মোদীর সভায় বিপর্যয়ের পরও শামিয়ানার আচ্ছাদনই চাইছেন রাহুল সিনহা

নরেন্দ্র মোদীর সভায় তাবুর একাংশ ভেঙে পড়ার পর অস্বস্তিতে বিজেপি নেতৃত্ব। 

Updated By: Jul 18, 2018, 10:41 PM IST
মোদীর সভায় বিপর্যয়ের পরও শামিয়ানার আচ্ছাদনই চাইছেন রাহুল সিনহা

অঞ্জন রায়

খোলা মাঠে মঞ্চ বেঁধে রাজনৈতিক সভা করাই দীর্ঘদিন ধরে বাংলার রীতি। ব্রিগেড থেকে ছোট সমাবেশেও খোলা মাঠেই হয় সভা। সেই রীতিতে বদল এনেছিল বিজেপি। পুরুলিয়ায় শামিয়ানা ঠাঙিয়ে অমিত শাহের সভা করেছিল গেরুয়া শিবির। মেদিনীপুরে প্রধানমন্ত্রীর সভাতেও তেমনই শামিয়ানার একাংশ ভেঙে পড়ে ঘটে বিপর্যয়। তবে আগামিদিনে এভাবেই সভা হবে বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বিজেপির জাতীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা। রাহুলবাবু একথা বললেও কোটি টাকার শামিয়ানা ঠাঙিয়ে সভা কতটা যুক্তিযুক্ত, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই উঠেছে প্রশ্ন। বাংলার মতো রাজ্যে এই ধরনের শামিয়ানা আদৌ কতটা নিরাপদ, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে বিজেপি নেতৃত্বের একাংশেরই। এর পাশাপাশি গত কয়েকটি সভা আয়োজনে বিজেপি নেতৃত্বের ব্যর্থতার প্রসঙ্গও উঠে আসছে।  

নরেন্দ্র মোদীর সভায় তাবুর একাংশ ভেঙে পড়ার পর অস্বস্তিতে বিজেপি নেতৃত্ব। দিল্লি থেকে ইতিমধ্যেই চেয়ে পাঠানো হয়েছে রিপোর্ট। জানতে চাওয়া হয়েছে, সভার দায়িত্ব থাকা ব্যক্তিদের পূর্ব অভিজ্ঞতা কী ছিল? বাংলায় বর্ষার কথা কেন মাথায় রাখা হয়নি? পাশাপাশি 'ভিড় ম্যানেজমেন্টে'ও কেন ব্যর্থ রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব? খোদ প্রধানমন্ত্রীকেও সভায় সতর্ক করতে হয়েছে জনতাকে। এর পাশাপাশি শামিয়ানা তৈরিতেও ধরা পড়েছে গাফিলতি। তবে এত গলদ সত্ত্বেও শামিয়ানার আচ্ছাদন থেকে কর্মীদের বঞ্চিত করতে নারাজ বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা। তাঁর কথায়, ''শুধু নেতৃত্বের মাথায় নয়, রোদ-বৃষ্টি থেকে কর্মীদের মাথায় আচ্ছাদনের বন্দোবস্ত করবে বিজেপি। এই সভা আমাদের সতর্ক করল। আগামিদিনে উন্নত কাঠামোর ভাবনাচিন্তা করছি। অন্যান্য রাজ্যেও এভাবেই বিজেপির সভা হয়, এখানেও হবে।''  একইসঙ্গে বিপর্যয়ের দায় ঠেলেছেন শাসক দলের ঘাড়ে। তাঁর কথায়, ''প্রশাসনের উদ্যোগ চোখে পড়েনি। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হলেই সবটা স্পষ্ট হবে। উল্লেখ্য, মেদিনীপুরে মোদীর জনসভা নিখাদ ছিল দলীয়। ফলে শাসক দলকে কাঠগড়ায় তুলে বিজেপি দায়ভার এড়িয়ে যেতে পারে না বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের।           

বস্তুত, অন্যান্য রাজ্যে এভাবেই শামিয়ানা ঠাঙিয়ে সভা করে বিজেপি। সূত্রের খবর, এই ধরনের বন্দোবস্তে কোটি টাকা খরচ। অমিত শাহের সভায় খরচ হয়েছিল ৮০ লক্ষ টাকা। প্রধানমন্ত্রীর সভায় ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা। বিজেপির অন্দরেই প্রশ্ন উঠছে, এত টাকা খরচ করে আদৌ কি কোনও লাভ আছে? এই টাকাটা সংগঠনের অন্য কাজে লাগানো যেত না!   

প্রধানমন্ত্রীর সভায় রাজনৈতিক হিসেবনিকেশ ছাড়িয়ে আলোচ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে 'সভা আয়োজনের ব্যর্থতা'। নমোর বক্তব্যই চলে গিয়েছে পিছনের সারিতে। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব এনিয়ে যথেষ্ট অখুশি। পরিস্থিতি এমন জায়গায় চলে গিয়েছে যে প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে ফোনে আহতদের খোঁজখবর নিতে হচ্ছে। উল্লেখ্য, এটাই প্রথম নয়, এর আগে কলকাতায় বঙ্কিমের স্মরণ অনুষ্ঠানে চরম অব্যবস্থা চোখে পড়েছে। শহিদের স্মরণে পুরুলিয়ার সভা হলেও সেখানে ছিল না শহিদবেদী বা প্রতিকৃতি। সবমিলিয়ে বেশ চাপে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। রাজনৈতিক মহলের মতে, এভাবে বারবার সভা ব্যবস্থাপনার ব্যর্থতা বড়মঞ্চে বিজেপি নেতৃত্বের দুর্বলতাকেই কি প্রকট করছে? কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছেও যে ইতিবাচক বার্তা যাচ্ছে না, তাও ভালই বুঝতে পারছেন দিলীপ ঘোষরা। 

 আরও পড়ুন- মন্দির সবার জন্য, সবরীমালায় মহিলাদের প্রবেশে পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের

.