যাদবপুরের আচার্যের পদ থেকে 'অযোগ্য' ধনখড়কে বহিষ্কার করল SFI-র ছাত্র সংসদ
ধনখড়কে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যের পদ থেকে বরখাস্ত করে প্রতীকী চিঠি পাঠাল যাদবপুরের ছাত্র সংসদ।
নিজস্ব প্রতিবেদন: বিক্ষোভের জেরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ঢুকতে পারেননি রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তার আগের দিন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্ট বৈঠকে যোগ দিতে গিয়েও ছাত্রছাত্রীদের বাধার মুখে পড়েছিলেন। রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন ধনখড়। এবার তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যের পদ থেকে বরখাস্ত করে প্রতীকী চিঠি পাঠাল যাদবপুরের ছাত্র সংসদ। ওই ছাত্র সংসদটি এখন এসএফআইয়ের দখলে। চিঠির সঙ্গে জুড়়ে দেওয়া হয়েছে তাঁর রিপোর্ট কার্ডও।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এবিভিপি-র অনুষ্ঠানে গিয়ে ছাত্রবিক্ষোভের জেরে আটকে পড়েছিলেন বিজেপির সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে গিয়ে নিজের গাড়িতে বাবুলকে নিয়ে বেরিয়ে যান আচার্য। ওই টানাপোড়েনের সময় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের ঘরে ভাঙচুর চালায় গেরুয়া শিবির। ওই ঘটনার কথা উল্লেখ করে চিঠিতে লেখা হয়েছে,'১৯ সেপ্টেম্বর আপনি কয়েকজন দুষ্কৃতীকে সঙ্গে করে নিয়ে এসেছিলেন। তারা বোম ছুড়েছে, ভাঙচুর চালিয়েছে ও মহিলাদের শ্লীলতাহানি করেছে। এরপর ২২ ডিসেম্বর বিনা আমন্ত্রণেই আপনি চলে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ে। আপনার উদ্দেশ্য ও আচরণ করে তদন্ত করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আপনি প্রচার পেতে অত্যন্ত জঘন্য চেষ্টা চালিয়েছেন। নষ্ট করেছেন ছাত্রছাত্রীদের মূল্যবান সময়।'
চিঠি আরও বলা হয়েছে,'২৩ ডিসেম্বর এনআরসি, সিএএ, এনপিআর, এস/এসটি কমিশন ও মুসলিমদ এবং অন্যান্য ছাত্রছাত্রীদের উপরে হিংসা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন করেছেন পড়ুয়ারা। কিন্তু আপনি সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি। আপনি যা ব্যাখ্যা দিয়েছেন তা একেবারেই দুর্বল ও বাস্তববর্জিত।' রাজ্যপালের রিপোর্টকার্ডে লেখা হয়েছে,'আপনার সাধারণজ্ঞান অসন্তোষজনক। তর্কের ক্ষমতাও খারাপ। ইতিহাসজ্ঞান শূন্য। মুসলিম, ছাত্র ও আন্দোলনকারীদের উপরে হিংসা যেভাবে এড়িয়ে গিয়েছেন, এটাই আপনার শক্তি। সবমিলিয়ে আপনি মেরুদণ্ডহীন।'
মঙ্গলবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। পাঁচ নম্বর গেটে তাঁর গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল কংগ্রেসের শিক্ষক কর্মী সংগঠন শিক্ষাবন্ধু সমিতি। চলে গো ব্যাক স্লোগানও। দেখানো হয় কালো পতাকা। শুধু তাই নয়, রাজ্যপাল সমাবর্তনে যোগ দিলে বয়কটের ঘোষণা করেছিলেন পড়ুয়ারা। মরিয়া রাজ্যপাল ফোন করে উপাচার্য সুরঞ্জন দাসকে। কিন্তু উপাচার্য জানিয়ে দেন, তিনি অসহায়। তখন ক্ষুব্ধ রাজ্যপাল জানান, তাঁকে ছাড়া সমাবর্তন হবে না। ফিরে যেতে বাধ্য হন ধনখড়। এরপর সমাবর্তন অনুষ্ঠানে নাগরিকত্ব সংশোদনী আইনের প্রতিলিপি ছিঁড়ে প্রতিবাদ করেন আন্তর্জাতিক সম্পর্কে স্নাতকোত্তরের প্রথম বিভাগে প্রথম দেবস্মিতা চৌধুরী। কৃতী ছাত্রছাত্রীরা এসেছিলেন 'নো এনআরসি, নো সিএএ' লেখা ও 'গো ব্যাক ধনখড়' ব্যাজ পরে। অনেকেই জানিয়ে দেন, রাজ্যপালের হাত থেকে ডিগ্রি নিতেন না তাঁরা।
আরও পড়ুন- দেড় লাখের রোদ চশমা পরে সূর্যগ্রহণ দেখলেন 'ব্র্যান্ডেড ফকির' নরেন্দ্র মোদী