গ্রেফতার মদন, এর পর পালা কার?

সারদা কাণ্ডে গ্রেফতার হলেন পশ্চিমবঙ্গের পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্র। আর্থিক প্রতারণার অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করা হল। সিবিআই কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আজকে টানা সাড়ে ৫ ঘণ্টার জিজ্ঞাসাবাদে তৃণমূলের অন্যতম স্তম্ভ মদন মিত্রের জবাবে সন্তুষ্ট নন তাঁরা। কুণাল ঘোষ, বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা আসিফ খান গ্রেফতার হওয়ার পরে দাবি করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও নাকি জড়িত সারদার আর্থিক কেলেঙ্কারির সঙ্গে।

Updated By: Dec 12, 2014, 09:13 PM IST
গ্রেফতার মদন, এর পর পালা কার?

ওয়েব ডেস্ক: সারদা কাণ্ডে গ্রেফতার হলেন পশ্চিমবঙ্গের পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্র। আর্থিক প্রতারণার অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করা হল। সিবিআই কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আজকে টানা সাড়ে ৫ ঘণ্টার জিজ্ঞাসাবাদে তৃণমূলের অন্যতম স্তম্ভ মদন মিত্রের জবাবে সন্তুষ্ট নন তাঁরা। কুণাল ঘোষ, বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা আসিফ খান গ্রেফতার হওয়ার পরে দাবি করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও নাকি জড়িত সারদার আর্থিক কেলেঙ্কারির সঙ্গে।

ফেসবুক, টুইটারে এখন একটা প্রশ্নই ঝড় তুলেছে। সিবিআই কি এবার পৌঁছে যাবে হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের সেই টালির চালের বাড়িতে?

সারদা-কাণ্ডে গরাদের ওপারে এর আগেই গিয়েছিলেন দুই তৃণমূল সাংসদ সৃঞ্জয় বসু ও কুণাল ঘোষ। হাজতে তৃণমূল নেতা রজত মজুমদারও।

মদন মিত্রকে সিবিআই তলব করার সঙ্গে সঙ্গেই প্রশ্ন উঠেছিল এবার কি তাহলে পরিবহণ মন্ত্রীর পালা?

মদনের গ্রেফতারের সঙ্গে সেই প্রশ্নের উত্তর মিললেও সোশ্যাল মিডিয়াতে এখন একটাই প্রশ্ন। এরপর তবে কে?

কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার নজরে রয়েছেন শাসকদলের আরও অনেক নেতা।

সিবিআই এবং ইডি, দুই সংস্থারই আতস কাঁচের নিচে তৃণমূল সাংসদ আহমেদ হাসান ইমরান।

সুদীপ্ত সেন ইমরানের কাছ থেকে বাজারদরের চেয়ে বেশি দামে কেন কলম পত্রিকা কিনেছিলেন এবং তিনি ফেরার হওয়ার পরও কী ভাবে পত্রিকাটি চলছিল তা খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা।

সুদীপ্ত সেন ফেরার হওয়ার পর মুকুল রায়, তাঁর ছেলে শুভ্রাংশু রায়, তৃণমূল কাউন্সিলার শান্তনু সেন সহ দলের অন্য নেতারা কলমের অফিসে মিটিং করেন বলে আসিফ খান যে অভিযোগ করেন তাও খতিয়ে দেখছে সিবিআই।

সারদার টাকা জামাতের হাতে যাওয়া নিয়ে ইমরানের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তারও তদন্ত করছে সিবিআই।

সারদার ব্যবসায় তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল বলে সিবিআই এবং ইডি-কে জানিয়েছেন সুদীপ্ত সেন। আইনজীবী নলিনী চিদাম্বরমকে লেখা চিঠিতেও শতাব্দী রায়ের সাংসদ পরিচয়ের ওপর গুরুত্ব দিয়েছিলেন তিনি।

এসএফআইও-র রিপোর্টেও বলা হয়েছে, শুধুমাত্র ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডার নন, সারদা ব্যবসার প্রসারেও নানাভাবে সাহায্য করেছেন শতাব্দী রায়। এ সবই এখন খতিয়ে দেখছে সিবিআই।

বিদেশে সুদীপ্ত সেন সম্পত্তি কিনেছিলেন বলে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন। সিঙ্গাপুরে সারদা-কর্তার যাতায়াত ছিল বলে সিবিআই এবং ইডি-র কাছে দাবি করেছেন মনোরঞ্জনা সিং। অক্টোবরের গোড়ায় গোয়েন্দারা সিঙ্গাপুর ঘুরে আসেন।

বিদেশে সারদার লগ্নির তদন্তে নেমে চারটি এনজিও এবং সম্পত্তির বিষয়ে সূত্রের খোঁজ পেয়েছেন গোয়েন্দারা।  

ওই সম্পত্তির সঙ্গেই নাম জড়িয়েছে এ রাজ্যের কয়েকজন রাজনীতিবিদের, যাঁদের মধ্যে রয়েছেন শাসকদলের লোকসভার এক তরুণ সাংসদও।

তৃণমূলের এক প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও সিবিআইয়ের নজরে।
জেরায় কুণাল ঘোষ, আসিফ খান দু-জনেই তাঁর নাম করেছেন।

গোয়েন্দা সূত্রে খবর, সারদার এক কর্মী গোপন জবানবন্দিতে দাবি করেছেন, সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে বৈঠক হয়েছিল তৃণমূলের ওই শীর্ষ নেতার।

সারদার টাকা সরানোয় তাঁর হাত ছিল বলে দাবি করেছেন কুণাল ঘোষ এবং আসিফ খান।

লোকসানে চলা সিমেন্ট কারখানা ন-কোটি টাকায় সুদীপ্ত সেনকে বিক্রি করে গোয়েন্দাদের জেরার মুখে পড়েছেন বস্ত্রমন্ত্রী শ্যামাপদ মুখোপাধ্যায়। চালু না হওয়া টিভি চ্যানেল প্রায় চোদ্দো কোটি টাকায় সারদা কর্তাকে বিক্রি করে সন্দেহের তালিকায় চিত্রশিল্পী শুভাপ্রসন্নও। জেরার মুখে পড়েছেন দুই সাংসদ অর্পিতা ঘোষ ও মিঠুন চক্রবর্তীও।তদন্ত যত এগোবে ততই সারদা-কাণ্ডে প্রভাবশালীদের যোগাযোগ আরও স্পষ্ট হবে বলে করছে ইডি এবং সিবিআই।

 

 

 

 

 

 

.