মিছিলটা করতে বাধ্য হয়েছি, মন বলছিল ইউপিতে ছুটে যাই,মন পড়ে আছে সেই গ্রামে: মমতা

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, তিনি হাথরস-কাণ্ডে খুবই উদ্বিগ্ন হয়ে আছেন।

Updated By: Oct 3, 2020, 05:42 PM IST
মিছিলটা করতে বাধ্য হয়েছি, মন বলছিল ইউপিতে ছুটে যাই,মন পড়ে আছে সেই গ্রামে: মমতা

নিজস্ব প্রতিবেদন: অবশেষে রাজপথে মুখ্যমন্ত্রী। হাথরস পথে নামাল তাঁকে। ছ'সাত মাসের কোভিড-পরিস্থিতিতে কোনও জনসমাবেশ বা বিক্ষোভে সামিল হননি তিনি। কিন্তু হাথরসের নির্যাতিত মৃত ওই দলিতকন্যাই তাঁকে পথে নামাল।

বিড়লা প্ল্যানেটরিয়াম থেকে পদযাত্রা শুরু করে মেয়োরেডের বিক্ষোভমঞ্চে এসে দাঁড়ান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে সংক্ষিপ্ত এক বক্তৃতায় প্রথম দিকে বেশ আবেগমথিত লাগছিল তাঁকে। তিনি শুরুই করলেন এই বলে যে, 'কোভিডে আমার অনেক পরিচিত মারা গিয়েছেন। তাঁদের জন্য আমার কষ্ট  হয়। আমরা সাবধানেই থাকছি। মিটিং-মিছিল করছি না। আজ করলাম, কারণ, আজ করতে বাধ্য হলাম। কেননা আমার মন পড়ে আছে উত্তর প্রদেশের ওই গ্রামে। মনে হচ্ছিল, এক্ষুনি ইউ পি-তে ছুটে যাই।'

মমতা বলেন, তিনি হাথরস-কাণ্ডে খুবই উদ্বিগ্ন আছেন। তিনি তাঁর প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু ডেরেক ও'ব্রায়েন, মমতাবালা ঠাকুর, প্রতিমা মণ্ডল, কাকলি ঘোষদস্তিদারদের ওখানে ঢুকতেই দেওয়া হল না। ওঁরা ওই গ্রামের এক কিলোমিটারের মধ্যেই পৌঁছে গিয়েছিলেন। শুধু তাঁদের যে ঢুকতে দেওয়া হল না, তা নয়, তাঁদের সঙ্গে যথেষ্ট খারাপ ব্যবহারও করা হল। সাংবাদিকদের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করা হল। 

মমতা স্বীকার করেন, সোশ্যাল ক্রাইম হয়। কিন্তু ঘটনা ঘটনার পর প্রশাসনকে নড়েচড়ে বসতে হয়। অথচ,এখানে? এখানে রাতের অন্ধকারে নির্যাতিতার দেহ দাহ করে ফেলা হল। বাড়ির লোককে ঘেঁষতে দেওয়া হল না। আজ যদি ইউপি-তে এই হয়, তাহলে কাল সারা দেশে কী হবে!

সংখ্যালঘু, নমশুদ্র, দলিত, আদিবাসী-- সকলেই ভয়ে ভয়ে। কেউ কোনও কথাই বলতে পারছে না। সকলের ওপর অত্যাচার করা হচ্ছে। আমাকে মুসলিম তোষক হিসেবে দেগে দিয়েছে বিজেপি। কিন্তু যে যখন বিপদে পড়ে আমি তখন তার পাশে দাঁড়াই। আমি কখনও মুসলিম, কখনও আদিবাসী। তবে আজ আমি দলিত।

কৃষকের মুখের গ্রাস কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। আলু-ডাল-চাল-তেল কোনও কিছুই আর 'এসেনশিয়াল কমোডিটিস' নয়। বিজেপি দেশকে বেচে দিচ্ছে। দেশে দুর্ভিক্ষ আসছে। 

আসলে দেশে 'সুপার অটোক্রেসি' চলছে। দেশে কোনও গণতন্ত্র নেই। ওয়ান নেশন, ওয়ান গভর্মেন্ট। দেশে প্যানডেমিক চলছে ঠিকই। কিন্তু তা কোভিডের নয়। দেশে আসলে বিজেপির প্য়ানডেমিক চলছে। 

আজ তো দেশে আর কোনও মহাপুরুষ নেই। কারও কাছে যাওয়া যাচ্ছে না। এখন দেশের সব চেয়ে বড় মহাপুরুষ বিজেপি। 

একেবারে শেষে এসে মমতা তাঁর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে স্লোগান দেন। বলেন, এ বিজেপি দেশের লজ্জা। হাথরস-কাণ্ডে এই বিজেপির লজ্জা পাওয়া উচিত। এই বিজেপিকে চাই না।

সংক্ষিপ্ত এই বক্তব্যের পরে মমতা সমবেত শ্রোতাদের ধন্যবাদ দেন। এবং বাড়ি ফিরে কোভিড সুরক্ষাবিধি মানতে অনুরোধ করে বক্তব্য শেষ করেন।

আরও পড়ুন: দিল্লির দাঙ্গা নিয়ে আমরা বলতে গেলেই বলবে, ও তো মুসলমানদের তোয়াজ করে: মমতা

.