ঘর ভাঙার নতুন কাহিনি লিখল রাজ্যসভা ভোট
ক্লাব ফুটবলে দলবদল করা যায় বছরে একবার নির্দিষ্ট সময়ে। কিন্তু, রাজনৈতিক দলের বিধায়করা দল বদলাতে পারেন যখন তখন। রাজ্যসভার ভোটে বামশিবিরের তিনজন আর কংগ্রেসের দুই বিধায়ক দল বদলে ভোট দিলেন তৃণমূল প্রার্থীকে।
ক্লাব ফুটবলে দলবদল করা যায় বছরে একবার নির্দিষ্ট সময়ে। কিন্তু, রাজনৈতিক দলের বিধায়করা দল বদলাতে পারেন যখন তখন। রাজ্যসভার ভোটে বামশিবিরের তিনজন আর কংগ্রেসের দুই বিধায়ক দল বদলে ভোট দিলেন তৃণমূল প্রার্থীকে।
অন্যদিকে, তৃণমূল শিবির থেকে এক বিধায়ক ভোট দিলেন কংগ্রেস সমর্থিত নির্দল প্রার্থীকে।বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত যে দলের যা শক্তি ছিল, শুক্রবার ভোর হতেই তা অনেকটা বদলে গেল। ঘরভাঙার খেলায় রীতিমতো নজির হয়ে থাকল পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যসভার নির্বাচন। নিজেদের শক্তির বাইরে গিয়ে চারটি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল তৃণমূল। বামেরা একটি এবং কংগ্রেস সমর্থিত নির্দল প্রাজ্ঞথী লড়েছিলেন একটি আসনে। সরলরেখায় ভোট হলে কোনও অবস্থাতেই তৃণমূলের চতুর্থ প্রার্থীর জয় সম্ভব ছিল না। একমাত্র পথ ছিল যদি অন্য দলের বিধায়কদের ভোট জোগাড় করতে পারে তৃণমূল শিবির। প্রায় দশদিন আগে থেকেই শুরু হয়ে যায় বিধায়ক ভাঙানোর সেই উদ্যোগ। কংগ্রেসের এগারোজন বিধায়কের সঙ্গে গোপনে শলা পরামর্শ শুরু করে দেন তৃণমূলের ম্যানেজাররা। টোপ দেওয়া হয় বাম শিবিরেও।
শেষপর্যন্ত তৃণমূলের প্রস্তাবে রাজি হয়ে আরএসপি-র দুই বিধায়ক দশরথ তিরকে এবং অনন্ত দেব অধিকারী এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের সুনীল মণঅডল তৃমমূল প্রার্থীকে ভোট দেন। কংগ্রেসের ইমানি বিশ্বাস এবং সুশীল রায় দল বদলে ভোট দেন ঘাসফুলে। ফলে চতুর্থ প্রার্থীকে বের করতে আর বেগ পেতে হয়নি তৃণমূল কংগ্রেসকে। যদিও, তাদের ঘরের বিধায়ক শিখা মিত্রই ভোট দিয়েছেন কংগ্রেস সমর্থিত নির্দল প্রার্থীকে। এর আগে রাজ্যসভার ভোটে প্রণব মুখোপাধ্যায়কে গোপন ব্যালটে ভোট দেন দুই বাম বিধায়ক। কিন্তু, তাঁরা কারা? তা এখনও গোপনই আছে। এখানে অবশ্য সবটাই প্রকাশ্যে। কেন গেলেন বিধায়করা?
অর্থের লোভে, ভয়ে, ক্ষমতার লোভে। কারণ যাই হোক না কেন, এই দলবদল কিন্তু এককথায় নজিরবিহীন। একসময় রাজ্যসভার ভোটে এত বিধায়ক কেনাবেচা হতো, যারজন্য গোপন ব্যালটের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে প্রকাশ্য ব্যালটেই যে ঘটনা ঘটে গেল, তারপর কি আবরও নিয়ম পরিবর্তনের কথা ভাববে নির্বাচন কমিশন?