ভরা জোয়ারের সাফাই দিয়ে জল নামাতে সময় চাইলেন মেয়র
দুদিন আগেই ভরা বিপর্যয়ের সতর্কতা ছিল। ছিল ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাসও। তাতেও কোনও কাজ হয়নি। ফের জলবন্দি শহর। প্রশ্ন উঠছে বিপদের গন্ধ পেয়েও কেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ কলকাতা পুরসভা। রেকর্ড বৃষ্টি আর ভরা গঙ্গাকেই ভিলেন বানিয়েছেন মেয়র।
ওয়েব ডেস্ক: দুদিন আগেই ভরা বিপর্যয়ের সতর্কতা ছিল। ছিল ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাসও। তাতেও কোনও কাজ হয়নি। ফের জলবন্দি শহর। প্রশ্ন উঠছে বিপদের গন্ধ পেয়েও কেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ কলকাতা পুরসভা। রেকর্ড বৃষ্টি আর ভরা গঙ্গাকেই ভিলেন বানিয়েছেন মেয়র।
আগাম সতর্কতা ছিল। তাতেও কাজ হয়নি। নিটফল জিরো। শুক্রবার রাত থেকে ম্যারাথন বৃষ্টিতে জলমগ্ন গলি থেকে রাজপথ। এপাড়া ওপাড়ার ঘরদোর থেকে শুরু করে এমনকী নামীদামি আবাসনও জলে থইথই। বেলা গড়াতে বৃষ্টি ধরলেও জমা জলের যন্ত্রণায় নাকাল মানুষ। ভরা বিপর্যয়ের গন্ধ আগেই ছিল পুরসভার কাছে। তারপরেও কেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া গেল না? রেকর্ড বৃষ্টি আর গঙ্গার জোয়ারকেই ঢাল করেছেন মেয়র।
কিন্তু জোয়ারের কসুর কোথায়? তা ঠিকঠাক বুঝতে সবার আগে শহরের নিকাশির আউটলাইনে একবার চোখ বুলিয়ে নেওয়া জরুরি। ব্রিটিশ আমল থেকেই শহরের নিকাশির ঢাল গঙ্গার বিপরীতে। নদীতে নোংরা জলের অবাধ প্রবাহ ঠেকাতেই এমন পরিকল্পনা। শুখা মরশুমে শহরমুখী ঢাল বেয়েই নিকাশির জল পৌছয় পাম্পিং স্টেশনে। আর বর্ষার জল নদীতেই নিয়ন্ত্রিতভাবে পাঠাতে গঙ্গাপাড়ে নিকাশির চাবিকাঠি লকগেট।
শুক্রবারের রাতভর বৃষ্টির জেরে শহরের শতায়ু নিকাশি এমনিতেই ছিল টইটম্বুর। চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী, নিকাশির লকগেট খুলে দিয়ে শহরের বৃষ্টির জল গঙ্গায় পাঠানোর কথা। কিন্তু গোল বাধাল জোয়ার। ভরা জোয়ারে ওই গেটগুলি আদৌ খোলাই যায়নি। ফলে জমা জল বেরতে না পেরে পথঘাট, বাড়িঘর ভাসিয়েছে দেদার। লকগেট যখন খোলা হল, তখনও জোয়ারের রেশ কাটেনি। লকগেট খোলা পেয়ে উল্টে সেই জল ঢুকে পড়েছে শহরে। রাতারাতি কলকাতা বনে যায় জলশোভন তিলোত্তমা। কলকাতাকে লন্ডন বানাতে উদ্যোগের শেষ নেই। সৌন্দর্যায়নের হাজারো কর্মসূচি চলছে অবিরাম। কিন্তু যে কোনও ঋতুতে শহর সাফসুতরো রাখতে দীর্ঘমেয়াদি নিকাশির পরিকল্পনা আজও স্রেফ শিকেয়। বাম আমলে এই জট খোলেনি। পরিবর্তনের জমানাতেও সেই ট্রাডিশন বদলায়নি ছিঁটেফোটা।