পাহাড়ে ফেল; নেত্রীর রোষে অরূপ, ধমক খেলেন পার্থও
নিয়ম করে তৃণমূল ভবনে বসার জন্য তৈরি হল রোস্টার। সোমবার রাজীব, বুধবার শুভেন্দু, শুক্রবার অভিষেক।
নিজস্ব প্রতিবেদন : দলের অন্দরে ফের সাংগঠনিক রদবদল ঘটালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার কালীঘাটে তৃণমূলের কোর কমিটির বৈঠক হয়। সেখানেই মালদা পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব শুভেন্দুর হাত থেকে সরিয়ে গুলাম রব্বানি ও সাধন পান্ডেকে দেওয়া হয়। পাশাপাশি, পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অনুব্রত মণ্ডলের হাত থেকে সরিয়ে নদিয়ার দায়িত্ব দেওয়া হল রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তবে ওভার-অল কো-অর্ডিনেশনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে শুভেন্দু অধিকারীকে।
প্রসঙ্গত, মন্ত্রিসভার রদবদলের পর জলসম্পদ, পরিবহণ, সেচদফতরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে শুভেন্দুকে। তার আগে লোকসভা ভোটের ফল বেরনোর পর প্রথমদিন কালীঘাটের বৈঠকে জঙ্গলমহলের দায়িত্ব দেওয়া হয় শুভেন্দু অধিকারীকে। লোকসভা ভোটে জঙ্গলমহলে ভরাডুবি হয়েছে তৃণমূলের। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রামে জয় পেয়েছে বিজেপি। আর তারপরই জঙ্গলমহলের জমি পুনরুদ্ধারের জন্য শুভেন্দু অধিকারীকেই বেছে নেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
লোকসভা নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে দলের। এনিয়ে নেত্রীর কাছ থেকে ধমক খেলেন অরূপ বিশ্বাস। পাহাড়ে দল বিরোধী হাওয়া সম্পর্কে কেন দলের কাছে খবর ছিল না তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। অন্যদিকে, এদিনের বৈঠকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উপর উষ্মাপ্রকাশ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ভালো করে কলকাতা দেখতে বলেন তৃণমূল নেত্রী। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় তৃণমূল নেতা-নেত্রীদের রোজ তৃণমূল ভবনে গিয়ে বসার নির্দেশ দেন। নিয়মমাফিক রোজ তৃণমূল ভবনে বসার জন্য তৈরি হয় রোস্টারও। সেই 'রোস্টার' অনুযায়ী সোমবার তৃণমূল ভবনে বসবেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার বসবেন শুভেন্দু অধিকারী আর শুক্রবার বসবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়।
কোর কমিটির বৈঠক থেকে হারানো মাটি পুনরুদ্ধার করতে বিধায়কদের এলাকায় থাকার নির্দেশ দেন দলনেত্রী। মমতা জানান, জেলায় জেলায় কর্মীসভা করবেন তিনি। ৭ জুন থেকে হুগলি দিয়ে শুরু হবে কর্মসূচি। বলেন, "ঘাবড়াবার , ভয় পাওয়ার কিছু নেই। দখলদারি আটকাতে সতর্ক থাকুন। আমরা ছিলাম, আছি, থাকব। ঝগড়াঝাঁটি করলে চলবে না। সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে।" আজকের বৈঠকের পর বঙ্গজননী বাহিনীর দায়িত্ব পেয়েছেন কাকলি ঘোষদস্তিদার। আর 'জয় হিন্দ' বাহিনীর চেয়ারম্যান করা হয়েছে ব্রাত্য বসুকে। ভাইস চেয়ারম্যান হলেন ইন্দ্রনীল সেন, সভাপতি কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন, 'কেন হারলে?' ভরা বৈঠকে কেষ্টকে কড়া বকুনি মমতার, দিলেন 'শাস্তি'ও
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার নৈহাটির ধরনামঞ্চ থেকেই বিজেপির 'জয় শ্রী রাম' ধ্বনির পাল্টা 'জয় হিন্দ' বাহিনী তৈরির কথা ঘোষণা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে, শুভেন্দুর পাশাপাশি দলের মুখপাত্র করা হয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, ব্রাত্য বসু, মহুয়া মৈত্র ও চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকেও। একইসঙ্গে হাজি নুরুলকে সরিয়ে সংখ্যালঘু সেলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সিদ্দিকুল্লাকে। তফশিলি জাতি-উপজাতি সেলের চেয়ারম্যান করা হয়েছে উমা সোরেনকে।