জামিন পেলেন না ধৃতরা, বাড়ছে না অটো ভাড়া, ঘোষণা দোলার

গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে অবরোধের অভিযোগে ধৃত অটোচালকের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারা রুজু করা হল। ফলে জামিন পেলেন না গ্রেফতার হওয়া ২৮ জন অটোচালক। ধৃত অটোচালকদের জামিন না দেওয়ার প্রতিবাদে কলকাতার বেশ কয়েকটি রুটে অটো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিলেন অটোচালকরা। অন্যদিকে এখনই অটোভাড়া বাড়ছে না বলে দুপুরেই মহাকরণে জানিয়ে দিয়েছেন আইএনটিটিইউসির রাজ্য সভানেত্রী দোলা সেন। গত দুদিনে অটোচালকদের লাগাতার প্রতিবাদ, অবরোধে শহরে বিভিন্ন অঞ্চল অশান্ত হয়ে ওঠায় পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র মহাকরণে জরুরি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দোলা সেন, পুলিসকর্তা সহ সংশ্লিষ্ট আধিকারিকরা।
এদিন অটো চালকদের আন্দোলন রুখতে কার্যত সম্মুখ সমরে নামেন তৃণমূল বিধায়ক পরেশ পাল। কাঁকুড়গাছি-ফুলবাগান এলাকায় দলীয় কর্মীসমর্থকদের নিয়ে পরেশবাবু অটোচালকদের ওপর চড়াও হন। চালকদের মারধর করেন তিনি। কান ধরে চালকদের ওঠবোসও করান পরেশ পাল। আজকের হামলার পক্ষে সাফাইও দিয়েছেন এই তৃণমূল বিধায়ক। তিনি ঠিক কাজই করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন পরেশবাবু। ২৪ ঘণ্টার ক্যামেরার সামনে তিনি বলেন `যা করেছি বেশ করেছি।`
পরেশ পালের মত ফুলবাগানেও অটোচালকদের বিরুদ্ধে পথে নেমেছিলেন এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলর এবং কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ স্বপন সমাদ্দার। তাঁর সঙ্গে অটো চালকদের বেশ কিছুক্ষণ ধরে বচসাও হয়।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই এলপিজি-র দামবৃদ্ধির প্রতিবাদে অটো চালকদের অবরোধ আন্দোলনের জেরে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে কলকাতার বিভিন্ন এলাকা। ফুলবাগান, মানিকতলা, উল্টোডাঙা, রাসবিহারী, তারাতলা, বেহালা, রুবি মোড় সহ মহানগরীর বিভিন্ন জায়াগায় বিক্ষোভ, অবরোধে সামিল হয়েছেন অটো চালকরা। দিনের ব্যস্ত সময়ে অটো না পেয়ে ভোগান্তির শিকার নিত্যযাত্রীরা। সেইসঙ্গে নতুন মিটার ইস্যুতে প্রায় ৩ হাজার ট্যাক্সি পথে না নামায় মানুষের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। গতকাল নটি রুটের অটো চালকরা প্রতীকী ধর্মঘট করেছিলেন।

এর আগে, সোমবারই, একদিনের প্রতীকী ধর্মঘটে সামিল হয়েছিলেন পার্কসার্কাস, বড়বাজার, শিয়ালদহ, উল্টোডাঙা, লেকটাউন, বেলগাছিয়া, গিরীশপার্ক, গড়িয়া এবং গোলপার্কের মত মোট ৯টি রুটের অটোচালকরা। তাঁদের দাবি ছিল, এলপিজির দামে ছাড় দেওয়ার পাশাপাশি জরিমানা নীতি পুনর্বিবেচনা করতে হবে সরকারকে।
গ্যাসের দামবৃদ্ধির প্রতিবাদে কয়েকটি রুটে অটো চালকদের একদিনের ধর্মঘট। সেইসঙ্গে নতুন মিটার বিতর্কে ট্যাক্সির আকাল। আর এর জেরে দিনভর ভোগান্তির শিকার হলেন সাধারণ মানুষ। একদিকে যেমন হাওড়া স্টেশনেও ট্যাক্সি না পেয়ে সমস্যায় পড়েন দূরপাল্লার যাত্রীরা, অন্যদিকে ব্যস্ত রুটগুলিতে অটো বন্ধের পাশাপাশি ট্যাক্সির সংখ্যা কম থাকায় শহরের বিভিন্ন এলাকায় কমবেশি একই রকম ভোগান্তির শিকার হয়েছেন নিত্যযাত্রীরা। দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে চলতি সপ্তাহে ৩ থেকে ৪ দিনের ধর্মঘটে যেতে চলেছে ট্যাক্সি চালকদের ইউনিয়ন। মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে ধর্মঘটের দিন ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছে বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন।