Arup Chakraborty: 'মহিলাদের রাতের প্রহরী সেলিম', ফোন নাম্বার দিয়ে পোস্ট তৃণমূল কাউন্সিলরের!
কলকাতা পুলিসকে যথাযথ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন মহম্মদ সেলিম। এমনকি ভারতীয় ন্যায় সংহিতা ও তথ্যপ্রযুক্তি আইনের আওতায় যথাযথ ধারায় এফআইআর দাখিল করারও আর্জি জানিয়েছেন সেলিম।
মৌমিতা চক্রবর্তী: তৃণমূল নেতা কাউন্সিলর অরূপ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে কলকাতা পুলিস কমিশনার, জয়েন্ট সিপি ক্রাইম ও সাইবার ক্রাইম অভিযোগ জানালেন সিপিআইএম-এর রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। কলকাতা পুরসভার ৯৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অরূপ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় অবমাননাকর পোস্ট করার অভিযোগ করেছেন সেলিম।
সেলিমের অভিযোগ, সোশ্যাল মিডিয়ায় অরূপ চক্রবর্তী তাঁর ছবি ব্যবহার করে একটি পোস্ট করেছেন, যেখানে তাঁকে 'রাতের প্রহরী' বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ওই পোস্টে বলা হয়েছে, "রাতে মহিলারা বিপদে পড়লে, ভুলেও ১০০ নম্বরে ডায়াল করবেন না। ওটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিস। সিপিআইএম পার্টি সেক্রেটারি মহম্মদ সেলিমকে ফোন করুন। উনি-ই রাতে মহিলাদের রক্ষা করার দায়িত্ব নিয়েছেন।" এমনকি পোস্টে মহম্মদ সেলিমের ব্যক্তিগত মোবাইল নাম্বারও 'পাবলিক' করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। এই পোস্টের প্রেক্ষিতে কলকাতা পুলিসকে যথাযথ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন মহম্মদ সেলিম। এমনকি ভারতীয় ন্যায় সংহিতা ও তথ্যপ্রযুক্তি আইনের আওতায় যথাযথ ধারায় এফআইআর দাখিল করারও আর্জি জানিয়েছেন সেলিম।
বলাই বাহুল্য আরজি করের চিকিত্সক-পড়ুয়ার ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় এখন সারা রাজ্য উত্তাল। ঘৃণ্য অপরাধের প্রতিবাদে সুর চড়িয়েছে সব মহল। সেই সময় তৃণমূল কাউন্সিলর অরূপ চক্রবর্তীর এই পোস্ট ও তাঁর বিরুদ্ধে কলকাতা পুলিসে সেলিমের অভিযোগ নিঃসন্দেহে অন্য মাত্রা যোগ করেছে। প্রসঙ্গত, আরজি কর-কাণ্ডের পর ১৪ অগাস্ট 'রাত দখল' করতে পথে নামেন আট থেকে আশি, একরত্তি মেয়ে থেকে তরুণী থেকে মহিলারা। তারপর থেকে বিভিন্ন জায়গাতেই বিভিন্ন সময় প্রতিবাদ মিছিল চলছে ন্যায়বিচারের দাবিতে। সেই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে তৃণমূল কাউন্সিলরের এই বিতর্কিত পোস্ট উত্তাল পরিস্থিতে নতুন করে বিতর্ক উসকে দিল বলেই মনে করছে ওয়াকিবহল মহল।
উল্লেখ্য, আরজি কর-কাণ্ডে আগেই সরকারের 'অস্বস্তি' বাড়িয়েছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়। মেয়ে ও নাতনির জন্য তিনিও 'রাত দখল' কর্মসূচিতে সামিল হবেন বলে প্রথমে জানিয়েছিলেন। পরে যদিও সেই সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটেন। তবে পথে না নামলেও, প্রতিবাদ কর্মসূচিকে নৈতিক সমর্থন জানান। তারপর আবার প্রাক্তন প্রিন্সিপাল ও কলকাতা পুলিস কমিশনারকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের দাবি জানান। প্রশ্ন তোলেন, সেমিনার রুম সংলগ্ন ঘরের দেওয়াল কেন ভাঙা হল? এমনকি ঘটনার ৩ দিন পর স্নিফার ডগ ব্যবহার করা হয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি। সেই টুইটের প্রেক্ষিতে ভুয়ো তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়কে তলবও করে লালবাজার।
শুধু সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায় নয়, আরজি কর-কাণ্ডে তৃণমূলের 'অস্বস্তি' বাড়িয়েছেন রাজ্যসভার আরেক সাংসদ জওহর সরকারও। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লিখেছেন, "প্রাক্তন প্রিন্সিপাল সন্দীপ ঘোষের আমলে আরজি কর হাসপাতালে আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্তে সরকার সিট গঠন করেছে জেনে খুশি হলাম। তবে এটা আরও আগেই হওয়া উচিত ছিল। তাঁকে অবিলম্বে চাকরি থেকেই বরখাস্ত করা হোক।" তাঁর লেখাতেই স্পষ্ট যে আরজি কর-কাণ্ডে প্রশাসনের ভূমিকায় অসন্তুষ্ট জওহর সরকার!
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)