সারদার গ্লোবাল মোটর্স কারখানা ক্রোক করল ব্যাঙ্ক
সারদা গোষ্ঠীর হাতে থাকা গ্লোবাল মোটর্স কারখানা ক্রোক করল ঋণ দেওয়া সাতটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক। পোলবার কারখানায় নোটিস ঝোলাতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় ব্যাঙ্কের আধিকারিকদের।
সারদা গোষ্ঠীর হাতে থাকা গ্লোবাল মোটর্স কারখানা ক্রোক করল ঋণ দেওয়া সাতটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক। পোলবার কারখানায় নোটিস ঝোলাতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় ব্যাঙ্কের আধিকারিকদের।
পোলবার গ্লোবাল মোটর্স। রাজ্যের প্রথম মোটরবাইক এসেম্বলিংয়ের কারখানা। আবার এই কারখানাই সারদা গোষ্ঠীর কর্ণধার সুদীপ্ত সেনের প্রতারণার আরও একটি নিদর্শন। ২০১০, অক্টোবরে জেনাইটিস গোষ্ঠীর কাছ থেকে মাত্র দেড়শো কোটি টাকায় কারখানাটি কিনে নেয় সারদা গোষ্ঠী। তখন থেকে গ্লোবাল মোটর্সের কর্ণধার সৌমিত্র সেন। তবে সৌমিত্রবাবুকে তো দূরের কথা, তাঁর কোনও ছবিও কোনও দিন দেখেননি কারখানার কর্মীরা। অনেকেরই মত, সৌমিত্র সেন আসলে সুদীপ্ত সেনই। সোমবার ব্যাঙ্কের আধিকারিকরা কারখানা ক্রোক করার নোটিস টাঙাতে আসার পরে জানা গেল আরও বড় জালিয়াতির কথা।
২০১০ নভেম্বর থেকে কারখানার জমি ও অন্যান্য স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি আলাদা আলাদা সাতটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে বন্ধক রেখে ২১৯ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা ঋণ নেয় সুদীপ্ত সেনের সংস্থা। একই সম্পত্তি দেখিয়ে আরও অন্তত ৪০ জন প্রোমেটারের কাছ থেকে আরও ১৫০ কোটি টাকা ঋণ নেন সুদীপ্ত সেন।
সুদে আসলে এখন শুধু ব্যাঙ্কগুলিরই প্রাপ্য ২৫৪ কোটি টাকা। সোমবার সাতটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের আধিকারিকরা কারখানা ক্রোকের নোটিশ লাগাতে এসে শ্রমিকদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন। শ্রমিকরা নোটিসও ছিঁড়ে দেন। জানা যাচ্ছে, ২০১০ অক্টোবরে মালিকানা বদলের সঙ্গে সঙ্গে অন্ধকারে চলে যায় কারখানা। রাতারাতি বন্ধ হয়ে যায় উত্পাদন।
ক্রমশ উঠে যায় ক্যান্টিন-সহ শ্রমিকদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা। পি এফের টাকা জমা পড়া বন্ধ হল। বন্ধ হল বেতনও। গত ১৬ এপ্রিলের পর থেকে কারখানায় আর দেখা যায়নি আধিকারিক পর্যায়ের দুই কর্মী ইন্দ্রজিত্ চন্দ ও আর্য ভট্টাচার্যকেও। কারখানা খুলবে। এই আশা নিয়ে কারখানার সামনে দিন-রাত এক করে বসে ছিলেন দেড়শো স্থায়ী ও ৪০ জন অস্থায়ী কর্মী। কিন্তু ব্যাঙ্ক ক্রোক করার নোটিস ঝোলানোর পরে কারখানা খোলার স্বপ্নটাই মুছে গেল।