জামাতের হাত ধরে এই রাজ্য থেকেই আইসিসে যায় তরুণরা, এমনই তথ্য দিয়ে গেলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা

Updated By: Oct 28, 2014, 10:29 AM IST
জামাতের হাত ধরে এই রাজ্য থেকেই আইসিসে যায় তরুণরা, এমনই তথ্য দিয়ে গেলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা

রাজ্যে সক্রিয় পঁয়ষট্টিটি জঙ্গি মডিউল। এরাজ্যেই লুকিয়ে রয়েছে জামাতের শীর্ষ নেতৃত্ব। এখানেই কষা হয় বাংলাদেশে নাশকতার ছক। এখান থেকেই বাংলাদেশে যায় জঙ্গি ও বিস্ফোরক। জামাতের হাত ধরে এ রাজ্য থেকেই আইসিস জঙ্গিগোষ্ঠীতে যায় তরুণ তরুণীরা। এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য রয়েছে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার রিপোর্টে।

অভিন্ন ইসলামি রাষ্ট্রগঠন। বিশ্বের ধনীতম জঙ্গিগোষ্ঠী আইসিসের এই আহ্বানে ইতিমধ্যেই সাড়া দিয়েছে ইউরোপের হাজার হাজার তরুণ-তরুণী। ভারত থেকেও কি প্রশিক্ষিত জঙ্গিরা যোগ দিয়েছে আইসিসে? জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার হাতে আসা গোয়েন্দা তথ্য উস্কে দিচ্ছে সেই আতঙ্ক। কী সেই গোয়েন্দা রিপোর্ট? বাংলাদেশে গ্রেফতার জামাতুল মুজাহিদিন সদস্যদের জেরায় জানা গেছে, গত কয়েকমাসে ভারত ও বাংলাদেশ থেকে কয়েকশো প্রশিক্ষিত জঙ্গি যোগ দিয়েছে আইসিসে। বর্ধমানে জঙ্গিযোগের ব্যপ্তি জামাতুল মুজাহিদিনকে ছাড়িয়েও অনেকদূর বিস্তৃত। অন্তর্বর্তী রিপোর্টে ইতিমধ্যেই এই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে NIA। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার কাছে বিভিন্ন সূত্র থেকে যে তথ্য পৌছেছে তাও বিশাল এক জঙ্গি নেটওয়ার্কেরই ইঙ্গিত দিচ্ছে।

উনিশে সেপ্টেম্বর ঢাকার তুরাগ এলাকা থেকে গ্রেফতার হয় ৭ জামাতুল মুজাহিদিন সদস্য। ধৃতদের মধ্যে জামাতুলের কার্যনির্বাহী প্রধান আবদুল্লাহ আল তাসনিম ওরফে নাহিদও রয়েছে। এই তাসনিমকে জেরা করেই সামনে এসেছে ভারতে জামাত মডিউলের বিস্ফোরক তথ্য। জানা গেছে, দুহাজার দশ থেকেই ভারতের মাটিকে কাজে লাগিয়ে ফের সংগঠিত হতে শুরু করে জামাতুল মুজাহিদিন।

২০১০ সালে ১০ জন সক্রিয় জামাত সদস্যকে দিয়ে রাজ্যে তৈরি হয়েছিল দু'টি জামাত মডিউল। মডিউল তৈরিতে প্রত্যক্ষ ভূমিকা নেয় জামাতের সর্বোচ্চ কমিটি সুরার সদস্য আনিসুর ও মোফাজ্জল হুসেন। সেই থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় এগারোশো জামাত কর্মী সমর্থক সীমান্ত পেরিয়ে এরাজ্যে ঢুকেছে। চার বছরে রাজ্যে জামাত মডিউলের সংখ্যা দুই থেকে বেড়ে হয়েছে পঁয়ষট্টি মডিউল চালানোর টাকা কোথা থেকে আসে? গোয়েন্দা তথ্য বলছে, পশ্চিম এশিয়া থেকে হাওয়ালা মারফত বাংলাদেশ হয়ে এরাজ্যে ঢোকে জেহাদি অর্থ
এই হাওয়ালা চক্রে যুক্ত কুয়েতের একটি এবং সৌদি আরবের দুটি এনজিও।

মডিউলগুলির মূল কাজ বাংলাদেশে নাশকতা চালাতে বিস্ফোরক ও প্রশিক্ষিত জঙ্গির সরবরাহ দেওয়া। শুধু তাই নয়, গোয়েন্দা তথ্য বলছে বাংলাদেশে জামাতের জঙ্গিগোষ্ঠীও নিয়ন্ত্রিত হয় ভারত থেকেই।  জামাতুল মুজাহিদিনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সোহেল মেহফুজ ভারতে বসেই বাংলাদেশের সংগঠন নিয়ন্ত্রণ করে এবছরের গোড়ায় বাংলাদেশ থেকে এসে সোহেলের সঙ্গে যোগ দেয় জহিদুল ইসলাম ও সালাউদ্দিন। বাংলাদেশ পুলিসের হাত থেকে জহিদুল ইসলামকে ছাড়িয়ে নিয়ে এসেছিল ফারুক। ওই চারজনেরই থাকার ব্যবস্থা করেছে বসিরহাটের এক ধর্মযাজক। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, বাংলাদেশের একাধিক লোকেশনে একযোগে হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল জামাত। নিশানায় ছিলেন কয়েকজন VVIP-ও। সেজন্য বাড়তি বিস্ফোরকের বরাতও এসেছিল খাগড়াগড়ের মতো গ্রেনেড কারখানাগুলিতে। কিন্তু বিস্ফোরক নয়, তদন্তকারীদের ভাবাচ্ছে প্রশিক্ষিত জঙ্গিদের তথ্য। তদন্ত জানা গেছে,

শিমুলিয়ার অনুমোদনহীন মাদ্রাসা থেকেই ইতিমধ্যে জঙ্গি প্রশিক্ষণ নিয়েছে প্রায় একশোজন কিশোরী। রাজ্যের অন্যান্য প্রশিক্ষণ শিবিরের হিসেব ধরলে সংখ্যাটি বেশ কয়েকশো ছাড়িয়ে যায় আবার, বাংলাদেশের গোয়েন্দা তথ্য বলছে গত কয়েক মাসে দুদেশ থেকে কয়েকশো প্রশিক্ষিত জঙ্গি আইসিসে যোগ দিয়েছে। গত সেপ্টেম্বরেই বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রকের তরফে এ নিয়ে সতর্ক করা হয়েছিল দিল্লিকে। রাজ্যেও পৌছেছিল সেই সতর্কবার্তা। সোমবার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মুখ্যমন্ত্রীকে ফের একবার এই আশঙ্কার কথাই শুনিয়ে গেলেন।  

 

.