ধরেই সরব মুখ্যমন্ত্রী। তিনি নিজে যেমন, তেমনই সদ্য-প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জীর কাছে দরবার করেছিলেন সুদ মকুবের আর্জি জানান রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রও। কিন্তু তাতে সুরাহা না হওয়ায় এদিন প্রকাশ্য সভাতেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন তৃণমূল নেত্রী।
এদিন ধর্মতলায় দলের শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, পঞ্চায়েত ভোট এগিয়ে আনতে চলেছে রাজ্য সরকার।। দলীয় কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি আজ বলেন, পুজোর পরেই পঞ্চায়েত ভোট। তাই, এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে কংগ্রেসকে ছাড়াই একা লড়ারও ইঙ্গিত দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি শিল্পায়ন নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে যাবতীয় সমালোচনা উড়িয়ে দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের শহিদ দিবসের সমাবেশে আজ তিনি দাবি করেন, গত এক বছরে রাজ্যে শিল্পায়নের পক্ষে অনূকুল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। বেড়েছে বিনিয়োগও।
তৃণমূল নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি এদিন ধর্মতলার সমাবেশে হাজির ছিলেন বিধায়ক হরকা বাহাদুর ছেত্রী-সহ গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার কয়েকজন নেতাও। ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে মোর্চা নেতাদের পাশে নিয়ে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ জানিয়ে দেন, আসন্ন জিটিএ নির্বাচনে লড়াই করবে না তৃণমূল কংগ্রেস। অন্যদিকে, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বিধায়ক হরকা বাহাদুর ছেত্রী বলেন, "যতদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন ততদিন রাজ্য সরকারের পাশে থাকব আমরা।"
এদিন শহীদ দিবসের সমাবেশে যোগ দিতে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিপুল সংখ্যায় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা জড়ো হন ধর্মতলায়। হাওড়া ও শিয়ালদহ স্টেশন-সহ শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে মিছিল করে সভাস্থলের দিকে যান তৃণমূল সমর্থকরা। তৃণমূল সমর্থকদের ভিড়ে বড়সড় যানজট সৃষ্টি হয় শহরে। যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে রাস্তার বাঁদিক দিয়ে মিছিল যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল প্রশাসনের তরফে। তা সত্ত্বেও ভিড়ের চাপে শহরের বিভিন্ন রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করে দিতে হয়। সভাস্থল থেকে ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত পুলিসের তরফে বন্ধ করা হয় যান চলাচল।
সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউতেও ট্রাফিকের গতি প্রায় স্তব্ধ হয়ে যায়। ধর্মতলায় আজ তৃণমূল সমর্থকদের ভিড়ে আটকে যায় একটি অ্যাম্বুলেন্স। ভিড়ে বেরোনোর রাস্তার না পাওয়ায় চরম অসুবিধেয় পড়েল অ্যাম্বুলেন্স চালক। পরে ধীরে ধীরে অ্যাম্বুলেন্সটিকে বের করে দেওয়া হয়। অন্যদিকে বাবুঘাটে ভিড়ে ঠাসা লঞ্চ থেকে গঙ্গায় পড়ে যান সমাবেশ ফেরত কয়েকজন তৃণমূল সমর্থক।