নোনাডাঙায় বস্তি উচ্ছেদ, বেপাত্তা তৃণমূল নেতারা
নোনাডাঙা বস্তি ভেঙে ফেলল কেএমডিএ। তার জেরে আশ্রয়হীন হয়ে পড়ল বহু পরিবার। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে নোনাডাঙায় উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে কেএমডিএ। বুলডোজার দিয়ে প্রায় ২০০টি ঝুপড়ি ভেঙে ফেলা হয়। বস্তির বাসিন্দাদের অভিযোগ, তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করার জন্য কেএমডিএর কর্মীরা তাঁদের ঝুপড়িতে আগুন লাগিয়ে দেন।
নোনাডাঙা বস্তি ভেঙে ফেলল কেএমডিএ। তার জেরে আশ্রয়হীন হয়ে পড়ল বহু পরিবার। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে নোনাডাঙায় উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে কেএমডিএ। বুলডোজার দিয়ে প্রায় ২০০টি ঝুপড়ি ভেঙে ফেলা হয়। বস্তির বাসিন্দাদের অভিযোগ, তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করার জন্য কেএমডিএর কর্মীরা তাঁদের ঝুপড়িতে আগুন লাগিয়ে দেন। মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে এখন চরম সমস্যায় বস্তির মানুষ। যে প্রকল্প রূপায়নে নোনাডাঙায় এই উচ্ছেদ, সেই প্রকল্প শহরাঞ্চলের বিপিএল তালিকাভুক্ত মানুষের জন্যই। ফলে প্রশ্ন উঠছে, গরীব মানুষের মাথা থেকে ছাদ কেড়ে নিয়ে গরীব মানুষের উন্নয়ন কতটা বাস্তবসম্মত বা মানবিক।
কলকাতাকে সাজাতে কেএমডিএ যে প্রকল্পগুলি হাতে নিয়েছে তারমধ্যে অন্যতম বেসিক সার্ভিস ফর আরবান পুওর বা বিইউএসপি। এই প্রকল্প পরিচালিত হয় জহরলাল নেহেরু ন্যাশনাল আরবান রিনিউয়াল মিশনের টাকায়। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় মোট ৭টি শহরে এই প্রকল্পে শহরের বিপিএল তালিকাভুক্ত মানুষের জন্য আবাসন তৈরি হচ্ছে। কলকাতার ১১টি এলাকাকে বিইউএসপি গৃহনির্মানের জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রকল্পের মোট ধার্য ব্যায় ৩০০ কোটি টাকা। প্রকল্প শেষ হবার কথা ২০১৫-এ। সেগুলি হল ওয়ার্ড নম্বর ৫৯, আনন্দনগর। ওয়ার্ড নম্বর ৫৮, জলপাড়া। ওয়ার্ড নম্বর ১৩৮, গার্ডেনরিচ। ওয়ার্ড নম্বর ৯৪, ঝোড়োবস্তি। কুমারটুলি। নোনাডাঙা ফেজ ওয়ান এবং ফেড টু। পাগলাডাঙা ফেজ ওয়ান এবং টু। তপসিয়া-ব্যানার্জিপাড়া। রাজারহাট-কাছারিপাড়া-হাটগাছিয়া এবং উল্টোডাঙার ৩২ নম্বর ওয়ার্ড বস্তি। মাত্র ৩ বছরে শেষ করতে হবে কাজ। না হলে ফেরত যাবে নেহেরু মিশন প্রকল্পের টাকা। কিন্তু আনন্দনগর, জলপাড়া, গার্ডেনরিচ, তপসিয়ায় জমি সমীক্ষার কাজই শুরু হয়নি। সরকারের এখন তাই তড়িঘড়ি প্রকল্প শেষের মাথাব্যাথা।
রাজ্যের পুরমন্ত্রী তথা কেএমডিএ চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, গরীব মানুষের জন্যই যেহেতু এই গৃহনির্মাণ, তাই উচ্ছেদের পর পুনর্বাসনের জন্য আলাদা করে কোনও টাকার সংস্থান নেই। তাই কোনওরকম পুনর্বাসন ছাড়াই শুক্রবার উচ্ছেদ অভিযান চালালো কেএমডিএ। বাইপাসের ধারে কার্যত গ্রামে বাস করা নোনাডাঙার ঝুপড়িবাসীদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে আগাম ঘোষণা বা পূর্বাভাস ছাড়াই। শুক্রবার মোট ২৩২টি ঝুপড়ির ১০৫০ বাসিন্দাকে উচ্ছেদ করতে এদিন সময় লেগেছে মাত্র আড়াই ঘণ্টা। প্রশ্ন উঠেছে, পুরমন্ত্রী হবার আগে কি তাহলে ফিরহাদ হাকিম এই প্রকল্পের খুঁটিনাটি কিছুই জানতেন না? উচ্ছেদ বা পুনর্বাসন নিয়ে তার মিথ্যা আশ্বাস সেই কথাই প্রমাণ করছে। মিথ্যা ধরা পড়ে যাওয়ায় সীমাহীন ক্ষোভ সব হারানো মানুষগুলোর। তাঁদের অভিযোগ, ভোটের আগে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা জাভেদ খান এবং ববি হাকিম উচ্ছেদ না করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু ভোট মিটতেই সরকার সেই প্রতিশ্রুতি ভুলেছে বলে অভিযোগ করেন বাসিন্দারা।